পটুয়াখালীতে ১১টি লঞ্চঘাট বেহাল, ভোগান্তিতে যাত্রীরা

টুয়াখালীর অভ্যন্তরীণ ১১টি লঞ্চঘাট ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পন্টুন সংস্কার না করায় এবং নদীতে পানি কমে যাওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এই কারণে প্রতিদিন কয়েক লাখ লঞ্চযাত্রী দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পটুয়াখালীর অধিকাংশ মানুষ নৌপথে রাজধানী ঢাকায় ২০ টি বিলাসবহুল লঞ্চে যাতায়াত করে। এসব এলাকার মালামালও লঞ্চে পরিবহন করা হয়। জেলার অভ্যন্তরীণ নৌপথেও ২০ টি ছোট লঞ্চ চলাচল করে।


পটুয়াখালী নদীবন্দর সূত্রে জানা গেছে, এ জেলায় মোট ৩০টি লঞ্চঘাট আছে। এর মধ্যে ১১টি ঘাট এখন ব্যবহারের অনুপযোগী। ঘূর্ণিঝড় আইলা ও সিডরে ঘাটের পন্টুন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পন্টুন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এগুলো দিয়ে যাত্রীরা ওঠানামা করতে পারেন না। এ ছাড়া মালামালও ওঠাতে-নামাতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
জানা গেছে, দশমিনা উপজেলার হাজীরহাটের লঞ্চঘাটের পন্টুন গত ১১ সেপ্টেম্বর ডুবে যায়। এখনও তা উদ্ধার হয়নি। তলা ফেটে সদর উপজেলার উত্তর ধরান্দী লঞ্চঘাটের পন্টুনটি প্রায় এক বছর আগে লোহালিয়া নদীতে ডুবে যায়। উদ্ধার করা হলেও এটি এখন ব্যবহারের অনুপযোগী।
উত্তর ধরান্দী লঞ্চঘাটের ইজারাদার এস এম ফারুক জানান, ৬১ হাজার টাকায় ঘাট ইজারা নেওয়া হয়েছে। নতুন কোনো পন্টুন স্থাপন করা হয়নি। লঞ্চগুলো যাত্রীদের নদীর চরে নামিয়ে দিচ্ছে। অনেক সময় ভিড়তে অসুবিধা হওয়ায় লঞ্চগুলো ঘাটে না দিয়েই চলে যাচ্ছে।
গলাচিপা সদরের লঞ্চঘাট ব্যবহারে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পানি কম থাকায় ভাটার সময় পন্টুন চরে উঠে থাকে। এ কারণে ওই সময় মাঝনদীতেই লঞ্চগুলো নোঙর করা হয়। ফলে যাত্রীদের নৌকায় করে ঘাটে আসতে হয়। আবার ঘাট থেকে নৌকা করে এসে লঞ্চে উঠতে হয়।
সরেজমিন দেখা গেছে, তলা ফেটে যাওয়ায় বাউফল উপজেলার পশ্চিম কাছিপাড়া লঞ্চঘাটের পন্টুনটি বেঁধে রাখা হয়েছে। কারখানা লঞ্চঘাটের পন্টুনটি জোয়ারের সময় প্রায় ৮০ ভাগ ডুবে থাকত। বর্তমানে সেখানে চর পড়ায় কোনো রকমে সেটি নদীতে ভেসে আছে। যাত্রীরা ভীষণ কষ্ট করে ওই পন্টুন দিয়ে লঞ্চে ওঠানামা করেন।
গলাচিপার রাঙ্গাবালী লঞ্চঘাটের পন্টুনটির অবস্থাও খারাপ। তলা ফেটে পানি ঢুকছে। এটি যেকোনো সময় ডুবে যেতে পারে। বন্যাতলী ঘাটের পন্টুনটি ঝড়ে চড়ায় উঠে আছে।
দুমকির চরগরবদি লঞ্চঘাটের পন্টুনটি ভেঙে পড়ে আছে। মির্জাগঞ্জের ভিকাখালী ও কাঁকড়াবুনিয়া লঞ্চঘাটের পন্টুন দুটি জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যেকোনো সময় ডুবে যেতে পারে। পটুয়াখালী শহরের নিউমার্কেটের লঞ্চঘাটের পন্টুনটিও জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে।
পটুয়াখালী নদীবন্দরের উপপরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, পন্টুনগুলোর ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানানো হয়েছে। দশমিনার হাজীরহাটে লঞ্চঘাটে নতুন একটি পন্টুন স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য পন্টুন যত দ্রুত সম্ভব মেরামত ও পরিবর্তনের চেষ্টা করা হচ্ছে।

No comments

Powered by Blogger.