মুফতি হান্নানসহ ৩ জঙ্গির দাফন সম্পন্ন

হরকাতুল জিহাদের (হুজির) শীর্ষনেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ তিন জঙ্গির লাশ দাফন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরে নিজ নিজ গ্রামের বাড়িতে তাদের দাফন করা হয়। অপর দুই জঙ্গি হচ্ছে- মুফতি হান্নানের সহযোগী শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার হোসেন ওরফে রিপন। ২০০৪ সালে সিলেটে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলার ঘটনায় দায়ের মামলায় বুধবার রাতে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে মুফতি হান্নান ও বিপুল এবং সিলেট জেলা কারাগারে রিপনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। কাশিমপুর কারাগার থেকে কড়া নিরাপত্তায় রাতেই হান্নান ও বিপুলের লাশ গ্রামের বাড়িতে নেয়া হয়।
সেখানে জানাজা শেষে লাশ দাফন করা হয়। মুফতি হান্নানের বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায়। বৃহস্পতিবার ভোর পৌনে ৬টার দিকে নিজ গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার হিরণ বালিকা মাদ্রাসা ও এতিমখানা মাঠে নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। মুফতি হান্নানের বড় ভাই মাওলানা মুন্সি আলীউজ্জামান তার জানাজার নামাজ পড়ান। এতে মুফতি হান্নানের ছেলে নুরুল করিম (১৫), চাচতো ভাই মুন্সি ফরহাদ, ভাতিজা আবু রায়হানসহ অল্পসংখ্যক নিকট আত্মীয় উপস্থিত ছিলেন। তবে গ্রামের কেউ জানাজায় অংশ নেননি। ভোরে অ্যাম্বুলেন্স কোটালীপাড়ায় পৌঁছলে প্রশাসনের কাছ থেকে মুফতি আব্দুল হান্নানের লাশ গ্রহণ করেন তার বড় ভাই মাওলানা মুন্সি আলীউজ্জামান। এরপর তার মা রাবেয়া বেগম, স্ত্রী রাজিয়া পারভীন রুমা বেগম, ছেলে-মেয়ে ও স্বজনদের লাশ দেখানো হয়। এ সময় কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিলাল হোসেন, কোটালীপাড়া থানার ওসি মো. কামরুল ফারুক, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব জামিল উপস্থিত ছিলেন। এদিকে, রাতে মুফতি হান্নানের ফাঁসির রায় কার্যকরের খবর আসার সঙ্গে সঙ্গে জেলা সদর, কোটালীপাড়াসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে উল্লাস ও মিষ্টি বিতরণ করা হয়।
এছাড়া বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষে আনন্দ মিছিলের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এদিকে, জঙ্গি দেলোয়ার হোসেন ওরফে রিপনের লাশ তার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। কড়া নিরাপত্তায় রিপনের লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স বুধবার রাত সোয়া ১২টায় রিপনের গ্রামের বাড়ি কোনাগাঁও গ্রামে পৌঁছায়। সেখানে প্রশাসনের কাছ থেকে তার বাবা আব্দুল ইউসুফ, মা আজিজুন নেছা, ভাই নাজমুল ইসলাম লাশ গ্রহণ করেন। এরপর শাহী ঈদগাহ ময়দানে তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ইমামতি করেন গ্রামের জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা ইব্রাহিম আলী। এছাড়া জঙ্গি বিপুলের লাশ তার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের মাইশাদিতে দাফন করা হয়েছে। কাশিমপুর থেকে কড়া নিরাপত্তায় জঙ্গি বিপুলের লাশ ভোর সোয়া ৪টার দিকে গ্রামের বাড়ি এসে পৌঁছে। এ সময়  লাশ গ্রহণ করেন তার বাবা হেমায়েত উদ্দিন পাটওয়ারী। পরে জানাজা নামাজ শেষে তাকে দাফন করা হয়। জানাজার নামাজ পড়ান স্থানীয় ইমাম হেলাল উদ্দিন।

No comments

Powered by Blogger.