অপরাধী ধরতে এসে ধরেছেন মাছ! by আনোয়ার পারভেজ

সদ্য বদলি হওয়া জয়পুরহাটের কালাই থানা পুলিশের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়ম করে সরকারি পুকুর ইজারা নিয়ে মাছ চাষের অভিযোগ উঠেছে। সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মাসুদ রানা তাঁর স্ত্রীর নামে মাত্র ৯০০ টাকায় ইজারা নিয়ে এক বছর ধরে পুকুরটিতে মাছ চাষ করছেন।


উপজেলা সিপিবির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশের চাকরিতে অপরাধী ধরতে এসে ওই এএসআই পুকুরের মাছ চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। এ ব্যাপারে তৎকালীন ওসিকে অভিযোগ করায় ওই এএসআই আমাকে গালাগাল করেন।’
উপজেলা ভূমি কার্যালয়ের জরিপকারী (সার্ভেয়ার) আমানত আলী জানান, কালাইয়ের বামনীহাড়ি মৌজার ১ নম্বর খতিয়ানের ৩৭ দাগের ৬৯ শতাংশ আয়তনের পুকুরটি এখনো কালাই থানা পুলিশের এএসআই মাসুদ রানার কাছে ইজারা দেওয়া আছে। স্ত্রী জয়নব বিবির নামে ১৪১৮ বাংলা সনের জন্য পুকুরটি ৯০০ টাকায় ইজারা নিয়েছেন তিনি। খাস পুকুর বন্দোবস্ত নীতিমালা অনুযায়ী শুধু এলাকার প্রকৃত মৎস্যজীবী ও মৎস্যচাষিদের মধ্যেই খাস পুকুর ইজারা দেওয়ার বিধান রয়েছে।
স্থানীয় মৎস্যচাষিরা জানান, পুকুরটির ইজারা মূল্য কম করে হলেও অর্ধ লাখ টাকা হবে। কিন্তু মাসুদ রানা দাপট দেখিয়ে উপজেলা ভূমি কার্যালয় থেকে নামমাত্র মূল্যে এটি ইজারা নিয়েছেন বলে তাঁরা অভিযোগ করেন। অভিযুক্ত এএসআইকে ২৪ মার্চ বগুড়ায় বদলি করা হয়েছে। পুকুরটি এখনো তাঁর কবজায় আছে। আগামী ৩০ চৈত্র এটির ইজারা শেষ হওয়ার কথা।
ভূমি কার্যালয়ের একটি সূত্র জানায়, সহকারী কমিশনারের (ভূমি) দায়িত্বে থাকা কালাইয়ের সাবেক এক ইউএনওর যোগসাজশে গত বছর ওই পুলিশ কর্মকর্তা পুকুরটি ইজারা নেন। এলাকার মৎস্যচাষিরাও একই অভিযোগ করেছেন।
জানা যায়, এএসআই মাসুদ রানার বাড়ি দিনাজপুর জেলায়। কিন্তু ঠিকানা জালিয়াতি করে ইজারার নথিতে তা কালাই উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামে উল্লেখ করা হয়। নথি ঘেঁটে দেখা গেছে, গত বছরের ২৯ জুলাই মাসুদ রানার স্ত্রীর নামে পুকুরটি ইজারা দেখিয়ে ইউএনও নথি অনুমোদন করেন।
অভিযুক্ত এএসআই মাসুদ রানা খাস পুকুর ইজারা নেওয়ার সত্যতা স্বীকার করলেও বেশি কিছু বলতে চাননি।
কালাইয়ের বর্তমান সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ খালিদ হোসেন বলেন, ‘কোনো পুলিশ কর্মকর্তা বা তাঁর স্ত্রীর নামে সরকারি পুকুর ইজারা প্রদানে আইনগত বিধি-নিষেধ আছে কি না, তা নীতিমালা না দেখে বলা সম্ভব নয়।’

No comments

Powered by Blogger.