'কাপালিক' সেনাদের হোতার যাবজ্জীবন

পূর্বপরিকল্পিতভাবে তিন বেসামরিক আফগান নাগরিককে হত্যার দায়ে এক মার্কিন সেনাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক আদালত। সাজাপ্রাপ্ত সেনার নাম সার্জেন্ট ক্যালভিন গিবস। ২৬ বছর বয়সী গিসব আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাদের একটি প্লাটুনের নেতৃত্ব দিতেন।তিনটি হত্যাসহ ১৫টি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। সাত দিনের বিচারকাজ শেষে গত বৃহস্পতিবার দক্ষিণ সিয়াটলের লুইস-ম্যাককর্ড যৌথ ঘাঁটিতে স্থাপিত সামরিক আদালত গিবসের মামলার রায় দেন।


গত বছরের গোড়ার দিকে আফগানিস্তানের কান্দাহার প্রদেশে মার্কিন সেনাদের নিয়মিত টহল পরিচালনার সময় এসব হত্যাকাণ্ড ঘটে। হত্যার পর ওই তিন আফগান নাগরিকের আঙুল কেটে নেওয়ার কথা আদালতে স্বীকার করেন গিবস। এর পক্ষে যুক্তি হিসেবে তিনি বলেন, হরিণ শিকারের পর মানুষ যেভাবে তার শিং সংরক্ষণ করে, সেভাবে তিনিও মৃত আফগানদের হাতের আঙুল সংগ্রহ করেছিলেন।
মামলার বাকি তিন আসামিও আদালতে তাদের দোষ স্বীকার করেছে। এদের মধ্যে দুজন গিবসের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন। তবে গিবসের আইনজীবী দাবি করেন, নিজেদের দোষ ঢাকতে বাকিরা ষড়যন্ত্র করে গিবসকে দোষারোপ করেছে। একই অপরাধে জড়িত থাকার অপরাধে ২৪ বছরের কারাদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আরেক মার্কিন সেনা জেরেমি মরলকও গিবসের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়। মরলকের মতে, ২০১০ সালে তাদের পল্টনে গিবস যোগ দেওয়ার পর বেসামরিক নাগরিক হত্যার ব্যাপারে তার পরিকল্পনার বিস্তারিত বর্ণনা করে। মরলক আদালতকে জানায়, গ্রেনেড ছুড়ে দুজনকে হত্যা করে গিবস। আরেকজনকে হত্যা করে তার মৃতদেহের পাশে একে-৪৭ রাইফেল রেখে দেয়, যাতে প্রমাণিত হয় ওই ব্যক্তি অবৈধভাবে আগ্নেয়াস্ত্র বহন করছিল।
চলতি বছরের মার্চে এসব হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত কয়েকটি ছবি প্রকাশিত হলে বিষয়টি জনসমক্ষে আসে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত ওই সব ছবিতে দেখা যায়, মৃত আফগানদের দেহের পাশে বিশেষ ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে গিবসসহ অন্য সেনারা।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে পাঁচ সদস্যদের জুরি বোর্ড মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায় অনুযায়ী, অন্তত ১০ বছর কারাবাসের আগে প্যারোলে মুক্তির আবেদন করতে পারবে না গিবস।
এ মামলায় পাঁচ সেনার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছিল। এ ছাড়া সাতজনের বিরুদ্ধে অপেক্ষাকৃত কম মাত্রার অভিযোগ আনা হয়েছিল। এর মধ্যে প্রায় প্রত্যেকেই তাদের দোষ স্বীকার করেছে। অভিযুক্তদের দুজন বাদে বাকি সবাইকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। সূত্র : বিবিসি, এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.