অপারেশন ইনফ্রায়েড- পলাতক খুনীদের ধরে আনার সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশ by শংকর কুমার দে

আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের সহায়তায় পরিচালিত 'অপারেশন ইনফ্রারেড' অভিযানে অংশ নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এই অভিযানে চিহ্নিত ও গ্রেফতার করা হবে জঙ্গী, সন্ত্রাসী, খুনী, ধর্ষক, স্মাগলার, মাদক ব্যবসায়ী, অস্ত্র ব্যবসায়ীর মতো মারাত্মক অপরাধীকে।
আনত্মর্জাতিক এই অভিযানের প্রাথমিক পর্যায়ে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশসহ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ ৩২টি দেশ। বঙ্গবন্ধুর খুনী ও উগ্র মৌলবাদী জঙ্গীরা কোন্ দেশে আছে এবং কিভাবে গ্রেফতার করে দেশে ফিরিয়ে আনা যায়, সে ব্যাপারে সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশ। জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমনে আনত্মর্জাতিক সম্প্রদায়ভুক্ত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এ খবর সংশিস্নষ্ট সূত্রের।
এক সপ্তাহ আগে গত ২৬ জানুয়ারি লন্ডনে অপারেশন ইনফ্রারেড অভিযান পরিচালনার প্রস্তুতিমূলক সভা হয়। লন্ডনে অনুষ্ঠিত এ সভায় অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ। ইন্টারপোলের সহায়তায় সভায় বাংলাদেশসহ অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর প্রতিনিধিরা যার যার দেশের অপরাধ ও অপরাধীদের শ্রেণীবিন্যাসের ওপর আলোকপাত করেছেন। এতে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত পশ্চিমা দেশসহ বাংলাদেশে জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাসবাদ দমন প্রাধান্য পায়। খুনী, ধর্ষক, স্মাগলার, অস্ত্র ও মাদক ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য উন্নতদেশগুলোতে প্রকট আকার ধারণ করেছে। যুক্তরাষ্ট্্র, যুক্তরাজ্যের মতো দেশ আনত্মর্জাতিক জঙ্গী সংগঠনের সদস্যদের গ্রেফতারের ওপর জোর দিয়েছে। বাংলাদেশ অন্যান্য অপরাধীদের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর মৃতু্যদ-প্রাপ্ত পলাতক খুনীদের খুঁজে বের করে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সর্বাত্মক সহায়তা দেবে অভিযানে অংশগ্রহণকারী দেশসমূহ।
চলতি বছরের মে মাস নাগাদ অপারেশন ইনফ্রারেড অভিযান পরিচালিত হতে পারে বাংলাদেশে। আনত্মর্জাতিক এই অভিযানে ইন্টারপোল সরাসরি অংশগ্রহণ না করে দূতিয়ালির ভূমিকায় থাকবে। আইনগত বাধা না থাকলে এই অভিযানে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে ইন্টারপোলকে। এতে এক দেশের জঙ্গী, খুনী, সন্ত্রাসী, ধর্ষণকারী, অস্ত্র ও মাদক ব্যবসায়ী, স্মাগলার অন্য দেশে আত্মগোপন করলেও তাদের চিহ্নিত করে সংশিস্নষ্ট দেশে ফেরত পাঠানো সহজ হবে।
বাংলাদেশে এই প্রথমবারের মতো পরিচালিত হতে যাচ্ছে 'অপারেশন ইনফ্রারেড'। ইন্টারপোল এই ধরনের অভিযান প্রথম পরিচালনা শুরম্ন করে গত বছর ২০০৯ সালে। তখন এই অভিযানে অংশগ্রহণকারী দেশের সংখ্যা ছিল মাত্র ৬ টি। অভিযানে অংশগ্রহণকারী দেশসমূহের মধ্যে ছিল যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানিসহ অপর তিনটি দেশ। প্রথম বছর অপারেশন ইনফ্রারেড অভিযান পরিচালনা করে বিরাট সাফল্য অর্জন করে। অপারেশন ইনফ্রারেড অভিযানে অংশগ্রহণকারী ৬ দেশ এক দেশ থেকে অপর দেশে ৪৫ কুখ্যাত অপরাধীকে হসত্মানত্মর করেছে।
সুপারপাওয়ার আমেরিকা, ইংল্যান্ড ও জার্মানির মতো দেশ ইন্টারপোলের সহায়তায় অপরাধী বিনিময় করে প্রাপ্ত সাফল্যকে আরও ছড়িয়ে দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করে। বাংলাদেশ এ্ই ধরনের আনত্মর্জাতিক অভিযান পরিচালনায় অংশগ্রহণকারী দেশসমূহের সঙ্গে এক কাতারে অংশ নেয়ার সুযোগের পাওয়ার প্রসত্মাব লুফে নেয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশিস্নষ্ট্ উর্ধতন কর্মকর্তা জানান বাংলাদেশের জঙ্গী, সন্ত্রাসী, খুনী বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু হত্যার মৃতু্যদ-প্রাপ্ত খুনীসহ মারাত্মক ধরনের অপরাধী অন্য দেশে আত্মগোপন করে থাকলে এবং অন্য দেশের অপরাধীরা বাংলাদেশে আত্মগোপন করে থাকলে তাদের চিহ্নিত করে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে সহায়তা দেবে আনত্মর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ্ইন্টারপোলকে। আনত্মর্জাতিকভাবে এই অভিযানে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়ে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গীবাদ দমনে আনত্মর্জাতিক সম্প্রদায়ভুক্ত হওয়ার বিরাট সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশ।

No comments

Powered by Blogger.