মূল পর্ব বুঝি এখানেই! by সামীউর রহমান

রাম নেই তবে অযোধ্যা আছে! মহিলা বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব, ভারতে মূল আয়োজন ২০১৩ সালে। মিরপুর ১০ নম্বরের গোলচক্কর থেকে শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের দিকে হেঁটে গেলে মনে হবে মূল আয়োজনটা বুঝি এখানেই! সড়কদ্বীপে বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়দের ছবি, অধিনায়ক সালমা খাতুনের 'কাট-আউট' আর নীলরঙা ব্যানারে আইসিসির মহিলা বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের বিজ্ঞপ্তি। আছে নিরাপত্তার ব্যাপক তোড়জোড়ও। সব মিলিয়ে এলাহি কাণ্ড।ক্রিস্টোফার হেনরি গেইল নামের জ্যামাইকান ভদ্রলোকটি ব্যাট হাতে প্রতিপক্ষের অনেক সর্বনাশই করেছেন।


তবে এ বছরই বিশ্বকাপ খেলতে বাংলাদেশে এসে স্মার্টফোন হাতে যা করেছেন, তাতে অনেকটা ক্ষতিই হয়ে গেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটের। জাতিসংঘের হিসাবেই জ্যামাইকায় অপরাধের হার অনেক বেশি, তাঁর নিজের শহর কিংস্টনে বেড়াতে আসা পর্যটকদের জন্য অনেক রকম নিরাপত্তা নির্দেশিকা আছে ব্রিটিশ হাইকমিশনের। তার পরও বাসের জানালায় আছড়ে পড়া ঢিলকে গ্রেনেড ভেবে মাটিতে শুয়ে পড়ার 'টুইট' করেছিলেন খেলোয়াড় হিসেবেও অনেক বিতর্কের জন্ম দেওয়া গেইল। এরপর বাংলাদেশের দর্শকরা ক্ষমাও চেয়েছেন, রাতভর হোটেলের সামনে দাঁড়িয়েছেন 'স্যরি' লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে। এতে গেইলের মন হয়তো গলেছে, কিন্তু নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্তাব্যক্তিরা পেয়েছেন অশনি সংকেত। বিসিবির নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মী, পুলিশ, আনসার, র‌্যাবসহ সাদা পোশাকের পুলিশ মিলিয়ে কয়েক স্তরের নিরাপত্তাকর্মীর আনাগোনাতেই মুখর ছিল শুক্রবারের নির্ধারিত অনুশীলন অংশ। সেটা পুরো বিশ্বকাপের জন্য, নাকি বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা মহিলা ক্রিকেটারদের জন্য, তা অবশ্য বলা মুশকিল।
বেসবলের দেশের ক্রিকেটেও বেসবলের প্রভাবটা স্পষ্ট। অনুশীলনের ম্যাচে বেশির ভাগ সময়ই বোলাররা মাটিতে নামানোর বদলে হাওয়ায় ভাসিয়েই বল করেছেন বেশি! ব্যাটসম্যানরাও অবশ্য হাওয়ায় ভাসিয়ে খেলেছেন বেশ কিছু শট, বেশির ভাগ সময়ই যা ফিল্ডারদের হাত ফসকেছে। মোট কথা, বাংলাদেশের একদল মেয়েকে ফিগার স্কেটিংয়ে নামিয়ে দিলে যে অবস্থা হবে, যুক্তরাষ্ট্রের মহিলা ক্রিকেটারদের অবস্থাটাও তেমনি। কোচ হিসেবে শিষ্যদের ভুল-ত্রুটিগুলো গভীর মনোযোগ দিয়েই দেখছিলেন রবিন সিং। একসময়ের ভারতীয় দলের এ অলরাউন্ডারের খেলোয়াড়ি জীবনের চেয়ে কোচিং ক্যারিয়ারটাই যেন বেশি সমৃদ্ধ! হংকং জাতীয় দল, ভারত এ দল, আইপিএলের ডেকান চার্জার্স, মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স দলকে কোচিং করিয়েছেন। খেলোয়াড় হিসেবে বার চারেক বাংলাদেশে এলেও কোনো জাতীয় দলের কোচ হিসেবে এই প্রথম। স্বাভাবিকভাবেই সংবাদকর্মীদের আগ্রহ ছিল এ সাবেক ক্রিকেটারকে নিয়ে। কিন্তু ব্যস্ততা কিংবা পেশাদারিত্বের দায়বদ্ধতায় গণমাধ্যমের সামনেই এলেন না। অথচ এ ঢাকা শহরকে ঘিরে অনেক সুখস্মৃতিই যে আছে তাঁর! ক্যারিয়ারের ৯টি ফিফটির দুটিই ঢাকায়, আর ইনডিপেনডেন্স কাপের ফাইনালে জীবনের অন্যতম সেরা ইনিংসটা খেলেছিলেন তিনি। সেই শহরে এসে এমন কাঠিন্যের 'মুখোশ' কেন তাঁর মুখে?

No comments

Powered by Blogger.