সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কঠোর ব্যবস্থা নিন-ছাত্র নিহত, অতঃপর ভাঙচুর

রাজধানী ঢাকার রাজপথে ঢাকা কলেজের একজন ছাত্রের বাসচাপায় মৃত্যু যেমন অচিন্তনীয়, তেমনি মর্মান্তিক। নিহত মো. জাকারিয়া ছিলেন ইংরেজি বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণীর শিক্ষার্থী। উচ্চতর শিক্ষাগ্রহণ শেষে তাঁর যখন চাকরিজীবনে প্রবেশ করার কথা, তখন তাঁর জীবন কেড়ে নিল মিনিবাস।


এটা কি শুধু দুর্ঘটনা? একের পর এক সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু রোধ করা কি এতই কঠিন?
ঢাকা কলেজের কাছে নীলক্ষেতের মোড়ে যে মিনিবাসের চাপায় জাকারিয়া নিহত হলেন, তার চালককে আটক করা হয়েছে। তাঁর ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য সবাইকে জানতে দেওয়া হোক। চালকের ছাড়পত্র কি ঠিক ছিল? মিনিবাসের ফিটনেস সনদ? চালক নিয়মকানুন মেনে গাড়ি চালাচ্ছিলেন কি না? রাত সাড়ে নয়টায় রাস্তায় খুব বেশি ভিড় থাকে না। একটু সতর্ক থাকলে দুর্ঘটনা ঘটার কথা নয়।
এ ধরনের দুর্ঘটনা ও মৃত্যুর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের অবশ্যই বিচার ও শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে। আইনের পথেই এসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রতিকার দরকার। কিন্তু দুঃখের বিষয়, তরুণ শিক্ষার্থীরা সহপাঠীকে হারিয়ে আইন নিজেদের হাতে তুলে নিয়েছেন। বাস ভাঙচুর করেছেন। শিক্ষার্থীদের হাতে লাঠিসোঁটা নিতান্তই বেমানান। তাঁরা হবেন আগামী দিনের পথিকৃৎ। তাঁদের অনেক বেশি ধৈর্যশীল হতে হবে। বেপরোয়া গাড়ি চালানো ও বাসচাপায় মৃত্যুর প্রতিবাদ হবে নিশ্চয়ই, কিন্তু এ জন্য সড়কে নৈরাজ্য সৃষ্টি কাম্য নয়।
সহপাঠীর মৃত্যুতে তাৎক্ষণিক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া হয়তো অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু যখন সামান্য কারণে ঝগড়া বাধিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে ভাঙচুর করেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এলাকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মারধরে লিপ্ত হন, তিতুমীর কলেজের কিছু শিক্ষার্থী মহাখালীতে একটি রেস্তোরাঁয় পানীয় পান করে বিল পরিশোধ নিয়ে কথা-কাটাকাটি ও ভাঙচুর শুরু করেন, তখন উদ্বিগ্ন না হয়ে পারা যায় না। তাঁদের আচার-আচরণ সবার জন্য হতে হবে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। ভাঙচুর-সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে নতুন প্রজন্মের কাছে ভালো কিছু আশা করা যাবে না।

No comments

Powered by Blogger.