তারপরও প্রত্যাশা

ভূমি মন্ত্রণালয়কে খুব শীঘ্রই দুনর্ীতিমুক্ত মন্ত্রণালয় ঘোষণা করা হবে। রবিবার মন্ত্রণালয়টিতে পেন্ডিং ফাইলের তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছে। এখন থেকে এই তালিকার ক্রমিক নম্বর অনুযায়ী ফাইলের কার্যক্রম শুরম্ন হবে।
প্রতিসপ্তাহে কর্মকর্তাদের নির্ধারিত সংখ্যক ফাইলিং কাজ সম্পন্ন করতে হবে। এছাড়া ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে সারা দেশে পেন্ডিং কাজের তালিকা তৈরি করতে নির্দেশ দিতে যাচ্ছে মন্ত্রণালয়। আগামী ১৫ ফেব্রম্নয়ারির মধ্যে পরিপত্র জারির এই নির্দেশ দেয়া হবে_ একথা ভূমি সচিবের। জনকণ্ঠকে এসব কথা জানিয়ে তিনি বলেছেন, ভূমি মন্ত্রণালয়কে অচিরেই দুর্নীতিমুক্ত করা হবে।
তাঁর একথাগুলো আর যাইহোক ভাল, আশাব্যঞ্জক তো বটেই, কারণ সারাদেশে নানা পর্যায়ে বিসত্মৃত এই মন্ত্রণালয়ের নানা বিভাগ বা দফতরের দিনের পর দিন, বছরের পর বছর ধরে সাধারণ মানুষকে এমন ভোগানত্মির মধ্যে পড়তে হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে যার জন্য ঐ মন্ত্রণালয়টি দুর্নীতিমুক্ত হবে এই ঘোষণাটুকু শুনলেই অনত্মত সকলের মনে খানিকটা স্বসত্মির সঞ্চার হবে।
শুধু নির্দিষ্ট কোন মন্ত্রণালয়ের বিষয় নয়, সমাজের সর্বসত্মরে দুর্নীতির শিকড় এত দূর পেঁৗছেছে যার জন্য দেশের মানুষকে যেমন পদে পদে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, তেমনি আনত্মর্জাতিক পর্যায়েও দেশের মর্যাদা ুণ্ন হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে স্মরণ করা যেতে পারে, সর্বাধিক দুর্নীতিগ্রসত্ম দেশের তালিকায় বাংলাদেশের নাম একেবারে শীর্ষে উঠেছে একাধিকবার। পরবতর্ী পর্যায়ে শীর্ষ স্থান থেকে নামলেও দুনর্ীতি এখনও যে পর্যায়ে রয়েছে তাকে গৌরবজনক বা স্বসত্মিদায়ক পর্যায় বলা সম্ভব নয়।
ভূমি মন্ত্রণালয়সহ অপরাপর অনেক সরকারী দফতর প্রতিষ্ঠানে মোটামুটি অবস্থা একই রকম। সাধারণ মানুষকে সেবা পেতে বহু ঝামেলা পোহাতে হয়। ঐ অবস্থাটি দু-এক বছরে শুরম্ন হয়েছে তা নয়, দশকের পর দশক এমন চলছে। এই ধরনের কোন সংস্থায় যাঁর কাজ থাকে তিনি ধরেই নেন যে তাঁর কাজটি করতে হলে দুর্ভোগ সুনিশ্চিত, অধিকাংশ েেত্র পকেটের অনেক অর্থ ব্যয় করা তাঁর জন্য বাধ্যতামূলক হয়ে উঠবে এবং তাঁকে তাঁর কাজটির জন্য যেন কারও কাছে দয়াভিা করতে হবে। তাই দুশ্চিনত্মায় পড়তে হয় তাঁকে।
ভূমি মন্ত্রণালয়কে দুর্নীতিমুক্ত ঘোষণা করা হবে অচিরেই এই তথ্যটি মানুষকে আশ্বসত্ম করবে এতে সন্দেহ নেই, কিনত্মু তার পরও মানুষের মনে এই আতঙ্ক থেকেই যাচ্ছে যে, ভাল কথা, ভাল নির্দেশ আমাদের দেশে কম বলা হয়নি। যত বলা হয়েছে আখেরে তত ফল পাওয়া যায়নি।
তারপরও আমরা মনে করি কাউকে না কাউকে, কিছু না কিছু শুরম্ন করতে হবে। এই কাজে সাফল্য কতটুকু আসবে সেটা আগামীতে দেখা যাবে, তবে এখানকার সামগ্রিক দুর্নীতির ভেতর থেকে যদি অর্ধাংশও কমানোর সম্ভব হয়, তাহলে সেটাও অনত্মত উলেস্নখ করার মতো একটা খবর হতে পারে। তবু এটা করতে গেলেও দরকার দৃঢ়তা, দরকার মানসিকতার পরিবর্তন, দরকার সকল কাজের ব্যাপারে স্বচ্ছতা এবং কঠোর জবাবদিহিতা। যার অভাব দীর্ঘকাল ধরে মানুষ দেখে আসছে এবং যার জন্য তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। যুগের পর যুগ সাধারণের দুর্ভোগ হয়েই চলবে এটা চলতে পারে না। সেজন্য সর্ব পর্যায়ে সকল কাজে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং সেবার মানসিকতা খুবই জরম্নরী। শুধু একটি মন্ত্রণালয় বা দফতর থেকে নয়, সকল সংস্থাকেই দুর্নীতিমুক্ত করা প্রয়োজন। এজন্য সামগ্রিক কর্মপন্থা গ্রহণ ও সমম্বিতভাবে তার বাসত্মবায়ন জরম্নরী। তারপরও দুনর্ীতিমুক্ত ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রত্যাশা থাকবে মানুষের। সরকার দিন বদলের কথা বলেছে, সরকারের সংস্থাগুলোর কাছ থেকে অব্যাহতভাবে পেতে থাকা দুর্ভোগ দূর হয়ে নতুন দিন আনার সামগ্রিক চেষ্টা শুরম্ন হোক_ এটাই সবার কাম্য।

No comments

Powered by Blogger.