অভিযোগ-এক শিক্ষক-পরিবারকে হয়রানি

নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার পাইকুড়া ইউনিয়নের মজলিশপুর গ্রামে প্রভাবশালী মহলের বিরুদ্ধে এক শিক্ষক-পরিবারের জমি দখলের চেষ্টা, হামলা, নির্যাতন, হয়রানি ও অব্যাহত হুমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই পরিবারটি এখন চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে।


এ ঘটনায় নিরাপত্তা চেয়ে ওই নির্যাতিত পরিবারের সদস্যরা সম্প্রতি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
লিখিত অভিযোগ ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জমিসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ওই গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সৈয়দ মহিউদ্দিনের (কাঞ্চন মাস্টার) সঙ্গে একই গ্রামের নজরুল ইসলামের পরিবারের সদস্যদের বিরোধ চলে আসছে। এর জের ধরে মহিউদ্দিনের পরিবারের ওপর কয়েকবার সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। হামলায় মহিলাসহ কয়েকজন গুরুতর আহত হলে তাঁদের উন্নত চিকিৎসার জন্য নেত্রকোনা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এসব ঘটনায় থানায় একাধিক মামলা হলে পুলিশ অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। তা ছাড়া পুকুরের মাছ লুট, ঘরবাড়ি, জমির ফসল, গাছের ক্ষতি করাসহ বিভিন্ন অভিযোগে নেত্রকোনার বিচারিক হাকিম আদালতে আরেকটি মামলা করা হলে পুলিশ সে মামলায়ও প্রতিবেদন দাখিল করে। সে সঙ্গে ভুয়া ও জালিয়াতি দলিলের মাধ্যমে জমি দখলের চেষ্টার বিরুদ্ধে ওই চিহ্নিত প্রতিপক্ষ মহলের বিরুদ্ধে অসহায় স্কুলশিক্ষক সহকারী জজ আদালতে আরেকটি মামলা করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আদালত বিরোধপূর্ণ জমিতে যেতে নিষেধসংক্রান্ত অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন।
এ ব্যাপারে স্কুলশিক্ষক সৈয়দ মহিউদ্দিন ও তাঁর ছেলে সৈয়দ সাইফুল আলম বলেন, ‘নজরুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে ভুয়া ফারায়েজ ও দলিলের মাধ্যমে আমাদের জমি দখলের চেষ্টা করতে উঠেপড়ে লেগেছে। তা ছাড়া আমাদের ওপর হামলা ও নির্যাতন চালানো হচ্ছে। সে সঙ্গে নানাভাবে হুমকি-ধমকি এবং মামলা তুলে নিতে চাপ দেওয়া হচ্ছে। এতে আমরা এখন চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আছি।’
অভিযোগের ব্যাপারে নজরুল ইসলাম দাবি করেন, ‘এসব অভিযোগ সত্য নয়। আমাদের পূর্বপুরুষদের জমিতেই তারা (কাঞ্চন মাস্টারের পরিবার) বসবাস করছে। আর এ কারণেই বিরোধ দেখা দিয়েছে।’
স্থানীয় পেমই পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বে থাকা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মিরাশ উদ্দিন বলেন, ‘সৈয়দ মহিউদ্দিন মাস্টারের সঙ্গে জমি নিয়ে নজরুল ইসলামের পরিবারের বিরোধ অনেক দিনের। তবে ওই শিক্ষক-পরিবারের ওপর নজরুল ও তার সহযোগীদের অব্যাহত হামলা, নির্যাতন, হুমকিসহ বিভিন্ন অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।’
কেন্দুয়া থানার নবাগত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর শেখ বলেন, ‘আমি এখানে নতুন এসেছি। এ বিষয়ে খোঁজখবর নেব।’
তবে সাবেক ওসি মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে প্রভাবশালী মহলটির বিরুদ্ধে ওই শিক্ষক-পরিবারের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালানোর একাধিক মামলায় তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।’

No comments

Powered by Blogger.