ঠাকুরগাঁওয়ে নতুন ৩৯সহ ৫১ জনের বিরম্নদ্ধে চার্জ গঠন, পঞ্চগড়ে নতুন ৮সহ ২৯ জনের বিচার শুরু- বিডিআরের মামলা

ঠাকুরগাঁও-২০ রাইফেলস ব্যাটালিয়নের বিদ্রোহী সদস্যদের বিচার কার্যক্রমের প্রথম দিন বুধবার নতুন করে ৩৯ জন বিডিআর সদস্যকে অভিযুক্ত করা হয় এবং আদালতের নির্দেশে পুলিশ তাদের বিডিআর ব্যাটালিয়ন হেডকোয়ার্টার থেকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠায়।
ইতোপূর্বে গ্রেফতারকৃত ২৫ জনের মধ্যে ১২ জনের বিরম্নদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়। এ নিয়ে মোট ৫১ জনের বিরম্নদ্ধে চার্জ গঠন করে গ্রেফতার দেখানো হলো। আদালতের কার্যক্রম বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা পর্যনত্ম মুলতবি করা হয়। এ ছাড়া পঞ্চগড়ে বিদ্রোহী বিডিআর সদস্যদের বিচারের জন্য গঠিত বিশেষ আদালত-২-এর বিচারকাজ শুরম্নর প্রথমদিন আরও ৮ বিডিআর সদস্যকে অনত্মভর্ুক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে আসামির সংখ্যা দাঁড়ালো ২৯ জনে। আদালতের কার্যক্রম বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যনত্ম মুলতবি করা হয়েছে। খবর নিজস্ব সংবাদদাতাদের।
স্পেশাল কোর্ট-২-এর সভাপতি বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মইনুল ইসলাম কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সকাল ১০-১৪ মিনিটে হেলিকপ্টারযোগে ঠাকুরগাঁও বিডিআর হেডকোয়ার্টারে এসে উপস্থিত হন। ১১টা ১০ মিনিটে বিচারকাজ শুরম্ন হয়ে ১২.১৫ পর্যনত্ম আদালতের কার্যক্রম চলে। আদালতের প্রথম দিনের কার্যক্রমের শুরম্নতে মামলার বাদী ডিএডি নুরল ইসলাম ফকির ৫১ বিডিআর বিদ্রোহীর সদস্যের বিরম্নদ্ধে বিডিআর এ্যাক্ট অনুযায়ী অভিযোগ দায়ের করেন। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে পূর্বে গ্রেফতারকৃত ঠাকুরগাঁও জেলহাজতে থাকা ২৫ জনের মধ্যে ১২ জনকে অভিযুক্ত করে বর্তমান মামলায় গ্রেফতার দেখানোর নির্দেশ দেয়। এছাড়া ব্যাটালিয়নের নিরাপত্তা হেফাজতে থাকা বাকি ৩৯ জনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়। একই সঙ্গে আদালত বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা পর্যনত্ম মুলতবি ঘোষণা করা হয়। আদালতের সভাপতিকে সহায়তা করেন এ্যাটর্নি জেনারেলের প্রতিনিধি বিশ্বজিৎ রায়, লে. কর্নেল মাহফুজুর রহমান ও মেজর দিদার আল লতিফ।
বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত ৫১ জনকে আদালতে হাজিরের নির্দেশ দেয়া হয়। এরপর আদালতের নির্দেশক্রমে ২০ ব্যাটালিয়নের সকল বিডিআর সদস্যকে মাঠে হাজির করে পুলিশ তার মধ্য থেকে ৩৯ জনকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠায়। এ সময় গ্রেফতারকৃত ও মুক্ত উভয় বিডিআর সদস্যের কান্নায় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
ইতোপূর্বে গ্রেফতারকৃত ২৫ জনের মধ্যে অভিযুক্ত নয় যে ১৩ জন, তাদের প্রশ্নে মামলার প্রসিকিউটর ২০ রাইফেলস ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মাহফুজ আলম জানান, তাদের বিরম্নদ্ধে ব্যাটালিয়নের বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বুধবার বিকেল পৌনে চারটায় পঞ্চগড় ২৫ রাইফেল ব্যাটালিয়ন সদর দপতরে বিশেষ আদালতের কার্যক্রম শুরম্ন হয়। প্রথমে বাদী সুবেদার মেজর আমিরম্নল হক শেখ অভিযোগ পড়ে শোনান এবং অভিযোগ আমলে নেয়ার জন্য আদালতের কাছে আবেদন জানান। পরে প্রসিকিউটর লে. কর্নেল সেরাজুল হক তার বক্তব্য পড়ে শোনান এবং তিনি জেলা কারাগারে আটক ২১ জন ছাড়াও ব্যাটালিয়নে কর্মরত আরও ৮ জন বিডিআর সদস্যকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ আমলে নেয়ার আবেদন জানান। নতুন অভিযুক্তরা হলেন লুৎফর রহমান, মেহেদী হাসান, মাসুদুল করিম, মোসত্মাফিজুর রহমান, ওয়াহেদুজ্জামান, মিজানুর রহমান, নুরম্নজ্জামান ও মোজাম্মেল হোসেন।
আদালত এ দুই জনের বক্তব্য শোনেন এবং অভিযোগ আমলে নিয়ে কর্মরত ৮ জনকে গ্রেফতারপূর্বক জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দেয়। একইসঙ্গে আদালত অভিযুক্ত এই ২৯ বিডিআর সদস্যকে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করানোর আদেশ দেয়। বিকেল ৫টায় আদালতের কার্যক্রম আগামীকাল সকাল ৯টা পর্যনত্ম মুলতবি ঘোষণা করা হয়। প্রসিকিউটরকে সহযোগিতা করেন সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী এ্যাডভোকেট মোশারফ হোসেন কাজল ও এ্যাডভোকেট শেখ বাহারম্নল ইসলাম।
বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মইনুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিচারক প্যানেলে ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ রায়, লে. কর্নেল মাহফুজুর রহমান ও মেজর দীদার আল লতিফ দায়িত্ব পালন করেন।
অভিযুক্তদের বিরম্নদ্ধে পিলখানার বিদ্রোহের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ, ফাঁকা গুলি ছুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি ও পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে জনজীবন বিপন্নসহ নানা অভিযোগ আনা হয়

No comments

Powered by Blogger.