বিচিত্র মাদকের বিষাক্ত ছোবল by এস এম আজাদ

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মধ্যে পলিথিনের প্যাকেট ফুলিয়ে তাতে মুখ ঢুকিয়ে বসে ছিল দুই পথশিশু। দূর থেকে এ প্রতিবেদককে দেখেই উঠে দাঁড়িয়ে পালানোর চেষ্টা করে দুজন। পরে তাদের একজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তার নাম ইলিয়াছ। অন্যজন কালু। তারা উদ্যানেই থাকে।ইলিয়াস জানায়, পলিথিনে করে তারা ডাডি (ডান্ডি) খাচ্ছিল। সে বলে, 'স্যার, এইডা জোতার আডা (জুতার আঠা)। আনন্দবাজার থেইকা ১০ ট্যাকা দিয়া কিনছি।' শিশুটি জানায়, নেশার উপকরণ হিসেবে তারা সিদ্দিকবাজার, আনন্দবাজার, ফুলবাড়িয়া এলাকার জুতার কারখানা থেকে সলিউশন সংগ্রহ করেছে।


মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, অপ্রচলিত মাদক হিসেবে ব্যবহৃত ওই উপাদানের রাসায়নিক নাম 'টলুইন'। এর মাধ্যমে তৈরি হওয়া আঠা বা সলিউশন ব্যবহার করা হয় জুতার সোল তৈরিতে।
এই টলুইনই এখন মাদকদ্রব্য হিসেবে ব্যবহার করছে ছিন্নমূল জনগোষ্ঠীর মাদকসেবীরা। দেশে কয়েক বছর ধরে এই মাদক 'ডান্ডি' নামে পরিচিতি পেয়েছে। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, কয়েক বছর আগে টলুইনকে মাদকের আওতায় আনা হয়েছে। কিন্তু রাসায়নিকটির বৈধ ব্যবহারের ক্ষেত্রে অস্বচ্ছতা এখনো দূর করা যাচ্ছে না। আমদানি ও বিক্রির ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত তদারকির অভাবে মাদকসেবীদের হাতে চলে যাচ্ছে টলুইন। এ ধরনের ২২টি রাসায়নিক উপাদান দেশের মাদকসেবীদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এগুলোর মধ্যে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে বহুল ব্যবহৃত আটটি রাসায়নিক উপাদানও আছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের দুর্বলতার পাশাপাশি প্রচলিত আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের শৈথিল্যের কারণে নেশার জগতের বিস্তৃতি ঘটছে বাংলাদেশে।
মাদকসেবী, চিকিৎসক ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, নতুন প্রজন্মের মাদকসেবীরা প্রচলিত মাদকের বাইরে নতুন নেশাদ্রব্যের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। প্রচলিত আইনে মাদক হিসেবে চিহ্নিত নয়, এমন নেশাজাতীয় দ্রব্যই এখন অনেকের পছন্দ। আইনি জটিলতার কারণে এসব দ্রব্যের অবাধ বিপণন রোধ করা যাচ্ছে না। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর মাদকের ধরনের পরিধি এবং ব্যবহারকারীর দণ্ড বাড়ানোর জন্য চার বছর আগে আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিলেও তা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। খসড়া সংশোধনটি বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার হিসাব-নিকাশের জালে বন্দি হয়ে আছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সংশোধনীটি কার্যকর করা গেলে বিভিন্ন ধারার আওতায় প্রায় আট শ মাদকের উপাদান বিনা অনুমোদনে বিক্রি ও ব্যবহার নিষিদ্ধ হয়ে যাবে। দণ্ডবিধির কিছু দুর্বল দিকও শক্তিশালী হবে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) খন্দকার মোহাম্মাদ আলী কালের কণ্ঠকে জানান, 'মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-১৯৯০'-এর প্রথম তফসিল অনুযায়ী অ্যামফেটামিন বা ইয়াবা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। খসড়া সংশোধনীতে আরো কিছু নতুন মাদকদ্রব্যের অবাধ ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে দেশে ইয়াবার মতো ক্যাটামিন নামে এক ধরনের মাদকের ব্যবহার শুরু হয়েছে। এই ক্যাটামিনকেও নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করেছে অধিদপ্তর।
চম্পা-বাবার বিকল্প ক্যাটামিন ও উত্তেজক ওষুধ : মাদকসেবীদের কাছে নেশাদ্রব্য হিসেবে ব্যবহৃত বেশি দামি ইয়াবা 'বাবা' এবং কম দামিগুলো 'চম্পা' নামে পরিচিত। সম্প্রতি ইয়াবার বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর ব্যাপক অভিযানের কারণে এর ব্যবসায় বৈচিত্র্য এসেছে। বাজারে এসেছে ইয়াবার বিকল্পও। এমনই এক ওষুধের নাম 'ক্যাটামিন'। জানা গেছে, সাদা চিনির মতো দেখতে দানাদার ক্যাটামিন হিংস্র বন্য প্রাণীকে অচেতন করার কাজে ব্যবহার করা হলেও সম্প্রতি পশ্চিমা দেশে এটি নেশাদ্রব্য হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এই মাদক ঢুকেছে বাংলাদেশেও। মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনের আওতায় না পড়ায় ক্যাটামিনের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে পারছে না প্রশাসন। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গত বছর ক্যাটামিনের ২০ কেজির চালান ধরা পড়ে। এরপরই দ্রব্যটি নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা শুরু হয়।
সূত্র জানায়, কিছু উত্তেজক ওষুধও মাদক হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। পরিচয় গোপন রাখার শর্তে মিটফোর্ড হাসপাতাল সংলগ্ন ওষুধের দোকানের এক বিক্রেতা জানান, করিডল ও টাইটানিক নামে দুটি উত্তেজক ওষুধ এখন ইয়াবার বিকল্প হিসেবে বেশি চলছে। এর বাইরে আরো কিছু ওষুধ কিনছে মাদকাসক্তরা। রাজধানীর মাদকসেবীদের কাছ থেকে জানা গেছে, গরুর চিকিৎসায় ব্যবহৃত 'লোপেজেসিক' মাদকাসক্তদের কাছে 'মাদ্রাজি ইনজেকশন' নামে পরিচিত। ইনোকটিন, সিডাকসিনসহ বিভিন্ন ঘুমের ট্যাবলেট, জামবাকসহ ব্যথানাশক ওষুধ বা টিকটিকির লেজ পুড়িয়ে কেউ কেউ নেশা করে থাকে।
পথশিশুদের মধ্যে 'ডান্ডি'র ব্যবহার বাড়ছে। সম্প্রতি কিছু অভিজাত রেস্টুরেন্টে শিশা নামের নতুন মাদকের আবির্ভাব ঘটেছে। এতে বুঁদ হচ্ছে ধনীর দুলালরা। চিকিৎসকরা জানান, হেরোইন, গাঁজা, ফেনসিডিল, ইয়াবা ও বিভিন্ন ঘুমের ওষুধ দিয়ে তৈরি মাদকদ্রব্যের ককটেলের প্রতিও তরুণদের আসক্তি বাড়ছে। জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের ভূতপূর্ব পরিচালক ও কেন্দ্রীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের প্রধান পরামর্শক ডা. মো. নাজমুল আহসান কালের কণ্ঠকে বলেন, 'বর্তমানে নিত্যনতুন মাদকে আসক্ত রোগীর সংখ্যাই বেশি পাওয়া যাচ্ছে। তাদের অনেকেই ককটেল বা মিশ্র উপাদানের মাদক গ্রহণ করে।'
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ক্যাটামিনকে মাদকের আওতায় আনার জন্য অধিদপ্তর চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠায়। এর আগে গত বছর জাতিসংঘ নতুন এ মাদক সম্পর্কে বাংলাদেশকে সতর্ক করে চিঠি দেয়। জাতিসংঘের ওই চিঠি পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দেশে ক্যাটামিনের অপব্যবহার সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। কিন্তু দেশে ক্যাটামিনের ভয়াবহ বিস্তার ঘটার প্রমাণ পাওয়া গেলেও আইনের দুর্বলতার কারণে অভিযান চালাতে পারছে না প্রশাসন। জানা গেছে, গত বছর ভারতে ক্যাটামিন নিষিদ্ধ করা হয়। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, খসড়া সংশোধনীতে জাতিসংঘের তিনটি কনভেনশনের নির্দেশনা অনুযায়ী যেগুলো নেশার উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে, তার সবগুলো মাদকের সংজ্ঞায় আনা হয়েছে।
সূত্র জানায়, এনার্জি ড্রিকসের মধ্যেও মেশানো হচ্ছে মাদকের উপাদান। হর্স ফিলিংস, পাওয়ার ফিলিংসসহ বিভিন্ন নামের এনার্জি ড্রিকসে 'অপিয়েট' পাওয়া গেছে। ফেনসিডিল তৈরিতে এ উপাদান ব্যবহার করা হয়।
সুযোগ আছে অপপ্রয়োগের : সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ১৯৯০ সালে তৈরি করা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মাদকের তালিকা ছোট রাখার প্রবণতা ছিল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের। তাই অনেক উপাদানই আইনের আওতার বাইরে থেকে যায়। পরবর্তী সময়ে ২০০০ সাল পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে ২২টি রাসায়নিক উপাদানকে (কেমিক্যাল) মাদকের আওতায় আনা হয়। এর মধ্যে আটটি রাসায়নিক দেশের শিল্প-কারখানায় বহুল ব্যবহৃত হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্যারাসিটামল গ্রুপের ওষুধ তৈরিতে 'এসিটিক অ্যানহাইড্রাইড' নামের রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়। চামড়া শিল্পে রঙের কাজেও উপাদানটি ব্যবহার করা হয়। 'সিউডো এফিড্রিন' কাশির ওষুধ, ইয়াবা_এমফিটামিনের উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। 'এসিটোন' ব্যবহার হয় প্রিন্টিং ও কালি তৈরিতে। 'হাইড্রোক্লোরিক এসিড' ও 'মিথাইল-ইথাইল-কিটোন' একই ধরনের শিল্পে ব্যবহার করা হয়। 'পটাশিয়াম পারমাঙ্গানেট' বেশি ব্যবহার হয় কাগজ শিল্পে। 'সালফিউরিক এসিড' ব্যাটারিতে ব্যবহার করা হচ্ছে। জানা গেছে, এসব অতি প্রয়োজনীয় রাসায়নিক প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে মাদক হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।
মাদকের আওতাভুক্ত ২২টি রাসায়নিকের আমদানি ও বিপণনের জন্য রাজধানীর ৩০টি প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। অথচ এগুলোর দেদার বিক্রি থেমে নেই। নতুন আর কোনো প্রতিষ্ঠান লাইসেন্স না পাওয়ায় আমদানিকারকদের ক্ষুদ্র চক্রটি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার দেখিয়ে অবাধে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছে এসব উপাদান। এ ক্ষেত্রে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তদারকি কার্যক্রমে শৈথিল্য আছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে ঢাকা মেট্রো উপ-অঞ্চলের উপসহকারী পরিচালক মজিবুর রহমান পাটোয়ারী কালের কণ্ঠকে জানান, গত দুই-তিন বছরে নতুন লাইসেন্সের জন্য কেউ আবেদন করেনি। রাসায়নিকের অবৈধ বিক্রি ঠেকাতে নিয়মিত তদারক করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।
সংশোধনীর খসড়া ঘুরছে দ্বারে দ্বারে : ২০০৭ সালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনীর খসড়া তৈরি করে অধিদপ্তরের একটি কমিটি। এরপর তা পাঠানো হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। ওই মন্ত্রণালয় থেকে পরে সেটি স্বাস্থ্য, আইন, শিল্প, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ ১০ থেকে ১২টি সংস্থার কাছে পাঠানো হয়। কিন্তু গত চার বছরে তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। জানা গেছে, গত মাসেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সচিবের উপস্থিতিতে এক সভায় খসড়া সংশোধনীটি নিয়ে আলোচনা হয়। চলতি মাসের মাঝামাঝি আরেকটি সভা হওয়ার কথা রয়েছে।
মাত্র কিছুদিন আগে পর্যন্ত মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্বে ছিলেন আবদুস সোবাহান শিকদার। সম্প্রতি তিনি বদলি হয়ে সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে যোগ দিয়েছেন। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, 'ওই সংশোধনী নিয়ে আন্তমন্ত্রণালয় একটি সভা হয়েছে। আরো একটি হবে। খসড়ায় শাস্তির মেয়াদ বাড়ানো, মাদকের আওতা বাড়ানোসহ বেশ কিছু ভালো দিক রয়েছে। তবে এখনো বিভিন্ন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে লিখিত মতামত পাওয়া যায়নি। আন্তমন্ত্রণালয় সভায় সিদ্ধান্ত হলে খসড়াটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। সেখানে অনুমোদন পেলে পরবর্তী কয়েকটি ধাপ পার হওয়ার পর চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য খসড়াটি সংসদে উঠবে।'
সূত্র জানায়, খসড়ায় অর্ধশতাধিক সংশোধনী আছে। সেখানে মাদকের ধরন ও পরিমাণের ওপর আলাদাভাবে অপরাধীর সাজার ধরন উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়টি বর্তমান আইনে স্পষ্ট উল্লেখ নেই। সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, 'সলিউশন তৈরিতে টলুইন ব্যবহার হয়। কিন্তু টলুইনের সলিউশন দিয়ে তৈরি করা জুতার সোল মাদক নয়। এসব ব্যাখ্যা সংশোধনীতে পরিষ্কার করা হয়েছে। আমাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে শিল্পকারখানা ও চিকিৎসার প্রয়োজনে রাসায়নিকের ব্যবহারকারীরা যেন হয়রানির শিকার না হন।'
এর আগে তিন দফায় আইন সংশোধন করা হয়েছিল। আইন কার্যকর করতে চারটি বিধিমালাও প্রণয়ন করা হয়। সেগুলো হলো_মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা ১৯৯৯; মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বোর্ড তহবিল বিধিমালা ২০০১; অ্যালকোহল নিয়ন্ত্রণ (লাইসেন্স ফিস) বিধিমালা ২০০২ এবং বেসরকারি পর্যায়ে মাদকাসক্তি পরামর্শ কেন্দ্র, মাদকাসক্তি নিরাময় ও পুনর্বাসন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা বিধিমালা ২০০৫। কিন্তু বাজেটস্বল্পতা, লোকবল সংকটসহ নানা অজুহাত দেখিয়ে বিধিমালাগুলো কার্যকর করা হয়নি। ১৯৯০ সালের মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তির সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান করা হয় মৃত্যুদণ্ড। কিন্তু 'কারও দখল থেকে মাদকদ্রব্য জব্দ করলে এ শাস্তি দেওয়া হবে' উল্লেখ থাকায় আইনটি কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ হয়ে আছে। নতুন সংশোধনীতে এ বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা আছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনীর খসড়া অনুমোদন পেলে প্রচলিত ও অপ্রচলিত প্রায় আট শ মাদকদ্রব্য সুনির্দিষ্ট আইনের আওতায় আসবে। বর্তমান আইনে ক, খ ও গ শ্রেণীতে ২৩টি ক্রমে মাত্র অর্ধশত মাদকদ্রব্য বা উপাদানের উল্লেখ আছে। হেরোইন, গাঁজা, চোলাই মদ, দেশি মদ, বিদেশি মদ, বিয়ার, রেক্টিফায়েড স্পিরিট, কেডিন, ফেনসিডিল, তাড়ি, প্যাথেডিন, বুপ্রেনরফিন, টিডি জেসিক, ভাং, কোডিন ট্যাবলেট, ফার্মেন্টেড, ওয়াশ (জাওয়া), বনোজেসিক ইনজেকশন (বুপ্রেনরফিন), টেরাহাইড্রোবানাবিল, এঙ্এলমুগের, মরফিন, ইয়াবা, আইচপিল, ভায়াগ্রা, সানাগ্রা, টলুইন, পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট, মিথাইল, ইথানল, কিটোনসহ আরো কয়েকটি উপাদানের নাম আছে এ তালিকায়।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক আবু তালেব কালের কণ্ঠকে বলেন, 'খসড়া সংশোধনী বাস্তবায়ন হলে মাদক নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে প্রশাসন। সংশোধনীতে প্রচলিত আইনের দুর্বলতাও দূর করার চেষ্টা করা হয়েছে।'

No comments

Powered by Blogger.