ওয়ালস্ট্রিট আন্দোলনে যোগ দিচ্ছেন ওয়ালেসা উচ্ছেদ ঠেকাতে বিক্ষোভকারীরা অঙ্গীকারবদ্ধ

য়ালস্ট্রিটে অবস্থানকারী বিক্ষোভকারীরা নতুন আন্দোলনের পরিকল্পনা করছেন। ম্যানহাটানের জুকোট্টি পার্কে অবস্থানকারী আন্দোলনকারীদের জায়গাটি খালি করতে নোটিশ দেয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তারা এই পরিকল্পনা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। ম্যানহাটানের জুকোট্টি পার্কের মালিকানা প্রতিষ্ঠান ব্রুকফিল্ড প্রোপার্টিজ। প্রতিষ্ঠানটি বিক্ষোভকারীদের জায়গাটি খালি করে দেয়ার জন্য নোটিশ দেয়। এজন্য তারা প্রয়োজনে আইন প্রয়োগ করবে বলেও ঘোষণা দিয়েছে। ওই নোটিশে পার্কের বেঞ্চে শোয়া এবং মাটিতে স্লিপিং ব্যাগ বিছানোর ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে প্রতিষ্ঠানটি। প্রায় চার সপ্তাহ ধরে শতাধিক আন্দোলনকারী পার্কটিতে অবস্থান করছেন।


বিক্ষোভ শুরুর আগে থেকেই পার্কটিতে এসব নিয়ম-নীতি থাকলেও বিক্ষোভ শুরুর সময় থেকে তা প্রয়োগ করা হয়নি। পুলিশের প্রহরায় হ্যান্ডবিলের মাধ্যমে ওই নোটিশের বার্তা বিক্ষোভকারীদের হাতে তুলে দেয়া হয় বলে বিবিসি জানায়।
এদিকে পার্কটি দখলে রাখতে আন্দোলনকারীরা অঙ্গীকারবদ্ধ বলে ঘোষণা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিক্ষোভের সংগঠকরা একটি ই-মেইল বার্তায় সমর্থকদের উচ্ছেদ ঠেকাতে সবাইকে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান। অন্যদিকে অকুপাই ওয়ালস্ট্রিট আন্দোলনে যোগ দিতে যাচ্ছেন পোল্যান্ডের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও শ্রমিক নেতা লেস ওয়ালেসা। এ বিষয়ে তিনি বলেছেন, ‘বিষয়টি আমি বিবেচনা করছি ও সব ধরনের সম্ভাব্যতা যাচাই করছি এবং আমার মনে হয় আমি যুক্তরাষ্ট্রে যাব।’ বিক্ষোভে যোগ দেয়ার জন্য তিনি ওয়ালস্ট্রিট বিক্ষোভকারীদের কাছ থেকে একটি আমন্ত্রণপত্র পেয়েছেন। ওয়ালেসা জানিয়েছেন, তিনি আগামী মাসে নিউইয়র্ক যেতে পারেন এবং একজন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী হিসেবে তিনি এ আন্দোলনের প্রতি সমর্থন দেবেন। ওয়ালেসা ১৯৮৩ সালে কমিউনিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে শ্রমিক নেতা হিসেবে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে একমত যে, এখন আর পুঁজিবাদী ব্যবস্থা কাজ করছে না।’ বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, দেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক পদ্ধতিতে ধনীরা আরও সম্পদের মালিক হচ্ছেন আর সেখানে সাধারণ আমেরিকান নাগরিকরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন, বেকারত্বের হার দিন দিন বাড়ছে। কর্মসংস্থানের কোনো ব্যবস্থা হচ্ছে না। এক্ষেত্রে ওয়াশিংটন তেমন কোনো সহায়তা দিতে পারছে না। এসবের পরিবর্তনের দাবিতে ওয়ালস্ট্রিট আন্দোলন শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা। তারা দেশের অধিকাংশ মানুষের স্বার্থরক্ষার প্রয়োজনে ধনীদের ওপর আরও কর আরোপের দাবি জানিয়েছেন। তাদের অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক কেন্দ্র ওয়ালস্ট্রিটের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো শুধু ধনীদের স্বার্থরক্ষা করছে, যাদের সংখ্যা দেশের মোট জনসংখ্যার মাত্র এক শতাংশ। শিক্ষার্থী ও সদ্য শিক্ষাজীবন শেষ করেছে—এমন বেকার যুবকরা ১৭ সেপ্টেম্বর ‘অকুপাই ওয়ালস্ট্রিট’ নামে এ আন্দোলনের সূচনা করে। তখন থেকেই লোয়ার ম্যানহাটানের জুকোট্টি পার্কে তাঁবু টাঙিয়ে অবস্থান করছেন তারা। বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ থেকে ধারণা করা হচ্ছে, আমেরিকার শীর্ষ ১০ ধনী ব্যক্তির অন্যতম জর্জ সরোস এই বিক্ষোভে রসদ জোগাচ্ছেন।

No comments

Powered by Blogger.