মন্ত্রিসভায় অনুমোদন-সরকারি চাকরির বয়স দুই বছর বাড়ল

রকারি চাকরি দুই বছর বাড়ানোর প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে। ফলে অবসরের বয়সসীমা ৫৭ থেকে ৫৯ বছর হলো। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ-সংক্রান্ত ‘দ্য পাবলিক সার্ভিস (রিটায়ারমেন্ট) অ্যাক্ট, ১৯৭৪’ সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদন পায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররফ হোসাইন ভূঁইয়া সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।


সচিব বলেন, চাকরি থেকে অবসরের বয়সসীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত অত্যন্ত জরুরি বলে রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে এটি কার্যকর হবে। এর পরে সংসদের আগামী অধিবেশনে অধ্যাদেশটির অনুমোদন দেওয়া হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, বয়স বাড়ানোর পক্ষে-বিপক্ষে মন্ত্রিসভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সরকারি চাকরি পাওয়ার বয়সসীমা ৩০ বছর করা, মানুষের গড় আয়ু বেড়ে যাওয়া এবং দক্ষ কর্মকর্তা-কর্মচারীর সেবা পাওয়া নিশ্চিত করার জন্য বয়স বাড়ানোর পক্ষে যুক্তি এসেছে। তা ছাড়া আশপাশের দেশে অবসরের বয়সসীমা ৬০ বছর। অন্যদিকে অধস্তন কর্মকর্তাদের পদোন্নতি জটিলতা এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্র কমে যাওয়ার সম্ভাবনার বিষয়টি বিপক্ষে যুুক্তি হিসেবে এসেছে।
সচিব জানান, দুই রকম মতামত শুনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পদোন্নতি ও নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না। পদোন্নতি থেমে যাবে, এটা ঠিক নয়। একটু বিলম্ব হতে পারে। একইভাবে ১২ লাখ অনুমোদিত পদের মধ্যে এখনো দুই লাখ পদ শূন্য আছে। এসব পদ দ্রুত পূরণের জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন।
অবসরে যাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এ সুবিধা পাবেন কি না, জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আগের নিয়ম অনুযায়ী ‘অবসর প্রস্তুতিকালীন ছুটি’ (এলপিআর) পরিবর্তন করে ‘অবসর পরবর্তী ছুটি’ (পিআরএল) করা হয়েছে। এ অনুযায়ী, যাঁরা অবসরে গেছেন, তাঁরা চলেই গেছেন। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, তাঁরা কোনো সুবিধা পাবেন না।
বৈঠক সূত্র জানায়, রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বৈঠকে সরকারি চাকরির বয়স দুই বছর বাড়ানোর প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন। পাটমন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী এবং পরিবেশ ও বনমন্ত্রী হাছান মাহমুদ তিন বছর বাড়ানোর প্রস্তাব করেন।
প্রতিবন্ধীদের জন্য এক ভাগ কোটা: বিসিএস ক্যাডার সার্ভিস এবং অন্যান্য প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধীদের জন্য শতকরা এক ভাগ কোটা সংরক্ষণ থাকবে। মন্ত্রিসভার বৈঠকে গতকাল এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়। যেসব কোটায় প্রার্থী পাওয়া যাবে না, প্রতিবন্ধীদের এ কোটা দিয়ে তা পূরণ করা হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, বৈঠকে বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট আইন-২০১১, অপরাধ-সম্পর্কিত বিষয়ে পারস্পরিক সহায়তা আইন-২০১১ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় সংশোধন আইন-২০১১ খসড়া অনুমোদিত হয়েছে। এ ছাড়া সাসটেইনেবল এনার্জি ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (সেডা) আইন, পরিবর্তন সাপেক্ষে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, বৈঠকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ২০১০-১১ অর্থবছরের কার্যাবলি-সম্পর্কিত বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.