অপরাধ করলে স্বাস্থ্যহানি

পরাধের প্রভাব কি শুধুই কিছু অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মধ্যে সীমিত? গবেষকরা বলছেন, না; এর প্রভাব আরো অনেক বেশি। অপরাধীরা মধ্যবয়সে এসে স্বাস্থ্যহানির শিকার হয়। যারা অপরাধী নয়, তাদের মধ্যে স্বাস্থ্য ভালো থাকার প্রবণতা থাকে বেশি। সম্প্রতি এক গবেষণায় এমন তথ্য পাওয়া গেছে।কার্ডিফ ও টেঙ্াস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ৪০০ পুরুষের ওপর গবেষণা চালিয়ে এ তথ্য পেয়েছেন। ক্রিমিনাল বিহেভিয়ার অ্যান্ড মেন্টাল হেলথ নামের সাময়িকীতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৬১ সালে লন্ডনে বসবাসকারী ওই ব্যক্তিদের ওপর গবেষণাটি শুরু করা হয়েছিল।


তখন তাদের বয়স ছিল ৮ বা ৯। অপরাধ করছে এবং অপরাধ করছে না_এমন ব্যক্তিদের তখন থেকেই পর্যবেক্ষণ শুরু করা হয়। ধারাবাহিকভাবে তাদের ওপর পর্যবেক্ষণ চালিয়ে দেখা গেছে, যারা অপরাধ করছে, টিনএজ বয়সে বা বয়স যখন ২০-এর কোঠায়, তখন তাদের স্বাস্থ্য অপরাধ যারা করছে না, তাদের চেয়ে বেশ ভালো রয়েছে। কিন্তু ৪৮ বছর বয়স হয়ে যাওয়ার পর ব্যাপারটি উল্টে গেছে। দেখা গেছে, অপরাধ করা ব্যক্তিদের স্বাস্থ্য অপরাধ না করা ব্যক্তিদের তুলনায় অনেক খারাপ অবস্থায় চলে গেছে।
কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভায়োলেন্স অ্যান্ড সোসাইটি রিসার্চ গ্রুপের পরিচালক ও গবেষকদলের সদস্য অধ্যাপক জোনাথন শেফার্ড জানিয়েছেন, ৪০-এর কোঠায় ঢোকার পর থেকে অপরাধীদের স্বাস্থ্যগত অবস্থায় নাটকীয়ভাবে পরিবর্তন ঘটতে দেখা গেছে। কেন এমন হয়েছে, সেটি এখনো নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, ঝুঁকিপূর্ণ ও সহিংস জীবনযাপন, উগ্রতা, এসবের কারণে দুর্ঘটনার শিকার হওয়া, দীর্ঘ সময় কারাবাস ইত্যাদি কারণে একসময় অপরাধীদের স্বাস্থ্যহানি ঘটতে শুরু করে। অন্যদিকে যথেষ্টই শান্ত ও নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের কারণে অপরাধ না করা ব্যক্তিদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য তুলনামূলকভাবে অনেক ভালো থাকে। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে, ক্রমাগত অপরাধ করে যাওয়ার পরিণতি শুধু কিছু খারাপ ঘটনা ঘটানোতেই সীমিত নয়, অপরাধ সংঘটনকারীর ওপরও এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব রয়েছে।
গবেষকরা বলছেন, এ তথ্য থেকে শিক্ষা নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের উচিত হবে টিনএজ অবস্থাতেই মানুষের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা। এতে ভবিষ্যতের সম্ভাব্য স্বাস্থ্যহানিসহ সামাজিক ও আর্থিক অন্যান্য ক্ষতি থেকে সমাজকে বাঁচানো সহজ হবে। সূত্র : বিবিসি নিউজ অনলাইন।

No comments

Powered by Blogger.