বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীদের রিরুদ্ধে মামলা-কেউ আত্মগোপনে, কেউ জামিনের জন্য ঢাকায় by একরামুল হক

প্রায় আড়াই হাজার জনের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পর বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীরা বেকায়দায় পড়েছেন। কেউ আত্মগোপনে চলে গেছেন, কেউ জামিনের জন্য অবস্থান করছেন ঢাকায়। ফলে বিভিন্ন কর্মসূচিতে মাঠে নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি কম।


দলীয় নেতারা জানান, ছয়টি মামলায় আড়াই হাজার নেতা-কর্মীকে আসামি করায় দলীয় নেতারা চাপের মধ্যে পড়ে যান। পুলিশি অভিযানের মুখে বেশির ভাগ নেতা এখন ঢাকায় এবং অন্যরা আত্মগোপনে। নেতা-কর্মীরা কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশপাশি ও উচ্চ আদালতের আইনজীবীদের সঙ্গে মামলার বিষয়বস্তু নিয়ে পরামর্শ করছেন।
১৩ মে নগরের কাজীর দেউড়ি ও নাসিমন ভবন চত্বরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এর জের ধরে ওই দিন নগরের সর্বত্র সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এতে তিনটি প্রাইভেট কার আগুনে পুড়ে যায়। বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা শতাধিক গাড়ি ভাঙচুর করে। সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের কোতোয়ালি অঞ্চলের সহকারী কমিশনারসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়। পুলিশ এ ঘটনায় নগরের কোতোয়ালি ও খুলশী থানায় পাঁচটি মামলা করে। আমীন সেন্টারের ব্যবসায়ী সমিতির এক নেতা আরেকটি মামলা করেন খুলশী থানায়।
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন এ প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুলিশ মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের নেতা-কর্মীদের হয়রানি করছে। এসব হয়রানি করে কর্মীদের মনোবল ভাঙা যাবে না। কর্মীরা এতে আরও উজ্জীবিত হয়ে উঠছে। তাই এসব মামলা দিয়ে বিএনপির আন্দোলন সংগ্রাম দমন করা যাবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘১৩ মের ঘটনায় একটি এজাহারে একই ব্যক্তিকে দুবার আসামি করা হয়েছে। ফলে এসব মামলা আইনের দৃষ্টিতে খুব দুর্বল হয়ে পড়েছে, যা আইনের চোখে টিকবে না। তাই আমাদের নেতা-কর্মীদের জামিন পেতে কোনো সমস্যা হবে না।’
মামলার আসামি বিএনপির নেতা-কর্মীদের জামিনের জন্য এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান। তিনি মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুলিশ গাড়ি পোড়ানো এবং বিস্ফোরক আইনের মামলায় আমাদের আসামি করেছে। একসঙ্গে বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করা উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আমরা তা আইনিভাবে মোকাবিলা করার প্রস্তুতি নিয়েছি। তাই সবাই এখন ঢাকায় অবস্থান করছি।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পুলিশের অভিযানের কারণে বেশির ভাগ নেতা-কর্মী এখন গা-ঢাকা দিয়েছেন। কেউ ঢাকায়, আবার কেউ আত্মীয়র বাসায় আত্মগোপন করে আছেন। যে কারণে পুলিশের অভিযানে কেউ ধরা পড়ছেন না।
এদিকে গত বৃহস্পতিবারের হরতালের সময়ে গুটিকয়েক নেতা-কর্মী নাসিমন ভবন চত্বরে জড়ো হন। যা অন্যান্য হরতালের তুলনায় একেবারে নগণ্য বলে স্বীকার করেছেন একাধিক নেতা। এ ছাড়া নাসিমন ভবন চত্বরে মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন ও নগর বিএনপির সহসভাপতি শামসুল আলম ছাড়া উল্লেখযোগ্য কোনো নেতাকেও দেখা যায়নি।
জানতে চাইলে একাধিক নেতা বলেন, ‘পুলিশ হরতালের দিন নাসিমন ভবনসহ গোটা শহর ঘেরাও করে রেখেছিল। মামলার আসামি হয়ে দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিলে গ্রেপ্তার অনিবার্য। তাই এই মুহূর্তে পুলিশকে এড়িয়ে আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি চলছে আমাদের।’

No comments

Powered by Blogger.