ইউরোপে ফের মন্দার আশঙ্কা

ণ সঙ্কটে জর্জরিত ইউরোপে আবারও মন্দার আশঙ্কা বাড়ছে বলে হুশিয়ারি দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আর এর ফলে জোটের ঐক্য নিয়েও সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। আগামী বছর অভিন্ন মুদ্রা ইউরো ব্যবহারকারী ইউরো জোনের প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা শূন্য দশমিক পাঁচ শতাংশে নেমে আসবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই ঋণ সঙ্কটের ফলে এখন ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঐক্য নিয়েও সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোকে দুই স্তরে বিভক্ত করা যায় কিনা, তা নিয়েও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। ইউরোপের অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ঋণ সঙ্কট যে এত দ্রুত এভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বদলে দেবে, তা হয়তো ইউরোপীয় রাষ্ট্র নেতারা কখনও ভাবেননি।


ইউরোপীয় কমিশনের অর্থনৈতিক প্রধান ওলি রেহন বলেছেন, এখনই আমি কোনো সুসংবাদ দিতে পারছি না, বরং আমাকে জানাতে হচ্ছে যে ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রবৃদ্ধির হার প্রায় থমকে গেছে। এক দিকে ইতালি আর গ্রিসের ঋণ সঙ্কট, অন্যদিকে ইউরো জোনের ভবিষ্যত্ নিয়ে অনিশ্চয়তা, এর মারাত্মক প্রভাব এরই মধ্যে অর্থনীতিতেও পড়তে শুরু করেছে। তিনি হুশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ইউরোপ এখন আরেকটি অর্থনৈতিক মন্দার সম্মুখীন।
ওলি রেহন আরও বলেন, তিনি এমন একটি দিনের প্রতীক্ষায় আছেন, যেদিন আবার কোনো সুসংবাদ দিতে পারবেন। কিন্তু এই মুহূর্তে ইউরোপীয় অর্থনীতির ভবিষ্যত্ খুবই খারাপ, ইউরোপীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রায় থমকে গেছে এবং দৃঢ় পদক্ষেপ নেয়া না হলে আবারও মন্দার ঝুঁকি আছে। পাশাপাশি অভিন্ন মুদ্রা ইউরো ব্যবহারকারী দেশগুলোকে নিয়ে যে ইউরো জোন, তার ভবিষ্যত্ও এখন বড় প্রশ্নের মুখে, বিশেষ করে জার্মানি এবং ফ্রান্সে এ নিয়ে জোর বিতর্ক চলছে। ফরাসি প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজি এখন খোলাখুলিই দুই স্তরের ইউরোপীয় ইউনিয়নের কথা বলছেন। এর মধ্যে মূল ইউনিয়নের দেশগুলোর মধ্যে সংহতি আরও গভীরতর করা হবে, অন্যদিকে বাকি দেশগুলোর সঙ্গ সম্পর্কটা থাকবে একটু ঢিলেঢালা।
জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেলও এমন ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, তারাও পরিবর্তন চান। বার্লিনে তিনি বলেছেন, এক নতুন ইউরোপ গড়ার সময় এসেছে। মার্কেল আরও বলেছেন, পরিবর্তন ছাড়া কোনোমতেই টিকে থাকা সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, ফ্রান্স বা জার্মানি ইউরোপীয় ইউনিয়নে পরিবর্তন চায় কি-না, সে প্রশ্নের জবাব আমি দিতে পারব না। কারণ, গুজব বা কানাঘুষা নিয়ে আমার কিছু বলার নেই।
জার্মানি এবং ফ্রান্স মিলে ইউরোপীয় ইউনিয়নে আমূল পরিবর্তন আনতে চাইছে বলে যে কানাঘুষা চলছে, সাংবাদিকরা সে বিষয়ে সরাসরি জানতে চেয়েছিলেন সাবেক ফরাসি অর্থমন্ত্রী এবং আইএমএফের প্রধান ক্রিস্টিন ল্যাগার্ডের কাছে। তবে এই প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গিয়ে আইএমএফের প্রধান বলেন, তিনি গুজব বা কানাঘুষা নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চান না। ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ভাগ করার এই চেষ্টার বিরুদ্ধে অবশ্য এরই মধ্যে হুশিয়ারি দিয়েছেন ইউরোপীয় কমিশনের চেয়ারম্যান জোসে ম্যানুয়েল বারোসো। তিনি বলেছেন, ইরোপীয় ইউনিয়নকে দু’ভাগ করলে সেটা কাজ করবে না। বরং এরকম চেষ্টা পুরো প্রজন্মের ভবিষ্যত্ নষ্ট করে দিতে পারে বলে তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন।

No comments

Powered by Blogger.