আইন ও শাস্তি


বিএমডিসি আইন অনুযায়ী, ন্যূনতম এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রিধারী ছাড়া কেউ নামের সঙ্গে ‘ডাক্তার’ পদবি ব্যবহার করলে সেটা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এই অপরাধের জন্য ওই ব্যক্তি সর্বোচ্চ তিন বছর কারাদণ্ড অথবা এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। যদি একই অপরাধ বারবার করতে থাকেন, তা হলে প্রতিবার পুনরাবৃত্তির জন্য ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।


কলসি দীঘিরপাড় এলাকায় রোগী দেখেন মো. ইব্রাহিম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিএমডিসির আইন জানার পর এখন আমি ডাক্তার লিখি না। এমবিবিএসও লিখি না। আসলে আমরা পল্লিচিকিৎসক।’
একইভাবে ফ্রিপোর্টের মা ফার্মেসিতে চেম্বার করেন মোমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমি এখন ডাক্তার লিখি না। দেশের আইন মেনে চলতে হবে।’
মানিক শর্মা রোগী দেখেন মনছুরাবাদ এলাকায়। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখনো আমরা এমবিবিএস লিখছি। প্রয়োজনে এটা আর লিখব না।’
সম্প্রতি ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান শুরু হওয়ায় কেউ কেউ সাইনবোর্ডে লেখা এমবিবিএস ডিগ্রি মুছে ফেলেছেন।
শাস্তি: সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সর্বশেষ অভিযান হয় গত রোববার। ওই দিন মোমিন রোডের ম্যাগনাম ডায়াগনস্টিক সেন্টারে টমাস আর মারমাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। তিনি আকুপাংচার থেরাপিস্ট হলেও নামের আগে ডাক্তার লিখে রোগী দেখতেন।
গত ৩ অক্টোবর নগরের চান্দগাঁও থানাধীন সিঅ্যান্ডবি এলাকা থেকে এক ভুয়া এমবিবিএস চিকিৎসক মনির উদ্দিন পাটোয়ারীকে (৩০) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি ‘ডা. তানজির মাহমুদ শামীম’ ছদ্মনাম ব্যবহার করে মোস্তফা ফার্মেসিতে বসে রোগী দেখতেন।
মোহাম্মদ ইদ্রিছ নামের এক ব্যক্তি পাঠানটুলীর গায়েবি মসজিদ এলাকায় ‘সেন্টার অব ট্রেনিং রিসার্চ অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন ফর প্যারালাইজড’ নামে রীতিমতো গবেষণাকেন্দ্র খুলে বসে রোগী দেখছিলেন। গত ২৪ নভেম্বর ভ্রাম্যমাণ আদালত তাঁকে তিন মাসের কারাদণ্ড দেন।
নেছার উদ্দিন নামের আরেকজন নিজের নামের পাশে এমবিবিএস (আইসিএএম) ডিগ্রি লিখে উত্তর হালিশহরের শাহ আমানত ক্লিনিকে রোগী দেখতেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত তাঁকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছেন।
কোনো স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে ফিজিওথেরাপি নিয়ে তাঁর কোনো ডিগ্রি নেই। কিন্তু ভিজিটিং কার্ডে ভুয়া ডিগ্রি লাগিয়ে এবং নামের আগে ডা. লিখে উজ্জ্বল কান্তি দেব নগরের গোলপাহাড় মোড়ে ছয় বছরেরও বেশি সময় ধরে ‘হাটহাজারী ফিজিওথেরাপি ক্লিনিক অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার’ খুলে ব্যবসা করছিলেন। একই ক্লিনিকে তাঁর স্ত্রী চিত্রা সরকারও ফিজিওথেরাপি দিতেন। তাঁদেরও ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানা করেন। তাঁর সাইনবোর্ড থেকে ‘ডা.’ ও ‘ক্লিনিক’ শব্দ দুটি মুছে দেওয়া হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.