শুল্ক ফাঁকির কৌশলঃ সুতার কনটেইনারে বিএমডব্লিউ গাড়ি

ঢাকার সাভার ইপিজেডের একটি পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠান এক কনটেইনার সুতা আমদানির ঘোষণা দিয়েছিল। আজ সোমবার চট্টগ্রাম বন্দরে সেই কনটেইনারে পাওয়া গেছে দুটি অত্যাধুনিক গাড়ি, টেলিভিশন ও ফটোকপির মেশিন। কাস্টম হাউসের হিসাব অনুযায়ী, ৪০ ফুট দীর্ঘ কনটেইনারে পাওয়া গেছে একটি তিন হাজার সিসি’র নতুন বিএমডব্লিউ গাড়ি (মডেল ৭৩০ আই) এবং ১৯৮৪ সিসির ২০০৪ সালে তৈরি একটি অডি গাড়ি।

এ ছাড়া ৪৫ টি এলসিডি ও এলইডি টেলিভিশন এবং ১৫টি ফটোকপি মেশিনও পাওয়া গেছে। ঘোষণা বহির্ভূত এসব পণ্যের মূল্য আনুমানিক পাঁচ কোটি টাকা বলে ধারণা করছেন কাস্টম কর্মকর্তারা। কাস্টম হাউস সূত্র জানায়, ঢাকার ইপিজেডের গোল্ডটেক্স লিমিটেড নামে একটি রপ্তানিমুখী একটি প্রতিষ্ঠান এক কনটেইনার সুতা আমদানির ঘোষণা দেয়। সিঙ্গাপুরের প্রতিষ্ঠান জেট সিস্টেম পিটিই লিমিটেড এই পণ্য রপ্তানি করে। গত ৩০ নভেম্বর এ সংক্রান্ত আমদানি দলিলপত্র কাস্টম হাউসে জমা দেয় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানটি।
এ সংক্রান্ত আমদানির দলিলপত্রে উল্লেখ করা হয়, প্রায় ৬৭ হাজার মার্কিন ডলার মূল্যের ৪০০ কার্টনে ১৯ দশমিক ৮ টন সুতা (কমবেড কমপ্যাক্ট ইয়ার্ন) রয়েছে। শুল্কায়নের পর এই চালানটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কারখানা চত্বরে খালাসের আবেদন করে আমদানিকারকের প্রতিনিধি সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠান।
কিন্তু গত শনিবার এই কনটেইনারটি চট্টগ্রাম বন্দরে স্ক্যানিং করার পর সন্দেহজনক পণ্য আছে বলে শনাক্ত করেন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম। এরপরই এই কনটেইনার সরাসরি বন্দর থেকে সরবরাহ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এ জন্য চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের যুগ্ম কমিশনার জুয়েল আহমেদকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটির সদস্যরা অজ সোমবার বিকেলে এই কনটেইনার খুলে আমদানিকারকের জালিয়াতির চিত্র দেখতে পান। কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার রাকিবুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, পণ্য খালাস নিতে আসা আমদানিকারকের প্রতিনিধি ও গাড়ির চালক পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় আমদানিকারক এবং সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান গোল্ডটেক্স লিমিটেডের পক্ষে পণ্য খালাসে নিয়োজিত ছিল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট শিমুল ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড। এই প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাকে না জানিয়ে কর্মচারী (জেটি সরকার) হাবিবুর রহমান এই প্রতিষ্ঠানের পণ্য খালাসের প্রক্রিয়া করেন।’ তার সঙ্গে মো. হান্নান নামে আরেকজন জোটবদ্ধ হয়ে এই অবৈধ পণ্য খালাসের চেষ্টা করেছিল বলে তিনি জানান।

No comments

Powered by Blogger.