আজ শুরু হচ্ছে এফবিসিসিআই আয়োজিত এসএমই মেলা-এসএমই খাতে ঋণ বেড়েছে ২৯% by আবুল হাসনাত

দেশে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ বেড়েছে। গত এক বছরে এসএমই খাতে ঋণপ্রবাহ বেড়েছে ২৯ শতাংশের বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এসএমই খাতের ঋণ বিতরণের যখন এই অবস্থা, তখন রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে এসএমই মেলা। পাঁচ দিনের এ মেলার আয়োজন করছে


বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই)। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে এ মেলার উদ্বোধন করবেন বলে জানা গেছে। মেলার এবারের প্রতিপাদ্য, ‘একই সঙ্গে এসএমই এবং জাতির অগ্রগতি।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর শেষে যেখানে বিতরণ করা এসএমই ঋণের স্থিতি ছিল ৬০ হাজার ৭৩৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকা, সেখানে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে তা বেড়ে হয়েছে ৭৮ হাজার ৩৭৯ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।
অর্থাৎ এ সময়কালে এসএমই ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ১৭ হাজার ৬৪৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা বা ২৯ শতাংশ।
সেপ্টেম্বর শেষে এসএমই ঋণের মোট স্থিতি ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিতরণ করা মোট ঋণের স্থিতির ২১ দশমিক ২১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, রাষ্ট্রীয় ব্যাংক, বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক, বিদেশি ব্যাংক, বিশেষায়িত ব্যাংক এবং অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে এসএমই ঋণ বিতরণের পরিমাণ এ সময়কালে বেড়েছে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর শেষে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোর এসএমই ঋণের স্থিতি ছিল ২০ হাজার ১৫৬ কোটি চার লাখ টাকা। তবে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে তা বেড়ে হয়েছে ২২ হাজার ২৯০ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এটি ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা মোট ঋণের ২৮ দশমিক ২১ শতাংশ।
এসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে আছে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর শেষে এসব ব্যাংকের এসএমই ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছিল ৩২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। তবে এ বছরের সেপ্টেম্বর শেষে তা বেড়ে হয়েছে ৪৬ হাজার ১২১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।
অর্থাৎ এই এক বছরের ব্যবধানে বেসরকারি ব্যাংকগুলো থেকে ১৩ হাজার ৬৪৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকার এসএমই ঋণ বেড়েছে। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪২ শতাংশ।
তবে বিদেশি ব্যাংকগুলোর এসএমই ঋণ দেওয়ার হার খুব কম। ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর শেষে বিদেশি ব্যাংকগুলোর এ ঋণের স্থিতি ছিল মাত্র এক হাজার ৯৫৮ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, যা চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৯৯৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর শেষে বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর এসএমই ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৮৭৮ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। আর এ বছরের সেপ্টেম্বর শেষে তা দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ১৭ কোটি ২৮ লাখ টাকায়।
এ সময় অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এসএমই খাতে ঋণ দেওয়ার হার আশাব্যঞ্জক। ২০১০ সালের সেপ্টেম্বর শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর এসএমই খাতে বিতরণ করা ঋণের স্থিতি ছিল দুই হাজার ২৬২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। আর এ বছরের সেপ্টেম্বর শেষে তা বেড়ে হয়েছে দুই হাজার ৯৫৪ কোটি নয় লাখ টাকা।
অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় এসএমই ঋণের স্থিতি ৬৯২ কোটি ১৫ লাখ টাকা বা ৩০ দশমিক ৫৯ শতাংশ বেড়েছে।
সাধারণত নির্দিষ্ট সময় শেষে বিতরণ করা ঋণ ও তার বিপরীতে আদায় করা বকেয়ার পরিমাণ সমন্বয় করে স্থিতি হিসাব করা হয়।

No comments

Powered by Blogger.