ওবামার মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক উপদেষ্টা পদত্যাগ করছেন

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষ উপদেষ্টা ডেনিস বি. রস পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ বছরের শেষ নাগাদ তিনি পদত্যাগ করবেন। গত বৃহস্পতিবার রস নিজেই এ ঘোষণা দেন। এ নিয়ে গত ছয় মাসের মধ্যে ওবামা প্রশাসনের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ দুই কর্মকর্তা পদ ছাড়লেন। গত ১৩ মে আরব-ইসরায়েল শান্তিবিষয়ক মধ্যপ্রাচ্যের বিশেষ দূত সিনেটর জর্জ মিশেল পদত্যাগ করেন।২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে রস ইরানবিষয়ক জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগ দেন। ওই বছরের জুনে তিনি জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের উপদেষ্টা হিসেবে যোগ দেন।


পদত্যাগ বিষয়ে এক বিবৃতিতে ডেনিস রস জানান, তিনি হোয়াইট হাউসে কাজ করার ব্যাপারে দুই বছরের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলেন। কিন্তু চলতি বছর আরব দেশগুলোয় গণজাগরণের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর মেয়াদ আরো এক বছর বাড়ানো হয়। কিন্তু প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দুই বছরের বেশি মেয়াদে এ দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখবেন না বলে রস তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। হোয়াইট হাউসের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, চলতি বছর শেষে রসও জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ ছেড়ে যাবেন।
বিবৃতিতে রস বলেন, 'ওবামা প্রশাসনের সঙ্গে, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে অভূতপূর্ব পরিবর্তনের সময় কাজ করতে পারাটা আমার জন্য অত্যন্ত সম্মানের বিষয়। অবশ্যই এখনো অনেক কাজ করার বাকি। তবে আমি আমার স্ত্রীকে কথা দিয়েছিলাম মাত্র দুই বছরের জন্য সরকারের সঙ্গে থাকব। এখন সেই ওয়াদা পালনের সময় এসেছে_এ ব্যাপারে আমরা দুজনেই একমত।'
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জে কার্নে বলেন, 'ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ইসরায়েলের সঙ্গে নিরাপত্তা সম্পর্ক আরো গভীর করার ব্যাপারে রস অনেক সহায়তা করেছেন। মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার ঐতিহাসিক সময়ে রস অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।' বিভিন্ন বিষয়ে ইরান সরকারের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নজিরবিহীন চাপ সৃষ্টির প্রচেষ্টাতেও রস অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন বলে উল্লেখ করেন কার্নি।
তবে সমালোচকদের মতে, ইসরায়েলি নেতাদের সঙ্গে রসের অতিরিক্ত মাখামাখির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে মধ্যপ্রাচ্য শান্তি আলোচনা থেকে কোনা সুফল বের করে আনা সম্ভব হয়নি। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রস ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে জাতিসংঘে পূর্ণ সদস্যপদের জন্য আবেদন করা থেকে বিরত রেখে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তি আলোচনা শুরু ব্যাপারে চেষ্টা চালান। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের এ প্রচেষ্টা ভেস্তে যায়। ফিলিস্তিন জাতিসংঘে পূর্ণ সদস্যপদ চেয়ে আবেদন জানায়। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সরাসরি শান্তি আলোচনা বন্ধ রয়েছে। সহসাই তা পুনরায় শুরুর সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না।
আর ওবামা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ইঙ্গিত দিয়েছেন, আগামী বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক নতুন উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়ার ব্যাপারে আপাতত কোনো পরিকল্পনা নেই। সূত্র : এএফপি, বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.