চিরসবুজ দাতে-ক্রুম

ভার্জিনিয়া ওয়েডের সঙ্গে তাঁর তুলনাই হয় না। কিমিকো দাতে-ক্রুমের তুলনায় ৩টি একক গ্র্যান্ড স্লামজয়ী ব্রিটেনের সাবেক তারকা ওয়েড দূর আকাশের তারা। তবে টেনিস র্যা ঙ্কিংয়ের ১০০ নম্বরে থাকা দাতে-ক্রুম একটা ক্ষেত্রে ছাড়িয়ে গেলেন ভার্জিনিয়া ওয়েডকে।
১৯৮৫ সালে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে সর্বশেষ ম্যাচ জেতার দিন ওয়েডের বয়স ছিল ৪০ বছর ১৩৮ দিন। এত দিন এই টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বেশি বয়সে ম্যাচ জেতার রেকর্ড ছিল এটিই। কিন্তু কাল তাঁকে ছাপিয়ে নতুন রেকর্ড গড়লেন দাতে-ক্রুম। জাপানের এক নম্বর তারকা কাল জিতলেন ৪২ বছর বয়সে। আর সেটিও দ্বাদশ বাছাই রাশিয়ার নাদিয়া পেত্রোভার বিপক্ষে!
১৯৮৯ সালে পেশাদার টেনিসে দাতে-ক্রুমের যখন অভিষেক, বর্তমান তারকাদের অনেকের জন্মই হয়নি। অথচ এই বয়সেও কি চাঞ্চল্যই না দেখিয়ে তিনি জিতলেন ৬-২, ৬-০ গেমে। তাঁর চেয়ে ১২ বছর কম বয়সী পেত্রোভাকে হারাতে সময় নিলেন এক ঘণ্টার একটু বেশি। তাঁর সমসাময়িক খেলোয়াড়েরা যখন অনেক আগেই টেনিসকে বিদায় জানিয়ে জীবন গোছাতে ব্যস্ত, তখন দাতে-ক্রুমের এভাবে খেলে যেতে পারার রহস্য কী?
রহস্যটহস্য কিছু নেই। সাধারণ জীবনযাপনই তাঁকে এতদূর নিয়ে এসেছে বলে মনে করেন দাতে-ক্রুম, ‘আমি প্রচুর খাই। অনেক ঘুমাই। কাল রাতে ১০টার আগেই আমি বিছানায় গিয়েছি। সাড়ে সাতটায় রাতের খাওয়া শেষ করেছি। আমি ঠিক বাচ্চাদের মতো ১০টার আগেই ঘুমিয়ে পড়ি। ম্যাচ কিংবা প্র্যাকটিসের পরের ক্লান্তি কাটিয়ে উঠতে আমার অনেক সময় লাগে। যে কারণে আমি অনেক ঘুমাই। অনেক স্বাস্থ্যকর খাবার খাই। প্রচুর পানি খাই। এই তো, এমন সাধারণ জীবন যাপন করি। এর মধ্যে বিশেষ কিছু নেই।’
অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের রেকর্ড গড়েছেন, তবে সব মিলিয়ে গ্র্যান্ড স্লামে সবচেয়ে বেশি বয়সে জয়ের রেকর্ডটি এখনো অনেক দূরে। ২০০৪ সালে ৪৭ বছর বয়সে উইম্বলডনে জিতেছিলেন মার্টিনা নাভ্রাতিলোভা। তাঁকে কি ছাড়িয়ে যাওয়া সম্ভব? আপাতত টেনিস ছাড়ার কোনো পরিকল্পনা নেই দাতে-ক্রুমের। তবে পেত্রোভার বিপক্ষে জয়ের পর এও জানালেন, রেকর্ডের দিকে তাকিয়ে খেলেন না তিনি, ‘আজ জেতায় অবশ্যই খুশি। কিন্তু রেকর্ডের জন্য আমি খেলি না।’ খেলেন টেনিসকে ভালোবাসেন বলে। এই ভালোবাসাই অবসর থেকে টেনিসে ফিরিয়ে এনেছে তাঁকে। ১৯৯৬ সালে বিদায় বলে দিয়েছিলেন টেনিসকে। ১২ বছর বিরতি দিয়ে ফিরে আসেন ২০০৮ সালে। আর যত দিন উপভোগ করছেন, তত দিন খেলে যাবেন বলেও জানালেন, ‘টেনিস আমার কাছে বিনোদন। কারণ খেলাটাকে আমি ভালোবাসি। কিন্তু আমি হারতেও চাই না। কোনো ম্যাচে যদি হেরেও যাই, পরদিন হোটেলে ঘুম ভাঙার পর কখনোই অনুশীলনে না যাওয়ার কথা মনে হয় না আমার।’
এমন টানই তো টেনিসে ধরে রেখেছে দাতে-ক্রুমকে। আর ৪২ বছর বয়স? দাতে-ক্রুম বলছেন, ‘এটা আমার কাছে শুধুই একটা সংখ্যা।’ এএফপি, রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.