ভূমিদস্যুতা ঠেকাতে অবিলম্বে ড্যাপ বাস্তবায়নের বিকল্প নেই

ঢাকা ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যান: বাস্তবতা ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেছেন, ভূমিদস্যুতা ঠেকাতে অবিলম্বে ড্যাপ (বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা) বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প নেই। ড্যাপে কোনো ত্রুটি থাকলেও কর্মপরিকল্পনা তৈরির মাধ্যমে তা সংশোধন করা যাবে। গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে যৌথভাবে এ সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্লানার্স (বিআইপি), পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) ও ওয়ার্ক ফর বেটার


বাংলাদেশ ট্রাস্ট। সভায় ড্যাপের একটি পর্যালোচনামূলক প্রবন্ধে রুয়ান্ডায় কর্মরত পরিবহন বিশেষজ্ঞ মাহবুবুল বারী বলেন, ড্যাপে গুলশান, বনানী ও বারিধারায় জনঘনত্ব ধরা হয়েছে প্রতি একরে ২৩৫ জন। ওই সব এলাকায় আরও বেশি মানুষ বসবাসের সুযোগ রাখতে হবে। না হলে অধিক লোকসংখ্যার কারণে অন্যান্য এলাকা বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়বে।
ঢাকার বেশির ভাগ এলাকায় ধনী-গরিব মিশ্র এলাকা গড়ে তোলা দরকার বলে অভিমত ব্যক্ত করে বারী বলেন, ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে হেঁটে, সাইকেলে, রিকশায় ও বাসে চলাচলের সুযোগ বাড়াতে হবে।
ড্যাপের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া অনেক দূর এগিয়েছে উল্লেখ করে রাজউকের প্রধান পরিকল্পনাবিদ জহুরুল হক বলেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাকে ড্যাপের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রকল্প গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। রাজউকের জনবল বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। পরিকল্পনায় দরিদ্র মানুষকে অবহেলার অভিযোগ ঠিক নয়।
সভার সভাপতি পবা চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, ‘ড্যাপে অনেক ভুলত্রুটি থাকা সত্ত্বেও আমরা অবিলম্বে এটি বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছি। দ্রুত ড্যাপ বাস্তবায়ন না হলে ভূমিদস্যুরা সব দখল করে নেবে। কর্মপরিকল্পনা তৈরির মাধ্যমে ড্যাপের ত্রুটি সংশোধন করার সুযোগ রয়েছে।’
জাতীয় পরিকল্পনা কথা উল্লেখ করে বিআইপির সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আবুল কালাম বলেন, কোন এলাকায় কী করা যাবে তা উল্লেখ থাকার কথা ‘ন্যাশনাল ফিজিক্যাল প্ল্যান’-এ। আমাদের দেশে সেই পরিকল্পনা নেই। ফলে সব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সমস্যা দেখা দেয়।
ঢাকার বেশকিছু এলাকা বিভিন্ন বাহিনীর দখলে রেখে কীভাবে ড্যাপ বাস্তবায়ন সম্ভব—এ প্রশ্ন রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, নগর পরিকল্পনাবিদদের সাহস নিয়ে পরিকল্পনা করতে হবে। রাজউককে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান বলে অভিহিত করে তিনি বলেন, এই কারণে অনেক ক্ষেত্রে তারা সাহসী ভূমিকা নিতে পারে না।
ওয়ার্ক ফর বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ড থেকে সরে এসে রেগুলেটরি কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব পালন করতে হবে রাজউককে।
সভায় আরও বক্তব্য দেন ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের মোস্তাফিজুর রহমান, পরিবেশ আন্দোলনের হাফিজুর রহমান, নিরাপদ নৌপথ বাস্তবায়ন আন্দোলনের আমিনুর রসুল, ডেইলি স্টার-এর তওফিক আলী, শিক্ষাবিদ কামাল আতাউর রহমান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রুহুল আমীন প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.