ঢাকা শহরের ৫০ হতদরিদ্র পরিবারের তালিকা হচ্ছে

 ঢাকা শহরে ৫০ হাজার হতদরিদ্র পরিবারের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। আগামী সপ্তাহে এই কার্যক্রম শুরম্ন করা হবে। তালিকায় প্রতি ওয়ার্ডে অনত্মত ৪ হাজার পরিবার থাকবে। এদের মধ্যে সরকার নির্ধারিত বিশেষ মূল্যে চাল বিক্রি করা হবে।
এসব পরিবার প্রতি মাসে ২০ কেজি করে চাল বিশেষ মূল্যে পাবে। ঢাকার প্রত্যেকটি আসনের স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং ৯০টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের সঙ্গে পরামর্শ করেই এ তালিকা তৈরি করা হবে। এ জন্য ইতোমধ্যে সংসদ সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন খাদ্যমন্ত্রী। ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সঙ্গেও শীঘ্রই বৈঠক করা হবে। খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বুধবার সচিবালয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সভাক েএক সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান। সভায় খাদ্য বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব বারম্নন দেব মিত্র (বিডি মিত্র), খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক পিউস কসত্মা, খাদ্য বিভাগের যুগ্মসচিব খন্দকার আতিয়ার রহমানসহ মন্ত্রণালয়, ওএমএস কার্যক্রমের তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সচিবসহ সংশিস্নষ্ট উর্ধতন কর্মকতর্ারা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকাসহ চারটি শ্রমঘন জেলায় বর্তমানে ওএমএস কার্যক্রম চলছে। এ সপ্তাহ থেকেই নবগঠিত রংপুর বিভাগসহ দেশের অন্য ছয়টি বিভাগীয় শহরেও খোলা বাজারে চাল বিক্রি (ওএমএস) কার্যক্রম চালু করা হচ্ছে। বর্তমানে প্রতি কেজি ২২ টাকা দরে ওএমএসের চাল বিক্রি হচ্ছে।
খাদ্যমন্ত্রী জানান, ঢাকা নগরীর অতিদরিদ্র পরিবারগুলোর জন্য সরকার বিশেষ মূল্যে চাল বিক্রির সিদ্ধানত্ম নিয়েছে। এসব পরিবার নির্ধারিত মূল্যে প্রতি মাসে ২০ কেজি করে চাল পাবে। এ মূল্য ওএমএসের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কম হবে। তবে প্রতি মাসেই এ মূল্য পরিবর্তন হতে পারে।
রাজধানীর অতিদরিদ্র পরিবারের জন্য বিশেষ মূল্যের চাল বিক্রির জন্য প্রতি ওয়ার্ডে চার হাজার পরিবারকে তালিকাভুক্ত করা হবে। স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সহায়তায় সংসদ সদস্যরা এ তালিকা করবেন। পরবর্তীতে মন্ত্রণালয় এ তালিকা চূড়ানত্ম করবে। আগামী সপ্তাহের প্রথম দিকেই এ তালিকা তৈরি হবে।
তিনি জানান, ঢাকা ছাড়াও গোটা দেশের হতদরিদ্র ও দুস্থ-অসহায়দের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে তালিকা তৈরির নির্ধারিত ছক পাঠানো হয়েছে। দ্রম্নতই এ তালিকা তৈরির কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে।
ওএমএস কার্যক্রম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ওএমএস কার্যক্রমের ফলে বাজারে মোটা চালের মূল্যে প্রভাব পড়তে শুরম্ন করেছে। গত ১৩ দিনের ওএমএস কার্যক্রমের কারণে ইতোমধ্যেই কেজিপ্রতি চালের মূল্য দুই টাকা করে কমেছে। এ মূল্য সহনীয় ও স্থিতিশীল না হওয়া পর্যনত্ম ওএমএস কার্যক্রম চালানো হবে।
মন্ত্রী জানান, প্রতিটি বিভাগীয় শহরে ২৫ জন ডিলারের মাধ্যমে প্রতিদিন ২৫ টন করে চাল বিক্রি করা হবে। এ সংখ্যা প্রয়োজনে আরও বাড়ানোও হতে পারে। এ কার্যক্রমকে সফল করে তুলতে ব্যাপক প্রচারণার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ডিলার ও দোকানদারদের প থেকে মাইকিংয়ের মাধ্যমে প্রচারণা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ (বিটিভি) টিভি চ্যানেলগুলোতে এ সংক্রানত্ম বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হবে।
ঢাকায় চলমান ওএমএস কার্যক্রমে ট্রাকের সংখ্যা বাড়ানো হবে। ১২৪টি ট্রাকে করে চাল বিক্রির প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। বুধবার ৮১টি ট্রাকে করে চাল বিক্রি করা হয়। ঢাকায় এ পর্যনত্ম ১৯৬ জন ডিলার নিয়োগ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এখানে মোট ৪০০ জন ডিলার নিয়োগ করা হবে।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, সরকারী গুদামে চালের বর্তমান মজুদে আগামী বোরো মৌসুম (ফেব্রম্নয়ারি থেকে এপ্রিল) পর্যনত্ম ওএমএস কার্যক্রম চালানো যাবে। এ ছাড়াও সাড়ে চার লাখ টন গম আমদানি করার প্রক্রিয়া চূড়ানত্ম হয়েছে। রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করে এর আওতায় কম মূল্যে আরও তিন লাখ টন গম আনা হবে।
সভায় উপস্থিত এক কর্মকর্তা জানান, গত ১৩ দিনে গড়ে ঢাকা ও শ্রমঘন জেলাগুলোতে ৫৭৪ মেট্রিক টন করে চাল বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে মঙ্গলবার সবচেয়ে বেশি ৬২৮ মেট্রিক টন চাল বিক্রি হয়।

No comments

Powered by Blogger.