কনস্টেবলে ১০ লাখ এসআই পদে ২০ লাখ -হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ

ইয়াবা, ফেনসিডিল খেয়ে যুবকরা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। ইয়াবা এখন পানের দোকানেও পাওয়া যাচ্ছে। যুবকরা এসব মাদকে কেন আটকে গেছে? কর্মসংস্থান না থাকায় হতাশায় যুবকরা নেশাগ্রস্ত হচ্ছে। কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করলে সমাজ ধ্বংস হয়ে যাবে। ঘুষ ছাড়া চাকরি হচ্ছে না। ছেলে এম এ পাস করার পর তার কনস্টেবলের চাকরি জন্য ১০ লাখ টাকা লাগে। এসআই-এর চাকরি জন্য ২০ লাখ টাকা লাগে। পিয়নের চাকরি জন্য ১০ লাখ টাকা লাগে। আমার সময় এটা হলে আমি আত্মাহত্যা করতাম। গতকাল দুপুরে বগুড়া পর্যটন মোটেলে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এসব কথা বলেন। গতকাল সকাল সাড়ে ১১টায় এরশাদ হেলিকপ্টার যোগে বগুড়া পুলিশ লাইন্সে অবতরণ করেন। সেখান থেকে গাড়ি যোগে প্রতিনিধি সম্মেলনের সভাস্থলে উপস্থিত হন। জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে তিনি প্রতিনিধি সভায় দুপুর ২টার দিকে বক্তব্য রাখেন। জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়া উদ্দিন বাবলু, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা। জেলার সভাপতি শরিফুর ইসলাম জিন্নাহ এমপি, সাধারণ সম্পাদক এমপি নুরুল ইসলাম ওমর উপস্থিত ছিলেন। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ তার বক্তব্যে আরো বলেন, বাংলাদেশে সবচেয়ে বয়জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদ আমি। আমার বয়স হয়েছে, এটা আমি মানি না, বিশ্বাস করি না। আমার একটাই লক্ষ্য আগামীতে জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় নিয়ে যাওয়া। আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্যে বলেন, আমার সময় ঢাকা থেকে ৬ ঘণ্টায় রংপুরে গিয়েছি। এখন উন্নয়নের মহাসড়কে সময় লাগে ১২ ঘণ্টা। আমার সময় মানুষ খুন হয়নি, আর এখন দেখেন। বর্তমান সরকারের ব্যাংক খাত ও অর্থনীতি বিষয়ে এরশাদ বলেন, শেয়ার মার্কেটে টাকা হারিয়ে অনেকেই আত্মহত্যা করেছে। শেয়ার বাজারের টাকাগুলো বড়লোক নিয়েছে। এখন ব্যাংক ডাকাতি হয়, ব্যাংকেও টাকা নেই। এমনকি আমার ব্যাংকেও টাকা নেই। পৃথিবীর কোথায়ও শুনেনি সেন্ট্রাল ব্যাংকে ডাকাতি হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকে ডাকাতি হয়েছে। অনেক তদন্ত হয়েছে, কিন্তু কারা এর পেছনে তা এখনো জানা যায়নি। প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় তিনি বলেন, আশ্চর্য লাগে প্রধানমন্ত্রী প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে বলেছেন, অতীতেও প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রীর বিষয়ে তিনি বলেন, কীভাবে একজন মন্ত্রী সহনীয় পর্যায়ে ঘুষ নেয়ার কথা বলেন। এটা কেউ বলতে পারে? ওই কথা বলার পরও এখনো তার মন্ত্রিত্ব রয়েছে। এরশাদ আরো বলেন, রংপুর কারমাইকেল কলেজের অধ্যক্ষ শিক্ষামন্ত্রীর ভায়রা। সবাই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। কলেজে তালা ঝুলছে। প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি কী হয় দেখি। তিনি হতাশা প্রকাশ করে দেশের অবস্থা বর্ণনা করতে বলেন, জনগণ এসব ব্যবস্থা থেকে মুক্তি চায়। দুর্নীতি এখন সর্বত্র। ১০০ কোটি টাকার কাজ শুরু হলে সেখানে ২০০ কোটি টাকা খরচ হয়। মালয়েশিয়া হয়েছে কিছু লোকদের সেকেন্ড হোম। ক্ষমতার রদবদল হলে ওসব ব্যক্তিরা পালিয়ে যাবে মালয়েশিয়ায়।
এরশাদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী এয়ারপোর্টে নামার কথা থাকলে এয়ারপোর্ট বন্ধ করে দেয়া হয়। আমার সঙ্গে কোনো পুলিশ নেই, নেই গানম্যান। আমি অন্যায় করিনি। আপনারা অন্যায় করেন তাই পুলিশ নিয়ে ঘুরেন। আমরা আগের সেই শান্তির দিনে ফিরে যেতে চাই। বক্তব্য শেষে তিনি উচ্চ কণ্ঠে বলেন, আমার বয়স ৮০ কিংবা ৯০ বড় কথা নয়। জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় নিয়ে যেতে চাই। আপনারা আমার সঙ্গে আছেন কী না বলুন। জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় নিয়ে যেতে চাইলে আগামী ২৪শে মার্চ সবাইকে ঢাকায় আসতে হবে। সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় এলে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সেফ থাকবে। আমরা কাউকে জেলে দেবো না।

No comments

Powered by Blogger.