'চেষ্টা করেছি কিন্তু পারিনি' by সঞ্জয় সাহা পিয়াল

রীতিই বলা যায়। ম্যাচ শেষে পারফর্মারদের মধ্যে থেকেই ঘেঁটেঘুঁটে একজনকে বেছে নিয়ে আসা হয় সাংবাদিকদের সামনে। সেখানে গতকাল এমনই একটি দিন পার করেছে বাংলাদেশ যে পারফর্মার বলতে ১ উইকেট করে পাওয়া সাকিব আল হাসান আর নাজমুল হোসেন। আগের দিন সাকিব মিডিয়ার মুখোমুখি হওয়ায় গতকালের অপশন ছিল কেবল নাজমুল হোসেন। সাত বছর পর টেস্টে ফিরে এসেই যিনি আগের দিন প্রথম বলে উইকেট পেয়েছিলেন।


গতকালও শেষ বেলায় নতুন বল হাতে পেয়ে তৌফিক উমরকে প্যাভিলিয়নে ফিরিয়ে দিয়েছেন। সব বিচারে তাই নাজমুলকেই দলের মুখপাত্র হয়ে মিডিয়ার সামনে আসতে হয়েছিল। যিনি শুরুতেই স্যারেন্ডার করে নেন নিজেকে। কুয়াশায় মোড়া দিনটি পেসারদের জন্য আর্দশ হলেও সে সুবিধা তারা কাজে লাগাতে পারেননি। 'কন্ডিশনটা পেস বোলারদের জন্য সহায়ক হলেও পিচ সে রকম ছিল না। তা ছাড়া প্রায় চলি্লশ ওভার পুরনো হয়ে যাওয়া বল থেকে পেসাররা বাড়তি সুবিধা আদায় করতে পারেনি। আমরা চেষ্টা করেছিলাম; কিন্তু পারিনি।' নাজমুলের এই সরল স্বীকারোক্তিতে অনেকটাই অসহায়ত্ব ছিল।
যেখানে নাজমুল মেনে নিয়েছেন কয়েকটি ক্যাচ মিসের কারণেই দিনটি এ রকম ম্যাড়ম্যাড়া গেছে বাংলাদেশিদের জন্য। 'আমরা কয়েকটি ক্যাচ মিস করেছি। এ ধরনের উইকেটে বোলারদের জন্য খুব বেশিকিছু করার থাকে না। এরপরও যদি ক্যাচের সুযোগ মিস হয় তাহলে ম্যাচটা কঠিন হয়ে যায়।' নাজমুল ক্যাচ মিসের কথা বললেও এদিন মুশফিকের স্টাম্পিং মিসের ঘটনাও পীড়া দিয়েছে অনেককে। সাকিবের বলে ৫৬ রানে থাকা তৌফিক উমরকে নিশ্চিত ক্যাচ ধরার আনন্দে মুশফিক স্টাম্পিং করার কথাই ভুলে গিয়েছিলেন। যার খেসারত দিতে হয়েছে তৌফিককে ১৩০ রানের ইনিংস উপহার দিয়ে। এরপরও দিনের শেষ সেশনে নতুন বল হাতে পেয়ে অফস্টাম্প ঘেঁষে দারুণ লাইনে বোলিং করে গেছেন নাজমুল। কিন্তু সতীর্থ শাহাদাত হোসেন রাজিব তা পারেননি। দলের মধ্যেই যাকে 'মিস্টার টুয়েলভ ম্যান' বলা হয়, তিনি কি-না এখন পর্যন্ত ঢাকা টেস্টে মুশফিকের সেরা বোলিং অস্ত্র। সবচেয়ে বেশি ২০ ওভার বোলিংও নাজমুলই করেছেন। 'আসলে সাত বছরের অপেক্ষাটা অনেক লম্বা। এরপর যদি তৃতীয় টেস্ট খেলার জন্য আরও সাত বছর অপেক্ষা করতে হয় তাহলে হয়তো ক্রিকেট থেকেই বাদ পরে যাব আমি। আমি অনেক দিন ধরে হার্ড ওয়ার্ক করে যাচ্ছি। কখনোই হাল ছাড়িনি আমি। শুধু জানতাম, যখনই সুযোগ পাব নিজের সেরাটা দিতে হবে আমাকেই।' যদিও নাজমুল মনে করেন, এখনও সেরাটা দিতে পারেননি তিনি। চেয়েছিলেন কুয়াশায় আবছা হয়ে যাওয়া মাঠে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের ঘাবড়ে দেবেন; কিন্তু পারেননি তিনি। চেষ্টা অবশ্য করেছিলেন, নিয়মিত অফস্টাম্পের বাইরে নির্দিষ্ট একটি উচ্চতায় বল ফেলার চেষ্টা করেছেন। 'ভেবেছিলাম, এ আবহাওয়ায় কিছু করতে পারব। বাড়তি কিছু অবশ্য করতে হয়নি। নিজের বেসিকটাই অ্যাপল্গাই করেছি মাত্র। আসলে পাকিস্তানিরা এত ঝুঁকিহীন ব্যাটিং করেছে যে, সুযোগ এসেছিল কম। যদি ওরা একটু তাড়াহুড়া করে রান তোলার চেষ্টা করত তাহলে হয়তো সুযোগ আসত বেশি।'
কিন্তু তিন দিন চলে যাওয়ার পর এখনও কি সম্ভব ঢাকা টেস্টে হারজিতের একটি ফল দেখার? অনেকগুলো যদি দিয়ে এ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন দলের মুখপাত্র হয়ে আসা নাজমুল। 'আবহাওয়ার যে অবস্থা, তাতে ওদের যদি কাল আমরা অল্প রানে আটকাতে পারি। যদি দ্বিতীয় ইনিংসে আমরা ভালো ব্যাটিং করি। তাহলে ভালো একটা রেজাল্ট পাওয়া সম্ভব।'

No comments

Powered by Blogger.