বাস ভাড়া ফের বাড়ছে-জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি by রাশেদ মেহেদী ও সোহেল মামুন

দূরপাল্লার ডিজেলচালিত বাসে প্রতি কি.মি. ১ টাকা ৪৫ পয়সা এবং ঢাকা ও চট্টগ্রামে সিএনজিচালিত বাসে সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকাসহ প্রতি কি.মি. ২ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব পরিবহন মালিকদের। সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ, ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পরিবহন সংগঠনের নেতারাও। মে থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ভাড়া বেড়েছে ৬৬ শতাংশআবারও বাড়ছে গণপরিবহনের ভাড়া। আগামীকাল রোববার এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে সমকালকে জানিয়েছেন যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন।


একই সঙ্গে সরকারি সিদ্ধান্তের আগ পর্যন্ত সব ধরনের গণপরিবহনে আগের ভাড়া বহাল থাকবে বলেও জানান তিনি। এরই মধ্যে দূরপাল্লার ডিজেলচালিত বাসে কিলোমিটারপ্রতি ১ টাকা ৪৫ পয়সা হারে এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে চলাচলরত সিএনজিচালিত বাসে সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকাসহ প্রতি কিলোমিটার ২ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে পরিবহন মালিক সংগঠনগুলো। গতকাল ঢাকা ও চট্টগ্রামে বিচ্ছিন্নভাবে বেশি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিকে বাস ভাড়া বাড়ার আশঙ্কায় সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন পরিবহন সংগঠনের নেতারাও। গণপরিবহনে সিএনজির ব্যবহার বহাল রেখে সব ধরনের ব্যক্তিগত গাড়িতে সিএনজির ব্যবহার নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন পরিবহন
নেতারা। খোদ পরিবহন নেতারা সমকালকে বলেছেন, বর্তমানে যে বাস ভাড়া আছে সেটাই সাধারণ যাত্রীদের বহন করা কষ্টকর। এ অবস্থায় তাদের ওপর অতিরিক্ত ভাড়ার বোঝা চাপালে সেটা কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত হবে
না। জ্বালানির দাম এভাবে বাড়তে থাকলে মালিকদের বাস বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না। এর আগে দু'দফা জ্বালানির দাম বাড়ার পর রাজধানীতে চলাচল করা ৪০ শতাংশ সিএনজিচালিত বাস বন্ধ হয়ে গেছে, গত দুই বছরে বিআরটিসি ছাড়া বেসরকারি খাতে কোনো সিএনজিচালিত বাস আমদানিও হয়নি। বরং সিএনজি বাসের মোড়কে ডিজেলচালিত বাস দিয়ে রাজধানীতে নতুন সার্ভিস চালু হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদের গতকাল শুক্রবার তার প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি জনজীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তিনি মনে করেন, অর্থমন্ত্রীর অর্থহীন কথাবার্তাও সরকারকে বিব্রত করছে।
মে থেকে নভেম্বর : বাস ভাড়া বেড়েছে ৬৬ শতাংশ
অনেকেই চলতি বছরকে জ্বালানি আর বাস ভাড়া বৃদ্ধির বছর হিসেবে তুলনা করছেন। এর আগে একই বছরে তিনবার জ্বালানির দাম বাড়ানোর নজির নেই। ছয় মাসে তিনবার জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি একই সময়ের মধ্যে তৃতীয়বারের মতো বাস ভাড়া বাড়ছে। শতকরা হিসাবে চলতি বছরে প্রায় ৪০ শতাংশ ভাড়া বেড়েছে রাজধানীর গণপরিবহনে। দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাসে বেড়েছে ১৮ শতাংশ। অবশ্য সরকারি হিসাবের এই হার বাস্তবে অনেক বেশি। কারণ গত মে মাসের আগে রাজধানীর ভেতরে যে দূরত্বের ভাড়া ছিল যাত্রীপ্রতি ১২ টাকা, ১৬ মের পর সেই ভাড়া হয়ে যায় ২০ টাকা। একই সঙ্গে দূরপাল্লার বাসে ২২০ টাকার ভাড়া হয়ে যায় ৩০০ টাকা। বাস্তবের এই হারে রাজধানীতে ভাড়া বেড়েছে ৬৬ শতাংশ আর দূরপাল্লার বাসে ৩৬ শতাংশ।
বর্তমানে সিএনজিচালিত বাসের ভাড়া প্রতি কিলোমিটার ১ টাকা ৬০ পয়সা, মিনিবাসের ভাড়া ১ টাকা ৫০ পয়সা এবং ডিজেলচালিত বাসের ভাড়া কিলোমিটারপ্রতি ১ টাকা ২০ পয়সা। সিএনজি অটোরিকশার ভাড়া প্রথম দুই কিলোমিটার ২৫ টাকা এবং পরবর্তী প্রতি কিলোমিটার ৭ টাকা ৬৪ পয়সা। গত ১৮ সেপ্টেম্বর জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির পর এ ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। এর আগে ১৬ মে সিএনজিচালিত বাসের ভাড়া ১ টাকা ৫৫ পয়সা এবং মিনিবাসের ভাড়া ১ টাকা ৪৫ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। সে সময় নজিরবিহীনভাবে প্রথমবারের মতো বাসের ভাড়া মিনিবাসের চেয়ে বেশি নির্ধারণ করা হয়।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণার পর বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতি যৌথভাবে ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়। যোগাযোগ মন্ত্রণালয় ১৯ সেপ্টেম্বর জারি করা প্রজ্ঞাপনে সব ধরনের বাসের ভাড়া ৫ পয়সা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয়।
বাস ভাড়া বৃদ্ধির নতুন প্রস্তাব
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এরই মধ্যে দূরপাল্লার রুটে প্রতি কিলোমিটার ১ টাকা ৪৫ পয়সা নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতি। ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে বাস ভাড়া সর্বনিম্ন ১০ টাকা এবং প্রতি কিলোমিটারে ২ টাকা করারও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বিআরটিএ সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র অবশ্য জানায়, বাস ভাড়া ১০ পয়সা বাড়ানো হতে পারে। অন্যদিকে সিএনজির দাম না বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে ঢাকা জেলা অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন। এর আগে সিএনজিচালিত অটোরিকশার ভাড়া প্রথম দুই কিলোমিটার ৩৫ টাকা এবং পরের প্রতি কিলোমিটার ৯ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত হোসেন সমকালকে জানান, গত বৃহস্পতিবার জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণা আসার পরপরই তারা যোগাযোগমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। তারা আশ্বস্ত হন যে, চলতি সপ্তাহ শেষ হওয়ার আগেই সরকার বাস-মিনিবাসের ভাড়া পুনর্নির্ধারণ করবে। এনায়েত হোসেন বলেন, প্রস্তাবিত ভাড়ার হার যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া আছে। তিনি বলেন, ভাড়া যে হারে বাড়ানো হয়েছিল তা যৌক্তিক ছিল না। সার্বিক পরিচালন ব্যয়ের তুলনায় ওই ভাড়া বৃদ্ধি ছিল নগণ্য।
বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কোষাধ্যাক্ষ কামাল হোসেন সমকালকে জানান, বিষয়টি নিয়ে দু'একদিনের মধ্যেই অন্যান্য পরিবহন সংগঠন এবং সরকারের সঙ্গে বসে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি বলেন, এবার পুরো পরিচালন ব্যয় হিসাব করে ভাড়ার হার নির্ধারণের বিষয় উত্থাপন করা হবে।
অ্যাসোসিয়েশন অব বাস কোম্পানিজের সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম কাজল সমকালকে বলেন, এখন অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, বাড়তি ভাড়ার বোঝা যাত্রীরা নয়, বাস মালিকদের পক্ষেই বহন করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ এখন যে ভাড়া আছে, সেই ভাড়াই বেশিরভাগ যাত্রী দিতে চান না। এ নিয়ে প্রতিদিনই পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে যাত্রীদের বচসা হচ্ছে। এখন আবার ভাড়া বাড়লে পরিস্থিতি নাজুক হয়ে উঠবে। তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী সিএনজি আর ডিজেলের মূল্য সমান করার কথা বলেছেন। অথচ তিনি এটুকু বোঝেন না যে, ডিজেলের পরিমাপ হয় লিটারে, আর সিএনজির পরিমাপ হয় ঘনফুটে। ডিজেলচালিত বাসের দাম, যন্ত্রাংশের মূল্য আর সিএনজিচালিত বাসের মূল্য, পরিচালন ব্যয়ের কথাও হয়তো মন্ত্রী জানেন না।
ঢাকা জেলা অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন সমকালকে বলেন, সিএনজির দাম বাড়ানো হলে রাজধানীতে অটোরিকশা চালানো দুরূহ হয়ে পড়বে। কারণ আগে যে হারে সিএনজির দাম বাড়ানো হয়েছে সে হারে অটোরিকশার ভাড়া বাড়েনি। মালিকদের নির্ধারিত হারে জমা নিতে বাধ্য করতে পারেনি সরকার। এ কারণে রাস্তায় যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ শুনতে হচ্ছে। সরকারের উচিত সব প্রাইভেটকারে সিএনজির ব্যবহার নিষিদ্ধ করা। তাহলে দাম না বাড়িয়েও সরকার গ্যাস সাশ্রয় করতে পারবে। ঢাকা মহানগর পণ্য পরিবহন মালিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক দোলন কান্তি বড়ূয়া বলেন, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির ফলে পণ্য পরিবহনের মূল্য কমপক্ষে ২৫ শতাংশ বাড়বে। সরকারের উচিত যন্ত্রাংশের ওপর থেকে কর কমানো।
বিচ্ছিন্নভাবে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়
সরকারিভাবে গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত ভাড়া না বাড়ানো হলেও ঢাকায় বিচ্ছিন্নভাবে কিছু কিছু বাসে অতিরিক্ত ভাড়া দাবির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঈদের পর নগর এখনও অনেকটা ফাঁকা থাকায় এবং সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বড় অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
গতকাল সরেজমিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সিংহভাগ পরিবহন সিএনজিচালিত হওয়ায় আগের হিসাবেই ভাড়া নিচ্ছেন কন্ডাক্টররা। কিছু বাসে অবশ্য বাড়তি ভাড়া নেওয়া হয়েছে। চিড়িয়াখানা এক্সপ্রেসের জ-১১২৮০৮ নম্বরধারী বাসের কন্ডাক্টর জানান, গুলিস্তান থেকে মিরপুরে ভাড়া ১৮ টাকা। তারা ২০ টাকা করে নিচ্ছেন। একই স্থান থেকে ফার্মগেটের ভাড়া ৮ টাকা। তারা নিচ্ছেন ১০ টাকা। বেশি ভাড়া নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে কন্ডাক্টর বলেন, একদিকে যাত্রী কম, অন্যদিকে তেলের দাম বেড়েছে। দিশারী পরিবহনের জ-১১-২৮৯৬ নম্বরধারী বাসের কন্ডাক্টর জানান, বুড়িগঙ্গা ব্রিজ থেকে চিড়িয়াখানা পর্যন্ত ভাড়া ২৬ টাকা। তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় তারা ২৮ টাকা নিচ্ছেন। সদরঘাট থেকে গাজীপুরে যাতায়াত করা স্কাইলাইন পরিবহনের বাসে ৫ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া চাওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন যাত্রীরা।
যাত্রীরা ক্ষুব্ধ, পরিবহন শ্রমিকরা বিরক্ত : জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় শুক্রবার বিভিন্ন পরিবহনে যাতায়াতকারী যাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেছেন, পরিবহনের ভাড়া আবারও বাড়লে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় ফের ভোগান্তি নেমে আসবে। অন্যদিকে পরিবহন শ্রমিকরা বলেছেন, সাত মাসে তৃতীয়বারের মতো ভাড়া নির্ধারণ হতে যাচ্ছে। এর ফলে যাত্রীরা একটি রেটে ভাড়া দিয়ে অভ্যস্ত হয়ে ওঠার আগেই নতুন রেটে ভাড়া চাইলে লাঞ্ছিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বলাকা বাসের চালক জীবন বলেন, বারবার ভাড়া পুনর্নির্ধারণে পরিবহন শ্রমিকদের ভোগান্তির শেষ নেই।
কয়েকজন যাত্রী জানান, সরকার ১ টাকা ভাড়া বাড়ালে পরিবহন মালিকরা ২ থেকে ১০ টাকা ভাড়া বাড়িয়ে দেন। কিছু দিন পরপর জ্বালানির দাম বাড়িয়ে তাদের এ সুযোগ করে দেয় সরকারই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ঝর্না রায় বলেন, সেপ্টেম্বর মাসে সরকার বাস ভাড়া কিলোমিটারপ্রতি ৫ পয়সা বাড়ায়। এর আগে মে মাসে প্রতি কিলোমিটারে ১৪ পয়সা বাড়িয়েছিল। পরিবহন মালিকরা দু'দফাতেই যাত্রীপ্রতি কিলোমিটারেই ২ টাকা থেকে ৫ টাকা ভাড়া বাড়িয়ে দিলেন। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বলেন, মানুষের আয় বাড়ছে না, সরকার নানাভাবে সবকিছুর দাম বাড়াচ্ছে। মানুষের আয় ১ টাকা বাড়লে মুহূর্তেই ব্যয় বাড়ছে ৩ টাকা। এভাবে মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তোলা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির পর চট্টগ্রাম মহানগরীতে বিভিন্ন রুটে বাড়তি ভাড়া আদায় শুরু করেছে বাস শ্রমিকরা। মহানগরীর এক নম্বর ও দুই নম্বর রুটে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে এক টাকা করে বেশি নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডাও হয়। অবশ্য চট্টগ্রাম সিটিবাস-মিনিবাস-নিউম্যান হলার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, এখনও পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত হয়নি।
ওবায়দুল কাদেরের প্রতিক্রিয়া
আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ওবায়দুল কাদের শুক্রবার ফেনী সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বলেছেন, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে পরিবহন খাতসহ দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাবে। এর ফলে জনজীবনে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে। এছাড়া অর্থমন্ত্রীর অর্থহীন বক্তব্যও সরকারকে বিব্রত করছে। তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রীকে উপদেশ দেওয়ার ধৃষ্টতা আমার নেই। কিন্তু তার অতিকথনের কারণে এর আগে শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ডিজেল আর সিএনজির মূল্য সমান করার কথাও তার বলা ঠিক হয়নি। পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও জ্বালানির দাম বাড়ে। এ জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় আগে থেকেই জনগণকে সচেতন করে।
যোগাযোগমন্ত্রীর বক্তব্য
যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন শুক্রবার সমকালকে টেলিফোনে বলেন, বাস মালিকদের কিছু দাবি-দাওয়া এবং প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে আছে। সাধারণ মানুষের অবস্থাও সরকারের বিবেচনায় আছে। সবদিক মিলিয়ে একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি বলেন, আগামীকাল রোববার এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট একটা কিছু জানাতে পারব বলে আশা করছি।
এর আগে সরকারের জ্বালানি বিভাগ থেকে জ্বালানির দাম বৃদ্ধির যুক্তি তুলে ধরে বলা হয়, বর্তমানে বিপিসি দেশি-বিদেশি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে জ্বালানি তেল আমদানি অব্যাহত রেখেছে। আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যের তুলনায় দেশীয় মূল্য যথেষ্ট কম হওয়ায় বর্তমানে বিপিসির আর্থিক সংকট চরম আকার ধারণ করেছে। ফলে জ্বালানি তেল আমদানি অব্যাহত রাখার স্বার্থে দাম বাড়ানোর বিকল্প নেই।

No comments

Powered by Blogger.