পানামার গোলাপ রনডেলেশিয়া by মোকারম হোসেন

রমনা উদ্যানের অশোককুঞ্জের উত্তর পাশ লাগোয়া কয়েকটি রঙ্গনের পাশেই দেখা মিলবে এ গাছের। বিক্ষিপ্ত ডালপালার এ গাছ বেশ কয়েক বছর আগেই দেখেছি সেখানে। প্রথমে ভেবেছিলাম রঙ্গনের কোনো প্রজাতি। পরে ভুল ভাঙল। অধ্যাপক দ্বিজেন শর্মার ফুলগুলো যেন কথা গ্রন্থে গাছটির পরিচয় ‘রনডেলেশিয়া’ নামে।


কোনো বাংলা নাম নেই। প্রায় বর্ষব্যাপ্ত প্রস্ফুটন ও চটকদার রঙের জন্য যেকোনো উদ্যানেই মানানসই। সঠিক পরিচর্যার অভাবে উদ্যানের গাছটি বেশ হতশ্রী। তবে বংশবৃদ্ধির ক্ষেত্রে স্পর্শকাতর বলেই রনডেলেশিয়ার তেমন প্রসার ঘটেনি। জানামতে, রমনা উদ্যান ছাড়া নিউ বেইলি রোডের ডাক বিভাগের আবাসিক ভবনগুলোর একটিতে এ গাছ চোখে পড়ে। তবে বিক্ষিপ্তভাবে কারও ব্যক্তিগত বাগানেও থাকতে পারে।
রনডেলেশিয়া (Rondeletia odorata) পানামার সুগন্ধি গোলাপ নামেও পরিচিত। চিরসবুজ গুল্ম। আলেক্সানাডার ভন হামবল্ডট এবং অ্যামি বনপ্লেনড সর্বপ্রথম মেক্সিকো থেকে এ গাছ সংগ্রহ করেন। ১৮১৮ সালের দিকে Nova Genera et Species Plantarum গ্রন্থের চতুর্থ সংস্করণে এ গাছের উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম সংযুক্ত করা হয়। রনডেলেশিয়া নামটি স্যার গুইলামি রনডিলেটের স্মারণিক। এ গাছের আদি আবাস কিউবা। সাধারণত এক থেকে দেড় মিটার পর্যন্ত উঁচু হতে পারে, গড়নের দিক থেকে লম্বাটে স্বভাবের। পাতা চার থেকে ছয় সেন্টিমিটার লম্বা, ওপরের পিঠ রোমশ। ছোট ছোট থোকায় সাত থেকে আট মাস পর্যন্ত ফুল ফোটে। ফুল দেখতে অনেকটা রঙ্গনের মতো, তবে পাপড়ির আগা ভোঁতা ও মাঝখানে একটি হলুদ রঙের ফোঁটা থাকে, পাপড়ির রং লাল। বংশবৃদ্ধি দাবাকলমে।

No comments

Powered by Blogger.