কণ্ঠস্বর-কোথাও নিশ্চয়ই গুরুতর কিছু বিচ্যুতি ঘটছে by রাহাত খান

গোটা বাংলাদেশেই সংগঠন হিসেবে আওয়ামী সাংগঠনিক দুর্বলতা এবং অনৈক্য বিরাজমান। কোথাও কম, কোথাও বেশি। নতুন মন্ত্রিত্ব পাওয়া এবং শেখ হাসিনা ও আওয়ামী জোয়ারে পাস করা এমপিদের বেশিরভাগই তাদের এলাকায় যত না জনসংযোগে এবং সাংগঠনিক সমন্বয় সাধনে কাজ করেন,


তার চেয়ে বহুগুণে বেশি তারা ব্যস্ত তাদের প্রটোকল, পিএস-এপিএসের মাধ্যমে প্রকল্প ও নিয়োগ-বাণিজ্যে নিজেদের বিত্ত বৃদ্ধিতে। সংগঠনে নিজের নিজের লোক ঢোকানোর চেষ্টা পর্যন্তই দলের জন্য তাদের সাংগঠনিক তৎপরতা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট, একাডেমিক কাউন্সিল এবং ডিন নির্বাচনের ফলাফল দেখে একটা কথাই আমার মনে হলো। মনে হলো, একটা রাজনৈতিক দল যত শক্তিশালী হোক না কেন, সেই দলে সাংগঠনিক সমন্বয়হীনতা এবং ভেতরে নিজেদের ভেতর অনৈক্য ও সন্দেহ বিরাজ করলে কার্যক্ষেত্রে সেই দল দুর্বল ও গতিহীন হতে বাধ্য।
গত পৌর ও ইউপি নির্বাচনেও একই দশা প্রত্যক্ষ করেছি। দেশের সব রাজনৈতিক দলই রাজনৈতিক মনোনয়ন লাভের বাইরে ছিল। নির্বাচনগুলো ছিল নামে অরাজনৈতিক। তবে বাস্তবে সেগুলো শতকরা একশ' ভাগই রাজনৈতিক ছিল। যদিও বিধি মোতাবেক দলের মনোনয়ন লাভ, পোস্টারে দলের নাম ও নেতাদের ছবি ব্যবহার, দলের নামে প্রচার-প্রচারণা ইত্যাদি নিষিদ্ধ ছিল। কার্যত এসব বিধিবিধান তেমন মানা হয়নি, শিথিলভাবে হলেও প্রার্থিতার ক্ষেত্রে মনোনয়ন লাভ এবং প্রচার-প্রচারণায় দলের নাম আইন বাঁচিয়ে নানাভাবে ব্যবহার করা হয়েছে।
সাংগঠনিক দুর্বলতা, দলীয় অনৈক্য এবং সমন্বয়হীনতা কতখানি বিরাজ করছে আওয়ামী লীগে তা আমরা গত স্থানীয় নির্বাচনে মূর্ত হতে দেখেছি। একেক ইউনিয়নে বিএনপি-জামায়াতের বিপক্ষে আওয়ামী লীগের নামে দাঁড়িয়েছে গড়ে তিন থেকে পাঁচজন প্রার্থী। ইউপি ও পৌর নির্বাচনেও একই দৃশ্যের অবতারণা দেখতে হয়েছে। পৌর ও ইউনিয়ন পর্যায়ের বেশিরভাগ নেতা গায়ে ফিনফিনে সাদা পাঞ্জাবি ও মুজিব কোট ধারণ করে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী এবং এমপিদের পেছনে পেছনে ছোট-বড় তদবির নিয়ে ঢাকায় অবস্থান করেন, স্থানীয় নির্বাচনে নিজেদের দলের ভালো-মন্দের কোনো দায়িত্ব তাদের অধিকাংশই পালন করেননি নতুবা নিজেদের দলীয় নেতৃত্ব বজায় রাখতে পাল্টা প্রার্থী দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের তৃণমূল স্তরে দলীয় প্রেসিডেন্ট ও সেক্রেটারির নিজ নিজ যোগ্যতা নিয়ে দ্বন্দ্ব-আক্রোশ তো একটা ওপেন সিক্রেট। কেন্দ্রীয় নেতাদেরও সেটি জানার কথা।
বিএনপি-জামায়াত স্থানীয় নির্বাচনের এই সময়টায় রাজনৈতিকভাবে ছিল প্রায় মুমূর্ষু। সাধারণ নির্বাচনে মাত্র ৩০টি আসন পাওয়া এই দলের সর্বস্তরে ব্যাপ্ত ছিল একটা করুণ হতাশা। বহু রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক এ সময় ভাবতে শুরু করেছিলেন, দলের যা ছত্রভঙ্গ অবস্থা, হতাশা যেভাবে দলটাকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছে, তাতে এই দল বিএনপি শেষ পর্যন্ত না একটা শক্তিহীন এবং নামসর্বস্ব দলে পরিণত না হয়! অনেকের ধারণা ছিল, স্থানীয় নির্বাচনে বিএনপির ভরাডুবি ঘটবে।
কিন্তু গত পৌর ও অন্যান্য স্থানীয় নির্বাচনে ঘটেছে ঠিক তার উল্টো। কেন্দ্রীয় নেতাদের চেয়ে তৃণমূল পর্যায়ের বিএনপি নেতারা এ ক্ষেত্রে সঠিক ও বলিষ্ঠ ভূমিকা নেওয়ার কৃতিত্ব দাবি করতে পারেন। স্থানীয় নির্বাচনের বেশিরভাগ আসনে শুধু যে তারা বিএনপি একক প্রার্থী দেওয়ার এবং সেই প্রার্থীর পক্ষে বিএনপি-জামায়াত মতাবলম্বী সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন তাই নয়, প্রার্থীর প্রচারণা তহবিলে চাঁদা, অনুদান, অর্থ সাহায্য ইত্যাকার সহায়তাও দান করেছেন।
ফলাফল চমকে যাওয়ার মতো। নির্বাচনী ফলাফলে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রায় সমানে সমান জিতেছে। দেখা গেছে, তিন বা অধিক আওয়ামী লীগ প্রার্থী দাঁড়িয়ে সেখানে শতকরা ৭০ ভাগ বিএনপি প্রার্থী ১২ থেকে ৫০ ভোটের ব্যবধানে জিতেছে। অর্থাৎ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের (বেনামে অবশ্যই) একক প্রার্থী থাকলে স্থানীয় নির্বাচনের ফলাফল গত সাধারণ নির্বাচনের মতোই বিশাল বিজয়ের ফলাফল হতো।
স্থানীয় নির্বাচনের এই ফলাফলই বিএনপিকে প্রয়োজনীয় সাহস ও আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে বলে অনেকে মনে করেন। বিএনপির নেতা বিশেষত তাদের প্রধান নেতার চোখ-মুখের দিকে তাকালে মনে হতো বিশাল হতাশা ও নৈরাশ্যে ভুগছেন তারা। দলের অস্তিত্ব সংকট নিয়েও শঙ্কিত ছিলেন বিএনপি নেতাদের অনেকে।
বিএনপি গত দেড় বছরে শুধু যে আত্মবিশ্বাস ও সাহস পুনরুদ্ধার করতে সমর্থ হয়েছে তাই নয়, তারা দলকে কেন্দ্রীয় থেকে তৃণমূল পর্যন্ত নতুনভাবে সাজিয়েছে। দলের লড়াকু ভাবটা ফিরিয়ে এনেছে। বিএনপি এখন নিঃসন্দেহে একটি বলীয়ান ও উজ্জীবিত দল। একটা ঐক্যবদ্ধ দল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক সিনেট ও ডিন নির্বাচনে তাদের এই ঐক্য ও দলের প্রতি দায়বদ্ধতার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। এ বিষয়ে সন্দেহ করার কারণ নেই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে একদা বলা হতো প্রাচ্যের অক্সফোর্ড। কালক্রমে প্রাচীন গৌরব অনেকটা লুপ্ত হয়ে গেলেও ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার আগে পর্যন্ত প্রগতিশীল একটি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবেই পরিগণিত ছিল বিশ্ববিদ্যালয়টি। জামায়াত-বিএনপি ক্ষমতায় এসে অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা ফ্যাকাল্টি ও বিভাগে জামায়াত-বিএনপির অনুগত যোগ্য-অযোগ্য বহু লোককে লেকচারার, অ্যাসোসিয়েট ও প্রফেসর পদে চাকরি দিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত এসব লোকের বেশিরভাগেরই শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতা না থাকলেও উগ্র স্বাধীনতাবিরোধী মনোভাব তাদের পুরোমাত্রায় ছিল এবং এখনও আছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক সিনেট, একাডেমিক কাউন্সিল ও ডিন নির্বাচনে এই ফ্যাক্টরটির অবদান যথেষ্টই। তবে আমি মনে করি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল শিক্ষকদের অনৈক্য, তাদের মধ্যে সঠিক নেতৃত্বের অভাব এবং সমন্বয়হীনতাই নির্বাচনে নীল দলের ভরাডুবির প্রধান কারণ।
শুধু নেপথ্যে আওয়ামী সমর্থন পাওয়া নীল দলের অবস্থাই যে এ রকম নড়বড়ে তা মোটেও নয়। গোটা বাংলাদেশেই সংগঠন হিসেবে আওয়ামী সাংগঠনিক দুর্বলতা এবং অনৈক্য বিরাজমান। কোথাও কম, কোথাও বেশি। নতুন মন্ত্রিত্ব পাওয়া এবং শেখ হাসিনা ও আওয়ামী জোয়ারে পাস করা এমপিদের বেশিরভাগই তাদের এলাকায় যত না জনসংযোগে এবং সাংগঠনিক সমন্বয় সাধনে কাজ করেন, তার চেয়ে বহুগুণে বেশি তারা ব্যস্ত তাদের প্রটোকল, পিএস-এপিএসের মাধ্যমে প্রকল্প ও নিয়োগ-বাণিজ্যে নিজেদের বিত্ত বৃদ্ধিতে। সংগঠনে নিজের নিজের লোক ঢোকানোর চেষ্টা পর্যন্তই দলের জন্য তাদের সাংগঠনিক তৎপরতা।
দলের সাংগঠনিক কাজে প্রায় নিষ্ক্রিয় এবং নানাভাবে পয়সা কামানোর ধান্দায় রত, এসব মন্ত্রী ও এমপি দলের সম্পদ না হয়ে দায়ে পরিণত হয়েছে। পরবর্তী নির্বাচনে তাদের ওপর ভরসা করলে দল মারাত্মক ভুল করবে। সাংগঠনিক দুর্বলতা কাটাতে এবং স্বাধীনতাবিরোধী দলকে কোণঠাসা করতে দরকার অভিজ্ঞ ও কুশলী নেতার। তারাই প্রতিপক্ষের চাপাবাজির জবার দিতে পারতেন একদিকে, অন্যদিকে সংগঠনকে গুছিয়ে তোলা এবং শক্তিশালী করার কাজগুলো করতে পারতেন।
দুর্ভাগ্যক্রমে মন্ত্রীদের অনেকেই মূল আওয়ামী ঘরানার বাইরে থেকে আসা। এক মতিয়া চৌধুরী ছাড়া তারা রাজনৈতিক ব্যাপারে মাথা ঘামান না। আওয়ামী লীগের হয়ে প্রতিপক্ষ দলের লোকদের সঙ্গে মোকাবেলা করা থেকে বিরত থাকেন। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে এবং নির্বাচনী পরাজয়ের পর তারা যে নিঃশব্দে দূরে বা আড়ালে চলে যাবেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই।
বলতে দ্বিধা করি না, শাসক জোটের প্রধান দল আওয়ামী লীগ এখন তিনটি গুরুতর সংকটে ভুগছে। এক. দলে বিরাজমান প্রকট সাংগঠনিক দুর্বলতা; দুই. মিডিয়া জগতের ন্যায়বিচার ও সহানুভূতি থেকে আওয়ামী লীগ ক্রমান্বয়ে দূর থেকে আরও দূরে সরে যাচ্ছে। এই গুরুত্বপূর্ণ এবং স্পর্শকাতর বিষয়টি সম্পর্কে আওয়ামী লীগ তেমন পরোয়া করে বলে মনে হয় না। আওয়ামী লীগ তথা মহাজোট সরকারের এত সাফল্য রয়েছে, কোনো কোনোটি তো যুগান্তকারী। অথচ প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া, প্রভাবশালী সংবাদপত্র বা টিভি প্রতিদিন সরকারের বিরুদ্ধে তুচ্ছ বিষয়কে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলে নেতিবাচক সংবাদ প্রচার করছে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব যদি মনে করে থাকেন মিডিয়াবান্ধব হওয়ার প্রয়োজন নেই, মিডিয়া বিশেষত প্রভাবশালী মিডিয়ার সাহায্য ছাড়া ভালো কাজ করেও পরবর্তী মেয়াদে ক্ষমতায় যেতে পারবে, তাহলে আমার বলার কিছু নেই। মিডিয়া রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার একটি স্তম্ভ। মিডিয়াকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে রাজনীতির 'ভব নদী' পার হওয়া খুব কঠিন; তিন. প্রতিপক্ষের রাজনৈতিক পুঁজি বলতে তেমন কিছু নেই। তবু তারা কথাবাজির জোরে এবং প্রভাবশালী মিডিয়ার বদৌলতে ইতিমধ্যে এমন শক্তি অর্জন করে ফেলেছে যে, তারা সরকার পতনের একদফা দাবি নিয়ে আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানের হুমকি পর্যন্ত দিতে কসুর করছে না। বিরোধী দলের শক্তির ফাঁপা বেলুন ফাটিয়ে দেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগে কুশলী রাজনৈতিক নেতা খুব বেশি নেই। এই শূন্যতা পূরণ হতে পারত আবদুল জলিল, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদের মতো রাজনীতিতে পরিপকস্ফ কুশলী নেতাদের সক্রিয় করতে পারলে।
আমার কথাটা খুব আচমকা ও নাটকীয় মনে হতে পারে। তবে স্বাধীনতার পক্ষের একজন নগণ্য সমর্থক হিসেবে আমার ৪২ বছরের সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতা থেকেই কথাটা বলছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে কারণে উপরোক্ত নেতাসহ আরও কিছুসংখ্যক লোককে তার সহানুভূতির তালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন সে বিষয়ে আমার বলার কিছু নেই। তবে সবিনয়ে বলব, আওয়ামী লীগে অন্যান্য দলের মতো কোরবান আলী কিংবা খন্দকার মোশতাকের মতো লোক কোনোদিনই বেশি ছিল না। এখনও নেই। রাজনীতি যখন সংকটে তখন দলে অভিজ্ঞ একই সঙ্গে অনুগত ও অনুতপ্ত লোকদের সক্রিয় করে তোলার বিকল্প নেই। রাজনীতিতে অভিমান, জেদ বা রাগের কোনো স্থান নেই। আওয়ামী লীগ নেত্রী দলের প্রায় ভয়াবহ হয়ে ওঠা গ্রুপিং, অনৈক্য ও সাংগঠনিক দুর্বলতার এই সময়টা সত্যিকারের নেত্রীসুলভ বাস্তববোধ ও ক্ষমাসুন্দর আপসের বিষয়টি ভেবে দেখবেন বলে আমার প্রত্যাশা। ওবায়দুল কাদের, আবদুল জলিল তো ১/১১-এর সময় দুর্বিসহ নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। ওবায়দুল কাদের ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে পুনরায় মর্যাদা দিয়ে দলে ও মন্ত্রিত্বে সক্রিয় করে তুলে তিনি যে যথার্থ কাজটাই করেছেন, এ বিষয়ে নিশ্চয়ই আওয়ামী লীগ প্রধানের মনেও কোনো দ্বিধা নেই। ওবায়দুল কাদেরের মতো আবদুল জলিলও ১/১১-এর সময় ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। ডায়াবেটিস, হৃদরোগসহ নানা কঠিন ব্যাধিতে অসুস্থ ও মৃতপ্রায় অবস্থায়ও জলিল সাহেব বঙ্গবন্ধুকন্যার বিপক্ষে কোনোরূপ কথা বলতে অস্বীকার করেছেন। শেষ দিকে স্ত্রীকে লেখা চিঠি নিয়ে অবশ্য জলিল সাহেব সম্পর্কে নেত্রীর মনে সন্দেহ-অবিশ্বাস সৃষ্টি হতেই পারে। তবে আমার মতো আওয়ামী লীগের অনেক হিতৈষীই মনে করেন, মানবিক দুর্বলতার কারণে দুর্বিসহ যন্ত্রণায় ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যুর দুয়ারে পেঁৗছে যাওয়ার আগে এরকম কিছু উল্টাপাল্টা হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। আর আমির হোসেন আমু এবং তোফায়েল আহমেদ, আসাদুজ্জামান নূরদের মতো রাজনীতি জানা, রাজনীতি বোঝা ক'টা লোক বাংলাদেশে আছে? আগে যা হওয়ার হয়েছে_ এখন আগামী নির্বাচনের বাকি মাত্র দেড় বছর। এখন এসব বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় হয়েছে। অধিক কালক্ষেপণ করা ঠিক হবে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনেট, একাডেমিক কাউন্সিল এবং ডিন নির্বাচনে স্বাধীনতাবিরোধীদের বিশাল বিজয় দেখে যেমন বিস্মিত হয়েছি, তেমনি উদ্বিগ্নও। শিশির বিন্দুতেও সূর্যের প্রতিফলন ধরা পড়ে। আওয়ামী লীগ তথা মহাজোট সরকারের এত সব যুগান্তকারী সাফল্য থাকতেও দেশের সবচেয়ে ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটসহ অন্যান্য নির্বাচনে যদি সরকার ও দলের বিপক্ষে নির্বাচনে এমনধারা ফলাফল ঘটতে দেখা যায়, তাহলে বুঝতে হবে রাজনীতিতে স্বাধীনতা পক্ষের শক্তির কোথাও গুরুতর বিচ্যুতি ঘটেছে। কৌশলগত ভুল হয়েছে, কোথাও প্রকট হয়ে আছে এখনও আমলে না নেওয়া বিশাল সাংগঠনিক দুর্বলতা। সে জন্য কথাগুলো বলা।

রাহাত খান :কথাসাহিত্যিক ও
কলাম লেখক
 

No comments

Powered by Blogger.