শিশুদের দাঁতকপাটি রোগ by প্রণব কুমার চৌধুরী

হঠাৎ করে একজন আর হাঁ করে মুখ খুলতে পারছে না অথবা খোলা মুখ হাঁ করেই আছে, আর বন্ধ করতে পারছে না। মেডিকেলে এর কেতাবি নাম ‘ট্রিসমাস’। এ অবস্থা কারও ক্ষেত্রে সাময়িক সময়ের জন্য ঘটে, কারও বেশ দীর্ঘস্থায়ী হয়। এখানে পঞ্চম কেন্দ্রীয় স্নায়ু নার্ভ জড়িয়ে যায়, যা ম্যানডিবেলের সেনসরি ও কিছু মোটর ফাংশনে দায়িত্ব পালন করে।


কোনো কোনো সময় এটি তীব্র ব্যথা সৃষ্টিকারী ও খুবই অস্বস্তিকর। হাই তুলতে ভীষণ কষ্ট, দাঁত ব্রাশ করা যাচ্ছে না, খেতে ও পানীয় পানে বেশ দুরবস্থা। কথা বলা যাচ্ছে না।
যদি সঠিক চিকিৎসা না পায়, তবে চিবানো বা সাবলীল কথা বলার শক্তি সম্পূর্ণভাবে বিনষ্ট হতে পারে।

কারণ
 চোয়ালের মাংসপেশিতে প্রদাহ—বিশেষত আক্কেল দাঁতসংলগ্ন মাংসপেশির প্রদাহে, যেখানে এ দাঁত না উঠে পুঁজের আধার তৈরি হয়।
 অতিরিক্ত মানসিক চাপে দাঁতে দাঁত লাগা পরিস্থিতি—টেমপেরো মেনডিবুলার জয়েন্ট খিল লেগে যায়।
 ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে।
 কিছু কিছু ওষুধ সেবনে—এমডিএমএ ও অন্যান্য এমফিটামাইনস।

চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা
কিছু সময় এটা আপনা-আপনি লাঘব হয়ে যায়। তবে সঠিক চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার আশ্রয় নেওয়াই উত্তম।
 একটু গরম ভাপ দেওয়া গরম জলে ভেজা তোয়ালে দিয়ে।
 ডেন্টাল সার্জারি, বিশেষত আক্কেল দাঁত গেড়ে বসে থাকলে।
 ফিজিক্যাল থেরাপি।
 মাংসপেশির দৃঢ় অবস্থা লাগবে কিছু ওষুধ।
 অ্যান্টি প্রদাহ ওষুধ।

প্রতিরোধব্যবস্থা
 খাবার ধীরে-সুস্থে চিবিয়ে খাওয়া।
 চাপমুক্ত থাকা।
 ধনুষ্টঙ্কারের টিকাদান।
 এমফিটামিনস এবং এ-জাতীয় ওষুধ সেবন সম্পর্কে সচেতন থাকা।

(শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল)

No comments

Powered by Blogger.