বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন হোক-ঢাকায় ভাড়াটেদের সমস্যা

বাংলাদেশে যেসব আইন শত ভাগ অকার্যকর, বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন তার মধ্যে অন্যতম। এই আইনের অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, ‘কাজির গরু কেতাবে আছে, গোয়ালে নেই’। যে আইনের বাস্তবায়ন নেই, সেই আইন করে কী লাভ? পূর্বাপর সরকারগুলো এ রকম বহু আইন করলেও বাস্তবায়নে উদাসীন। সরকারের নীতিনির্ধারকেরা প্রায়ই বলে থাকেন, সবার স্বার্থ রক্ষা করা তাদের দায়িত্ব। কিন্তু মহানগরীর ৯৫ শতাংশ ভাড়াটের পক্ষে তাদের কোনো অবস্থান


নিতে দেখা যায়না। তার কারণ হতে পারে, যাঁরা আইন করেন এবং বাস্তবায়নের দায়িত্বে নিয়োজিত, তাঁদের সম্ভবত ভাড়া বাড়িতে থাকতে হয় না। থাকলে ৯৫ শতাংশ ভাড়াটেদের স্বার্থ এভাবে উপেক্ষা করতে পারতেন না।
রোববার ভাড়াটে অধিকার সংরক্ষণ সোসাইটি আয়োজিত সেমিনারে বক্তারা ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্ধারিত ভাড়ার হার ও ১৯৯১ সালের বাড়িভাড়া আইন কার্যকর করার যে দাবি জানিয়েছেন, তার সঙ্গে দ্বিমত করার উপায় নেই। সরকার যখন আইন করেছে, তা বাস্তবায়নেরও দায়িত্ব তাকে নিতে হবে। ভাড়াটেদের অভিযোগ, বাড়ির মালিকেরা ইচ্ছামতো বাড়িভাড়া বাড়িয়ে থাকেন, কোনো নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা করেন না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ভাড়াটেদের সঙ্গে চুক্তিও করেন না।
বাড়ির মালিকেরা বাড়ির ভাড়া বাড়ানোর ক্ষেত্রে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির অজুহাত দেখান। ভাবখানা এমন যে ভাড়াটেদের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ছে না, বাড়ছে কেবল বাড়ির মালিকদেরই। বাজারদরের সঙ্গে সংগতি রেখে বাড়িভাড়া বাড়ালে কেউ আপত্তি করতেন না। কিন্তু গত দুই দশকে বাড়ি ভাড়া চারগুণ হওয়ার কী যুক্তি থাকতে পারে?
অন্যান্য পণ্যের দাম বাড়লে বাড়িভাড়াও বাড়বে। কিন্তু অবশ্যই তা নিয়মের মধ্যে থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে ১৯৯১ সালের প্রণীত বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নের বিকল্প নেই।

No comments

Powered by Blogger.