যানবাহন ভাংচুর-বিপন্ন নাগরিক জীবন

মঙ্গলবার দুটি পৃথক ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঢাকা কলেজ ও তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা পৃথক পৃথকভাবে গাড়ি ও প্রতিষ্ঠান ভাংচুরসহ রাস্তা অবরোধের মতো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। এতে কয়েক ঘণ্টার জন্য মহাখালী ও নিউমার্কেট এলাকায় স্বাভাবিক যান চলাচল ব্যাহত হয়।


ঢাকা কলেজের স্নাতকোত্তর ছাত্র এসএম জাকারিয়া ডালিম সোমবার রাতে নিউমার্কেট এলাকায় বাসচাপায় নিহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার একদল শিক্ষার্থী রাস্তায় নেমে এসে গাড়ি ভাংচুর করলে শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ডাকতে হয়। অথচ ঘাতক বাসটির চালককে পুলিশ সোমবার রাতেই গ্রেফতার করেছিল। এরপর রাস্তায় অবরোধ চালানো ও গাড়ি ভাংচুর করা বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ শিক্ষার্থীদের উচিত কর্ম বিবেচিত হতে পারে না। তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা পর্যটন পরিচালিত বার রুচিতায় খেয়ে অর্থ পরিশোধ করতে টালবাহানা করায় প্রতিষ্ঠানটির কর্মচারীদের সঙ্গে বচসা হয়। এর জেরে কিছু ছাত্র হোস্টেল থেকে এসে প্রতিষ্ঠানটির ওপর চড়াও হওয়ার ঘটনা নাগরিক জীবনের নিত্যউপদ্রবের করুণ চেহারা প্রকট করে। এখানেও রাস্তায় চলাচলকারী গাড়ির ওপর চড়াও হয়। যে দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা তাদের অসহিষ্ণু আচরণের মাধ্যমে নাগরিক জীবনের স্বাভাবিকতায় ছন্দপতন ঘটিয়েছে এবং নাগরিক ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতিসাধন করেছে তারা কেউই অবুঝ নয়। আর উচ্চতর প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যখন এভাবে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের কারণ হয়, তখন আমাদের ভবিষ্যৎ যে কতটা ঝুঁকিপূর্ণ তা সহজেই অনুমেয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে দিয়ে বা আশপাশের এলাকায় গাড়ি চলাচলে চালকদের একটু বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, চালকরা নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই বেপরোয়া গাড়ি চালনাকে উচিত কাজ বিবেচনা করেন। পরিণতি গাড়ি ভাংচুর এবং পুলিশি অ্যাকশন পর্যন্ত গড়ায়। তিতুমীর কলেজ ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা যে দুটি পৃথক ঘটনাকে কেন্দ্র করে অসহিষ্ণুতা প্রদর্শন করে তা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। এসব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নাগরিকরা সহিষ্ণুতা ও সুবিবেচনা প্রত্যাশা করেন। সেখানের কর্তৃপক্ষেরও বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করা উচিত।

No comments

Powered by Blogger.