মমতার মাথা কেটে আনলে পুরস্কার ১১ লাখ রুপি

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির মাথা কেউ কেটে আনলে পুরস্কার হিসেবে তাকে ১১ লাখ রুপি (প্রায় ১৩ লাখ টাকা) দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) যুবনেতা যোগেশ ভার্সনেই। আর এ নিয়ে দেশটির সংসদে বুধবার ব্যাপক তোলপাড় হয়েছে। দুই কক্ষেই তার বিরুদ্ধে খুনের প্ররোচনার অভিযোগ এনেছে মমতার দল তৃণমূল। যোগেশকে গ্রেফতারের দাবি তুলেছেন সংসদ সদস্যরা। বুধবার এএনআই সংবাদমাধ্যমকে দেয়া এক বিবৃতিতে যোগেশ ভার্সনেই বলেন, ‘মমতা ব্যানার্জির মাথা যে কেটে আনবে, ওই ব্যক্তিকে আমি ১১ লাখ রুপি পুরস্কার দেব।’ তিনি আরও বলেন, মমতা তার রাজ্যে সরস্বতী পূজা করতে দেন না, রামনবমী ও হনুমানজয়ন্তীতে সমাবেশ করতে দেন না। তিনি মুসলমান সম্প্রদায়ের তোয়াজ করে যাচ্ছেন। তাই তিনি চরম শাস্তি পাওয়ার যোগ্য। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় মঙ্গলবার হনুমানজয়ন্তী পালন করে বিজেপি। তবে সিউড়িতে অনুমতি না নিয়ে মিছিল করায় পুলিশ বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের ওপর লাঠিপেটা করে। আর এতেই ক্ষিপ্ত হন যোগেশ। ভিডিও দেখে বলেন, ‘যেভাবে হনুমানভক্তদের ওপর লাঠি চালানো হয়েছে, কারও মধ্যে মানবতার এতটুকুও অবশিষ্ট থাকলে বুঝবে, এভাবে কাউকে মারা যায় না। আমি বুঝতে পারি না, মমতা ইফতার পার্টির আয়োজন করেন। সব সময় মুসলমানের পাশে থাকেন। হিন্দুরা কি মানুষ না?’
এ নিয়ে বুধবার রাজ্যসভায় সমাজবাদী পার্টির জয়া বচ্চন, বহুজন সমাজপার্টির কুমারী মায়াবতী এবং লোকসভার কংগ্রেসের নেতা মল্লিকার্জ্জুন খাড়গে ও তৃণমূলের সৌগত রায় তীব্র নিন্দা করেন। যোগেশকে গ্রেফতারের দাবি জানান তৃণমূল সংসদ সদস্য সুখেন্দু শেখের রায়। এমন মন্তব্যের বিরুদ্ধে কলকাতায় সোচ্চার হয়েছেন সাহিত্যিক নবনীতা দেবসেন, নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী, তিলোত্তমা মজুমদার, নাট্যব্যক্তিত্ব রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত প্রমুখ। তবে মমতা বলেছেন, ‘বিষয়টিকে বিন্দুমাত্র গুরুত্ব দিচ্ছি না। আমি মৃত্যুকে ভয় পাই না। জন্মেছি যখন তখন মরতে হবে। আর মানুষ আমার সঙ্গে আছে বলে কে কোথায় কী ফতোয়া দিল, তাতে কিছু আসে-যায় না।’ একই সঙ্গে বিজেপিকে পাল্টা তোপ দেগে মমতা বলেছেন, ‘যতই হুমকি আসবে, ততই আমরা দিল্লির দিকে এগিয়ে যাব। ঝাড়খণ্ড-বিহারে আমরা এরই মধ্যে সংগঠনে রয়েছি। এরপর উত্তরপ্রদেশের দিকে আমরা দ্রুত এগিয়ে যাব।’ পরিস্থিতি সামাল দিতে বিজেপির মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি জানান, যোগেশের বক্তব্যকে বিজেপি সমর্থন করে না। এ হুমকির নিন্দা জানিয়েছেন বিজেপি নেতা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনন্ত কুমারও। উত্তরপ্রদেশ বিজেপি অবশ্য দাবি করেছে, তিন বছর আগেই যোগেশকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চ্যাটার্জি বলেছেন, ‘এরা রাজনীতির কুলাঙ্গার। যোগেশকে অবিলম্বে গ্রেফতার করা উচিত।’

No comments

Powered by Blogger.