লোকমান হত্যাকাণ্ড-এজাহারভুক্ত আসামি মোন্তাজের আত্মসমর্পণ এক দিনের রিমান্ড

রসিংদীর পৌর মেয়র লোকমান হোসেন হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোন্তাজ উদ্দিন ভূঁইয়া আত্মসমর্পণ করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে নরসিংদী মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করেন। এ সময় মোন্তাজকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। পুলিশ ও নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, লোকমান হত্যা মামলায় চার নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি করার পর থেকে আত্মগোপন করেন
মোন্তাজ। কিন্তু নরসিংদী পৌর মেয়র পদে প্রার্থী হতে বড় ভাইকে দিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন তিনি। গত ২৭ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের সময় স্বাক্ষরজনিত জটিলতার কারণে মোন্তাজের মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
মোন্তাজের পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে আপিল করতে গত বুধবার দিবাগত রাত দুইটা থেকে নরসিংদীতে অবস্থান করছিলেন মোন্তাজ। পারিবারিক ও দলীয় নেতাদের সিদ্ধান্তে তিনি আদালতে আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নেন।
গোয়েন্দা পুলিশ সূত্র জানায়, সকাল ১০টার দিকে আইনজীবীদের নিয়ে নরসিংদী মুখ্য বিচারিক হাকিম নিতাই চন্দ্র সাহার আদালতে যান মোন্তাজ। বেলা ১১টার দিকে মোন্তাজকে আদালতের কাঠগড়ায় ওঠানো হয়। ১৫ মিনিট পর তাঁকে কাঠগড়া থেকে আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এ সময় মোন্তাজকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের কাছে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন লোকমান হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ।
অন্যদিকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের নবনিযুক্ত প্রশাসক আসাদুজ্জামানসহ অর্ধশতাধিক আইনজীবী মোন্তাজের জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে মোন্তাজের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মোন্তাজ উদ্দিন ভূঁইয়া আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, ‘আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। মেয়র পদে উপনির্বাচনে যাতে অংশ নিতে না পারি, সে জন্য আমাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে লোকমান হত্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে। আশা করছি, আমি নির্বাচনে অংশ নিতে পারব।’
এ দিকে মোন্তাজের বড় ভাই মুস্তাক আহমেদ ভূঁইয়া গতকাল মোন্তাজের মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে নরসিংদী জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেন। তবে এই আপিলের ব্যাপারে শুনানির দিন এখনো ধার্য হয়নি।
গত ১ নভেম্বর সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন মেয়র লোকমান। এ ঘটনায় তাঁর ছোট ভাই কামরুজ্জামান ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদের ছোট ভাই সালাহউদ্দিন আহমেদকে প্রধান আসামি করে ১৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ছয়-সাতজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। মোন্তাজের আত্মসমর্পণের আগে পুুলিশ এজাহারভুক্ত দুই আসামিসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করে।

No comments

Powered by Blogger.