বিস্ময়কর বটে!

ধুনিককালে আমরা যে জীবনযাপন করছি, তার অর্ধেকটাই প্রযুক্তিনির্ভর। তবে এ অবস্থায় আসতে আমাদের অপেক্ষা করতে হয়েছে হাজার হাজার বছর। ঝুঁকি নিতে হয়েছে অনেক বিজ্ঞানীকে। বিপদ-আপদ, সামাজিক অস্বীকৃতির অসহনীয় চাপও সহ্য করতে হয়েছে কাউকে কাউকে। তাদের কারও ভাগ্যে জুটেছে বিজয়ীর বরমাল্য, আবার কারও কপালে জুটেছে পাগল বা উন্মাদ অভিধা। যেমন ১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী রনজেন এক্স-রে আবিষ্কার করার পর


পড়েছিলেন এক মহাবিপদে। একদল সাংবাদিক পত্রপত্রিকায় লিখে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করলেন, এটা আসলে পিপিং টমের কাজ করবে। পিপিং টম মানে, লুকিয়ে লুকিয়ে অন্যের নগ্ন শরীর দেখা। সরকারও এর আগামাথা কিছুই বুঝল না। পক্ষান্তরে ব্রিটিশরা বাজারে ছাড়ল এক্স-রে রোধক অন্তর্বাস! এবার বুঝুন রনজেনের অবস্থা তখন কেমন ছিল।
প্রাচীন চীনের বদ্যি-কবিরাজ কিংবা চিকিৎসকদের এক সময় ভীষণ ঝামেলা পোহাতে হতো রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে। ঝামেলাটা বাধত নারী রোগীর ক্ষেত্রে। এর বড় কারণ ছিল, চিকিৎসকরা কোনো অবস্থাতেই রোগিনীর শরীর স্পর্শ করতে পারতেন না। রোগের স্থানও উন্মুক্ত করে দেখার সুযোগ ছিল না। সামাজিকভাবে এটা নিষিদ্ধ ছিল। তাই রোগিনীদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা অবলম্বন করতেন এক অভিনব পদ্ধতির। তারা ব্যবহার করতেন হাতির দাঁতে খোদাই করা নগ্ন নারী মূর্তি। এটা রোগিনীর সামনে ধরা হতো। পর্দার ওপর প্রান্ত থেকে সেই নারী চিহ্নিত করে দিত তার শরীরের কোথায় সমস্যা। চিকিৎসকরা চিহ্নিত স্থান দেখে সম্ভাব্য অঙ্গের চিকিৎসা করতেন। ডাক্তারদের ধৈর্য ছিল বটে!
যুদ্ধবিমানের ইতিহাসে প্রথমটি ছিল আমেরিকান ম্যাকডোনাল এফএফডি-১ ফ্যান্টম। এটির পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন করা হয় ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দের ২৫ জানুয়ারি। তবে ওইদিন পর্যন্ত দুই ইঞ্জিনবিশিষ্ট এ বিমানটির একটি ইঞ্জিন লাগানো বাকি ছিল। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, নির্দিষ্ট দিনেই এটি আকাশে উড়েছিল একটি ইঞ্জিন বাদ দিয়েই! বিমানটি যিনি চালিয়েছিলেন, সত্যিকার অর্থেই তিনি ছিলেন সবচেয়ে সাহসী পাইলট।
পাগলামি হোক, ক্যাভেনডিশ তাও বেঁচে ছিলেন। কিন্তু ভারতের বিখ্যাত বিজ্ঞানী প্রসাদ তো নিজের জানটাই উৎসর্গ করে দিলেন বিজ্ঞানের জন্য। পৃথিবীর ভয়ঙ্করতম বিষ পটাসিয়াম সায়ানাইড পান করে তিনি আত্মহত্যা করেছেন শুধু বিষটির স্বাদ জানার জন্য! স্বাদ তাহলে কেমন পটাসিয়াম সায়ানাইডের? প্রসাদ মৃত্যুর আগ মুহূর্তে লিখে যান, 'মোটেই ভালো নয়, অত্যন্ত বিস্বাদ ও তেঁতো।'
সোহাগ আহমেদ

No comments

Powered by Blogger.