না'গঞ্জে মাটিবোঝাই ট্রলারডুবিতে ৩ শ্রমিকের মৃতু, নিখোঁজ ৩

 বুধবার ভোরের দিকে শহরের ৫ নং ঘাট এলাকায় শীতল্যা নদীতে একটি মাটিবাহী ট্রলার ডুবে তিন শ্রমিক মারা গেছে। দুপুরে উদ্ধার করা হয় তাদের লাশ। নিখোঁজ রয়েছে আরও তিনজন।
ধারণ মতার অতিরিক্ত মাটি বহন ও ট্রলার ফুটো হয়ে যাওয়ার কারণে এই ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ডুবে যাওয়া ট্রলার এমভি আলমের শ্রমিক মোঃ আব্দুর বারিকুল মিয়া জানান, কুমুদিনী ট্রাস্টের সামনে শীতল্যা নদীর তীরে নোঙ্গর করা অবস্থায় এমভি আলমসহ পাঁচটি ট্রলার ছিল। প্রতিটি ট্রলারই ছিল মাটিবোঝাই। ভোর পাঁচটায় আকস্মিক এমভি আলম ডুবে যায়। ঐ ট্রলারেই ঘুমিয়ে ছিল বত্রিশজন মাটি কাটা শ্রমিক। এর মধ্যে পরে ছাবি্বশজন সাঁতরে তীরে উঠতে সম হয়। বাকিরা নিখোঁজ ছিল। খবর পেয়ে প্রথমে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। তারা বিআইডবিস্নউটিএ ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। বিআইডবিস্নউটিএ ও ফায়ার ব্রিগ্রেডের ডুবুরিরা সকাল এগারোটায় উদ্ধার অভিযান শুরু করে। দুপুর সাড়ে বারোটায় একে একে তিনটি লাশ উদ্ধার হয়। যাদের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে তারা হচ্ছে পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলার পটিয়া আতামোহর গ্রামের কাঞ্চন প্রামাণিকের ছেলে শাখাওয়াত হোসেন (২৭), জাবেদ মিয়ার ছেলে আরিফুল হোসেন (২০) এবং আছের উদ্দিন (৩০)। আছের উদ্দিনের বাবার নাম জানা যায়নি। নিখোঁজ ৩ শ্রমিক হচ্ছে একই এলাকার মোকসেদের ছেলে আজাদুল (২৭), আফাজ মিয়ার ছেলে লাল মিয়া (৩৫) ও আবু বকরের ছেলে আলীম (২৭)। ট্রলারের ভেতরে কেবিনে ও ছাদে শ্রমিকরা ঘুমিয়ে ছিল। যারা মারা গেছে ও নিঁেখাজ হয়েছে তারা সবাই ছিল কেবিনের ভেতরে। শীতল্যা নদীর কাঁচপুর থেকে মাটি কেটে পাঁচটি মাটিবোঝাই ট্রলার মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কুমুদিনী ট্রাস্টের সামনে নদীর তীরে নোঙ্গর করে। এরা ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলার জাজিরা এলাকার একটি ইট ভাঁটিতে মাটি সরবরাহ করে। লাভের অর্ধেক শ্রমিকরা ও অর্ধেক ট্রলারের মালিক ভাগ করে নেয়।
বিআইডবিস্নউটিএ'র প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক (নৌ-পরিবহন ও সংরণ) আক্কাস আলীর তত্ত্বাবধানে ৯ জন ডুবুরি উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়। ডুবুরিরা জানান, পানির চলিস্নশ ফুট নিচে ট্রলারটি তলিয়ে গেছে। এর ভেতরে বাকি তিনজনের লাশ থাকতে পারে।
নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকতার হোসেন জানান, ধারণ মতার অতিরিক্ত মাটি বহনের কারণে ট্রলারটি ডুবে গেছে। আমরা খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লাশ উদ্ধারে ব্যবস্থা নেই। তবে ট্্রলারে অতিরিক্ত মালামাল বহন করছে কিনা তা দেখার দায়িত্ব আমাদের নয়, বিআইডবিস্নউটিএর। বিকেল পৌনে ৪টা পর্যনত্ম কেউ আমাদের কাছে অভিযোগ করেনি।
বিআইডবিস্নউটিএ নারায়ণগঞ্জ বন্দরের উপপরিচালক আলমগীর হোসেন জানান, ধারণ মতার অতিরিক্ত মাটি বহন ও তলদেশ ছিদ্র হয়ে যাওয়ার কারণে ট্রলারটি ডুবে গেছে। ঘটনার পর পর অতিরিক্ত মালামাল বহনের জন্য আমরা ৫টি ট্রলার আটক করলেও পরে ছেড়ে দেই। এই ট্রলারগুলো অবৈধ। এই ট্রলারগুলোর বিরম্নদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দায়িত্ব সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের, আমাদের নয়।
দুপুরে জেলা প্রশাসক মোঃ সামছুর রহমান ও পুলিশ সুপার বিশ্বাস আফজাল হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

No comments

Powered by Blogger.