ইয়েমেনে ড্রোন হামলা-আওলাকির মৃত্যুতে প্যানেটাসহ চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা

ইয়েমেনে ড্রোন (চালকবিহীন বিমান) হামলায় নিহত যুক্তরাষ্ট্রের তিন নাগরিকের স্বজনরা প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগন এবং কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা- সিআইএর শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। ওয়াশিংটনের ফেডারেল ডিস্ট্রিক্ট আদালতে গত বুধবার এ মামলা করা হয়।


মামলায় ঘটনার জন্য যথাযথ ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে। অনেক দিন ধরেই বিভিন্ন দেশে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রশাসনের ড্রোন হামলার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও এই মামলার মধ্যদিয়ে এ বিষয়ে আইনি বিতর্কের নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো বলে মনে করা হচ্ছে।
গত বছর সেপ্টেম্বরে ইয়েমেনভিত্তিক আরব উপদ্বীপের আল-কায়েদা গোষ্ঠীর (একিউএপি) শীর্ষস্থানীয় নেতা আনোয়ার আল আওলাকি ও সামির খান নামের আরেক সদস্য নিহত হন। আওলাকি ও সামির দুজনই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। আওলাকির জন্ম নিউ মেঙ্েিকা অঙ্গরাজ্যে। আল-কায়েদার একটি ইংরেজি ভাষার সাময়িকীর সঙ্গে সামিরের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। একই বছর অক্টোবরে আরেকটি ড্রোন হামলায় আওলাকির ছেলে আবদুল রহমান (১৬) নিহত হয়। তার জন্ম কলোরাডোয়। বুধবার ওই মামলা করেন আওলাকির বাবা নাসের আল আওলাকি ও সামিরের মা সারা খান।
মামলার বিবাদীরা হলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লিওন প্যানেটা, সিআইয়ের পরিচালক ডেভিড পেট্রায়াস, মার্কিন বিশেষ অভিযানের প্রধান অ্যাডমিরাল উইলিয়াম ম্যাকর‌্যাভেন ও আরেক সামরিক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল জোসেফ ভোটেল। বাদীদের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে।
মামলার আরজিতে বলা হয়, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা এ হামলা পরিচালনা ও অনুমোদন দিয়েছেন। সঠিক আইনি প্রক্রিয়ার বাইরে কারো জীবন কেড়ে নেওয়ার এই পদক্ষেপ মার্কিন নাগরিকদের জন্য সংরক্ষিত মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন।
সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা গেছে, গত বছরের ওই ড্রোন হামলা চালানোর আগেই আওলাকির বাবা এ ধরনের হামলা বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে একটি আবেদন করেছিলেন আদালতে। কিন্তু আওলাকির পক্ষে তাঁর বাবা আবেদন করতে পারেন না_এই যুক্তিতে আদালত নাসেরের আবেদন খারিজ করে দেন।
দ্য সেন্টার ফর কনস্টিটিউশনাল রাইটস ও আমেরিকান সিভিল লিবারটিস ইউনিয়ন নামের দুটি প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, তারা মামলার বাদীদের আইনি সহায়তা দেবে। সেন্টার ফর কনস্টিটিউশনাল রাইটসের আইনজীবী বলেন, 'কোনো জবাবদিহিতা ও ব্যাখ্যা ছাড়াই যখন নিজ দেশের সরকারের হাতে যুক্তরাষ্ট্রের ১৬ বছর বয়সী এক কিশোর নিহত হয়, তখন বুঝতে হবে বিষয়টিতে ভয়ঙ্কর রকম গলদ আছে।'
বিচার বিভাগের মুখপাত্র সাংবাদিকদের জানান, তাঁরা অভিযোগটি দেখেছেন এবং বিষয়টি পর্যালোচনা করছেন। তবে মামলার নিষ্পত্তি এত সহজে হবে না বলে জানিয়েছেন সাংবাদিকরা। সূত্র : বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.