কামরাঙ্গীরচর এলাকা ৩ ঘণ্টা রণৰেত্র আহত ১০

 রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে পুলিশ উৎকোচের বিনিময়ে এক মাদক ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দেয়ার জের ধরে মাদক ব্যবসায়ী ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। টানা সাড়ে তিন ঘণ্টার সংঘর্ষে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিৰেপ, গুলিবিনিময়ের ঘটনায় পুরো এলাকা রণৰেত্রে পরিণত হয়েছে।
এসময় প্রায় ১০জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ দু'জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যনত্ম স্থানীয় ব্যাটারিঘাট, আলীনগরসহ আশপাশে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। পরে বিপুল সংখ্যক পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয় সূত্র থেকে জানা গেছে গত ৩১ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১০টায় কামরাঙ্গীরচর থানার সিভিল টিমের দারোগা আবুল কালাম আজাদ ব্যাটারি ঘাট এলাকা থেকে রমজান নামে এক মাদক ব্যবসায়ীকে পাচ শ' গ্রাম গাঁজাসহ আটক করে। পরে তাকে ৪/৫ ঘণ্টা সিভিল টিমের গাড়িতে এলাকায় ঘোরায় ওই দারোগা। এক পর্যায়ে আটক মাদক ব্যবসায়ীকে ছাড়িয়ে নেয়ার জন্য দারোগা আজদের সঙ্গে তার সঙ্গী মাদক ব্যবসায়ী আলী আলম, আশরাফ আলী, রম্নবেল, আনোয়ার দরকষাকষি চলে। পরে দারোগা আজাদকে ৫০ হাজার টাকায় ম্যানেজের মাধ্যমে পরের দিন সোমবার ভোরে রমজানকে চেড়ে দেয়া হয়। এ ঘটনার জের ধরে মাদক ব্যবসায়ী রমজান ও তার সহযোগী আলী আলম, রম্নবেল, আনোয়ার ওই দিন স্থানীয় সুমন ও কবির নামে দুই যুবককে মারধর করে। সুমন ও কবির দু'জনই পুলিশের খবর দিয়ে মাদক ব্যবসায়ী রমজানকে ধরিয়ে দেয় বলে সন্দেহে মাদক ব্যবসায়ী রমজান ও তার পার্টনাররা এ ঘটনা ঘটায়।
সূত্র জানায় এরই সূত্র ধরে মঙ্গলবার সকালে সুমন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা পলাশকে বিষয়টি জানায়। এ নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা পলাশ তার দলবল নিয়ে স্থানীয় আলীসহ মাদক ব্যবসায়ী রমজান ও আশ্রাফ আলীকে জেরা করে। এসময় দুই গ্রম্নপের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে এটি সংঘর্ষে রূপ নেয়। উভয় গ্রম্নপ লাঠিসোটা নিয়ে ধাওয়া পাল্টাধাওয়া, ইটপাটকেল নিৰেপ শুরম্ন করলে পুরো ৰেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষ চলাকালে গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটে। এসময় আজগর (৩০) ডান পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। খবর পেয়ে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দীর্ঘৰণ চেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন কামরাঙ্গীরচরে মাদকের অর্ধশতাধিক স্পট রয়েছে। এরমধ্যে আলী নগর ব্যাটারিঘাট বাঁশ পট্টি গলির রিক্সা গ্যারেজের খালে রমজানের মাদকের স্পট অন্যতম। সেসহ আলী আলম, রম্নবেল আনোয়ার এই মাদক স্পট চালায়। ওদের বিরম্নদ্ধে ফ্যাট ভাড়া নিয়ে দেহ ব্যবসা চালানোর অভিযোগও রয়েছে। সংশিস্নষ্ট সূত্র জানায, থানার কতিপয় দূনর্ীতিবাজ দারোগা এসব মাদক স্পট থেকে মোটা অঙ্কের মাসোহারা পায়। ওইসব ফ্যাটে দারোগাদের মনোরঞ্জনের ব্যবস্থাও হয় বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন। এমন অভিযোগও রযেছে, কোন মাদক ব্যবসায়ী মাসোহারা কমিয়ে দিলে পুলিশ মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করে সুদে আসলে টাকা উঠিয়ে নেয়। আর এসব কাজের পারদশর্ী সিভিল টিমের দারোগারা। এই টিমের প্রত্যেক সদস্যকে উৎকোচের টাকা ভাগ করে দেয়া হয়। এ ব্যাপারে রাত সোয়া ৭টায় কামরাঙ্গীরচর থানার ওসি শফিকুল ইসলাম জনকণ্ঠকে জানান, দুই পৰ থেকে কেউ মামলা করতে আসেনি। তদনত্ম চলছে। এ ঘটনায় কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ইগলুর লাখ টাকা ছিনতাই
এদিকে সোমবার গভীর রাতে শেরেবাংলা নগর থানাধীন গণভবনের মসজিদের পাশের রাসত্মায় ঈগলু কোম্পানির হিসাব রৰক আবু কাউছারের প্রাইভেট কার গতিরোধ করে ছিনতাইকারী বহনকারী আরেকটি প্রাইভেট কার (ঢাকা মেট্রো-গ-২৩৪৩১২) দিয়ে এসময় ছিনতাইকারীরা প্রাইভেট কার থেকে বের হয়ে ঈগলু কোম্পানির হিসাব রৰক আবু কাউছারকে অস্ত্রের মুখে নগদ ১ লাখ টাকার ব্যাগটি ছিনিয়ে নেয়ার সময় ধসত্মাধসত্মি হয়। পরে ছিনতাইকারী তার পেটে গুলি চালিয়ে টাকার ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে দ্রম্নত প্রাইভেট কারযোগে পালিয়ে যায়।

No comments

Powered by Blogger.