আজ ও কাল বেসরকারি স্কুলে শিক্ষক ধর্মঘট

চাকরি জাতীয়করণ এবং শিক্ষা খাতের বাজেটে খাতওয়ারি অর্থ বরাদ্দসহ শিক্ষক-কর্মচারীদের সব দাবি মেনে নেওয়ার জন্য ফের আহ্বান জানিয়েছে বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকদের বিভিন্ন সংগঠন। গতকাল সোমবার সংগঠনগুলো পৃথকভাবে এসব দাবি তুলে ধরে।
সংগঠনগুলো আজ মঙ্গলবার ও আগামীকাল বুধবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট পালন করবে।
শিক্ষা খাতের বাজেটে খাতওয়ারি অর্থ বরাদ্দের বিষয়টি আগামী ১৬ জুলাইয়ের মধ্যে স্পষ্ট করার দাবি জানিয়েছে আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষক-কর্মচারীদের জোট জাতীয় শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যফ্রন্ট। বিএনপিপন্থী শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোট বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণের দাবি মেনে নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। অভিন্ন শিক্ষানীতি বাস্তবায়নসহ অন্য সব দাবি পূরণের আহ্বান জানিয়েছে স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ নামে আরেকটি শিক্ষক সংগঠন। বাংলাদেশ শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ বলেছে, ১৭ দফা দাবিতে সংগঠনটির ডাকে আজ মঙ্গলবার ও আগামীকাল বুধবার (৩ ও ৪ জুলাই) দেশের সব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-কর্মচারীরা ধর্মঘট পালন করবেন।
গতকাল শিক্ষা খাতের বাজেট নিয়ে জাতীয় শিক্ষক-কর্মচারী ফ্রন্ট রাজধানীর গ্রিনরোডে তাদের অফিসে এক জরুরি সভা করে। সভা শেষে ফ্রন্টের প্রধান সমন্বয়কারী অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদ বলেছেন, শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবি অনুসারে অর্থ বরাদ্দের বিষয়টি স্পষ্ট করতে সরকারকে সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বাজেটে শিক্ষা খাতের বরাদ্দ দিয়ে এমপিওভুক্ত ও এমপিওর জন্য অপেক্ষমাণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের আট দফা দাবি ও শিক্ষার উন্নয়নে সাতটি সুপারিশ শিক্ষা মন্ত্রণালয় কিভাবে বাস্তবায়ন করবে তা ১৬ জুলাইয়ের মধ্যে স্পষ্ট করতে হবে। সরকারকে বলতে হবে, কোন কোন বিষয়ের জন্য বাজেটে অর্থ বরাদ্দ রয়েছে।
শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের অতিরিক্ত মহাসচিব মো. জাকির হোসেন এক বিবৃতিতে বলেন, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণের কোনো বিকল্প নেই। শিক্ষা মানুষের মৌলিক অধিকারের অন্যতম। চাকরি জাতীয়করণের মাধ্যমে মানুষের সেই অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব। বিবৃতিতে তিনি বলেন, শিক্ষকদের পেছনে ফেরার সুযোগ নেই। অবিলম্বে শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণ করা না হলে শিক্ষক সমাজের দুর্বার আন্দোলনের পরিণতির জন্য সরকারই দায়ী থাকবে। শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের পক্ষে আগেই ঘোষণা করা কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামী ১৫ জুলাই পর্যন্ত নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে শিক্ষকরা তাঁদের দাবির বিষয়ে মতবিনিময় করবেন। চাকরি জাতীয়করণ না করে শিক্ষকদের প্রাইভেট পড়ানো ও কোচিং যাতে বন্ধ করা না হয় সে ব্যাপারে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যেতে ঐক্যজোটের পক্ষ থেকে শিক্ষকদের বলা হয়েছে।
শিক্ষাব্যবস্থার জাতীয়করণ ও শিক্ষানীতি বাস্তবায়নসহ ঘোষিত দাবি পূরণের আহ্বান জানিয়েছে স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ। গতকাল সংগঠনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির এক সভায় এ দাবি জানানো হয়েছে। সভায় শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শিক্ষক সমাজকে স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। বাংলাদেশ শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের কার্যালয়ে এক সভা শেষে সংগঠনটির সমন্বয়কারী রঞ্জিত কুমার সাহা বলেন, ১৭ দফা দাবি আদায়ে আজ ও আগামীকাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট ছাড়াও জেলা ও উপজেলা সদরে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করবে সংগঠনটি। সরকার দাবি না মানলে বুধবার আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

No comments

Powered by Blogger.