শামীম ওসমানের পক্ষে তিন নেতার সমর্থন তাঁদের ব্যক্তিগত

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদপ্রার্থী শামীম ওসমানের পক্ষে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের তিন সাংগঠনিক সম্পাদকের সমর্থন দেওয়ার বিষয়টি দলীয় সিদ্ধান্ত নয়। এটা স্থানীয় সরকার নির্বাচন। এখানে দলীয়ভাবে হস্তক্ষেপেরও সুযোগ নেই। ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণে তিন নেতা নারায়ণগঞ্জ গেছেন বলে দাবি করেছে আওয়ামী লীগ।গতকাল শুক্রবার ক্ষমতাসীন দলটির সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ। দলের সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।


আগের দিন বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের তিন সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন মেয়র পদপ্রার্থী শামীম ওসমানের পক্ষে দলীয় সমর্থনের কথা জানান। তাঁরা শামীম ওসমানের পক্ষে প্রচারণায়ও অংশ নেন।
তবে এই তিন সাংগঠনিক সম্পাদকের মধ্যে একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, তাঁরা শামীম ওসমানের প্রতি ব্যক্তিগত সমর্থন জানাতে নারায়ণগঞ্জ গিয়েছিলেন। এ ব্যাপারে আজ (শনিবার) তাঁরা একটি বিবৃতি দেবেন। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, 'রাষ্ট্র পরিচালনাকারী দল হিসেবে আওয়ামী লীগ নির্বাচন কমিশনের আইন ভঙ্গ করতে পারে না। তাই সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে কাউকে সমর্থন দেবে না।'
সংবাদ সম্মেলনে হানিফ বলেন, 'ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণে আওয়ামী লীগের এই তিন সাংগঠনিক সম্পাদক এ ঘোষণা দিয়েছেন। তবে কার নির্দেশে তাঁরা নারায়ণগঞ্জ গেছেন এবং সমর্থন দিয়েছেন তা আমার জানা নেই। দলের মুখপাত্র হিসেবে এটা আমার বলা সমীচীন নয়।'
হানিফ বলেন, 'এটা স্থানীয় সরকার নির্বাচন। এখানে দলীয়ভাবে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নেই। নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে দলের দুজন মেয়র পদপ্রার্থী শামীম-আইভী রয়েছেন। দলীয়ভাবে তাঁদের সমঝোতার কথা বলা হয়েছে। তাঁরা এক হতে পারেননি। সে ক্ষেত্রে কী করণীয়, সে ব্যাপারে দলীয়ভাবে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।'
আওয়ামী লীগের মুখপাত্র বলেন, বর্তমানে নির্বাচন কমিশন স্বাধীন, সার্বভৌম। কমিশন যাতে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে সরকার ও জনগণ তা চায়। সে কারণে নির্বাচন কমিশনের আচরণবিধি মেনে চলা উচিত। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের কিছু বিধিবিধান রয়েছে। বিধিবিধানপরিপন্থী কোনো কিছু সমর্থন করা সমীচীন হবে না। এখানে দলীয়ভাবে হস্তক্ষেপ করার কোনো সুযোগ নেই।
গতকাল সকালে এক অনুষ্ঠানে সরকারি দলটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত নারায়ণগঞ্জ নির্বাচন নিয়ে উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেন। বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে হানিফ বলেন, কোন কারণে উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছেন তা তাঁর জানা নেই। তবে কোনো তথ্য থাকলে তাঁকেই জিজ্ঞেস করুন।
গয়েশ্বর হিন্দু রাজাকার : শেখ হাসিনার ধর্ম পালন হয় না_বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের এ বক্তব্যের জবাবে হানিফ বলেন, 'গয়েশ্বর বিএনপিতে হিন্দু রাজাকার বলে বহুল পরিচিত। বিরোধী দলের ওই নেতার মনে রাখা উচিত, তাঁকে দিয়ে কথা বলানো সাম্প্রদায়িকতাকে উসকে দেওয়া।' 'পথহারাদের' দিয়ে বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দেওয়ার উদ্দেশ্য কী খালেদা জিয়ার কাছে জানতে চেয়ে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'গয়েশ্বর কি মুসলমানদের সনদ দিয়ে বেড়াচ্ছেন। যে গয়েশ্বর বিসমিল্লাহর অর্থ জানেন না, এসব 'বকধার্মিক'দের দিয়ে কেন কথা বলাচ্ছেন?'
খালেদা জিয়া ধর্ম ও সুন্নাহ সম্পর্কে কিছু জানেন না_মন্তব্য করে হানিফ বিএনপি চেয়ারপারসনকে সাম্প্রদায়িকতা উসকে দেওয়ার ষড়যন্ত্র থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।
রোডমার্চে কিছু মানুষের উপস্থিতি দেখে বিএনপি ও দলটির নেত্রী খালেদা বেসামাল হয়ে গেছেন মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের মুখপাত্র বলেন, শেখ হাসিনার নীলফামারীর জনসভার ভিডিও ফুটেজ দেখুন। এত বড় জনসমুদ্র আর কখনো কেউ দেখেনি। এর মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে, গ্রাম বাংলার মানুষ এখনো শেখ হাসিনার প্রতি আস্থাশীল।

No comments

Powered by Blogger.