ম্যানইউ-লিভারপুলের দিনে মেসি-রোনালদোরও লড়াই

ময়ে কত কিছু পাল্টে যায়! ধারালো তরবারিতেও পড়ে মরচে। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড-লিভারপুল দ্বৈরথের হয়েছে সেই অবস্থা। একদা যে লড়াই ঘিরে উত্তেজনা-উন্মাদনা ছুঁয়ে যেত আকাশ, সেটি এখন কেমন যেন ম্রিয়মাণ!
তবে স্যার অ্যালেঙ্ ফার্গুসনকে এ নিয়ে কেউ খুব একটা ঘাঁটায় না। ঘাঁটালেই যে রগচটা স্কটের ঝাঁঝালো বাক্যবাণের মুখোমুখি পড়তে হবে! দুই যুগ আগে দায়িত্ব নেওয়ার সময় থেকেই বলে আসছেন, এটিই লিগের সবচেয়ে বড় লড়াই। মাঝে আর্সেনাল, সাম্প্রতিক সময়ে চেলসির সঙ্গেও শিরোপা-যুদ্ধ হয়েছে ফার্গির দলের। তার পরও তাঁর কাছে দ্বৈরথ বলতে এই ম্যানইউ-লিভারপুল।


এই দুই দলের আজ আরেকটি মহারণ সামনে রেখে আরেকবার তা মনে করিয়ে দিয়েছেন ম্যানইউ কোচ।'ঐতিহাসিকভাবেই এই ক্লাব দুটি ইংল্যান্ডের সবচেয়ে সফল। আর শুধু ক্লাব না, ম্যানচেস্টার ও লিভারপুল শহর ঘিরেও ছড়িয়ে আছে ইতিহাসের অনেক উপাদান। আমি এখানে আসার পর থেকেই তো তা দেখছি। হ্যাঁ, দুই-তিন বছর পর হয়তো পরিস্থিতি পাল্টে যেতে পারে। ম্যান সিটি যেভাবে এগুচ্ছে তাতে ইউনাইটেড-সিটি দ্বৈরথও হয়তো হয়ে উঠবে দারুণ আকর্ষণীয়। তবে আমার কাছে সব সময়ই ইংলিশ ফুটবলের সবচেয়ে বড় ম্যাচ ম্যানইউ-লিভারপুলের মুখোমুখি লড়াই'_বলেছেন ফার্গুসন। তবে তাঁর সঙ্গে একমত নন লিভারপুলের কোচ কেনি ডালগি্লস, 'অনেকের কাছেই এটি মৌসুমের সবচেয়ে বড় ম্যাচ। আমার কাছে এটি অন্য যেকোনো ম্যাচের মতোই। ম্যানইউর বিপক্ষে খেলা বলে বাড়তি কোনো প্রস্তুতি নেই। অন্যান্য ম্যাচেও যেমন তিন পয়েন্টের জন্য খেলি, এখানেও তা-ই খেলব।'
১৯৮৬ সালে ম্যানইউর দায়িত্ব নেওয়ার কিছুদিন পরই এক অসম্ভব আশাবাদের গল্প সমর্থকদের শুনিয়েছিলেন ফার্গুসন। লিভারপুলকে টপকে সবচেয়ে সফল ইংলিশ ক্লাব হওয়ার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে গত বছর। 'অল রেড'দের ১৮টি ইংলিশ লিগ শিরোপা ছাপিয়ে 'রেড ডেভিল'দের ট্রফিকেসে এখন ১৯ ট্রফি। এতে যদি মানসিকভাবে এগিয়ে থাকে ম্যানইউ, তাহলে লিভারপুলের প্রেরণার উপলক্ষও আছে অন্যত্র। অ্যানফিল্ডে সর্বশেষ তিন ম্যাচেই তারা হারিয়েছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের। ডালগি্লস অবশ্য সেটিকেও খুব একটা পাত্তা দিতে রাজি নন, 'গত মৌসুমে আমরা ওদের বিপক্ষে খুব ভালো খেলেছি বলেই জিতেছি। তবে এই ম্যাচটি সম্পূর্ণ নতুন। সেবার কী করেছি, তার কোনো মূল্যই কিন্তু এখন আর নেই।'
এই ম্যাচ দিয়ে দুই দলের নিয়মিত দুই অধিনায়ক ফিরতে পারেন একাদশে। ম্যানইউর নেমানিয়া ভিদিচ প্রথম ম্যাচের পর থেকেই ইনজুরির শিকার। একই কারণে এখনো প্রিমিয়ারশিপের কোনো ম্যাচেই প্রথম একাদশে থাকা হয়নি স্টিভেন জেরার্ডের। ভিদিচকে ছাড়াও লিগের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষেই আছে ম্যানইউ। লিভারপুল খানিকটা পিছিয়ে থাকলেও আজকের জয় তাদের নিয়ে আসবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের তিন পয়েন্টের মধ্যে। ভয়ঙ্কর 'রেডস'দের নিয়ে তাই যথেষ্ট সমীহ আছে ফার্গুসনের। আর সেটি শুধু এই ম্যাচ না, পুরো মৌসুম বিবেচনাতেই। নইলে কী আর 'চার থেকে পাঁচটি দলের সামর্থ্য আছে শিরোপা জয়ের। এর মধ্যে লিভারপুলকে রাখতেই হবে'_এমন কথা বলতেন!
আন্তর্জাতিক ফুটবলের জন্য বিরতির পর এই সপ্তাহে আবার মাঠে গড়াচ্ছে ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবল। তাতে হাইলাইট ওই ম্যানইউ-লিভারপুল ম্যাচই। স্প্যানিশ লিগে দুই জায়ান্ট বার্সেলোনা, রিয়াল মাদ্রিদও মাঠে নেমে পড়ছে আজ। লিওনেল মেসির বার্সার প্রতিপক্ষ রেসিং সানতানদের। আর ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর রিয়াল খেলবে বেতিসের বিপক্ষে। গোল করে, করিয়ে একজন আরেকজনকে ছাড়িয়ে যাবার সুযোগ আজ মেসি-রোনালদো দুজনের সামনেই।
প্রত্যাশিতভাবে লা লিগার শীর্ষে এখন বার্সেলোনা। তবে ইনজুরি তাদের ভোগাচ্ছে বেশ। সেস্ক ফ্যাব্রেগাস, অ্যালেঙ্জি সানচেজ, ইব্রাহিম আফেলেরা এখনো হিসাবের বাইরে। তবে সুখবর হলো, আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা আছেন ফেরার কক্ষপথে। এত খেলোয়াড় বাইরে রেখে খেলা যে কত ক্লান্তিকর সেটিই বলছিলেন পেদ্রো, 'এত ম্যাচ, এত ভ্রমণ খুব একটা সহজ না। তবে আমরা ভালো ফর্মে আছি। রেসিংয়ের বিপক্ষে ম্যাচে শতভাগ প্রস্তুত হয়েই নামব।' এরই মধ্যে রিয়াল মাদ্রিদের পয়েন্ট কেড়ে নিয়েছে রেসিং। তবে বার্সেলোনার বিপক্ষে কাজটি যে সহজ হবে না, কোচ হেক্টর কুপারের কণ্ঠে তারই প্রতিফলন, 'আমি এই পৃথিবীতে আসার পর বার্সেলোনার মতো কিছু কখনো দেখিনি। তারা বিস্ময়কর। কোনো সন্দেহ ছাড়াই অনেক ব্যবধানে এগিয়ে থাকা বিশ্বের সেরা দল তাঁরা।' ওয়েবসাইট

No comments

Powered by Blogger.