বিশ্ব এজতেমা শুরু

টঙ্গীর তুরাগ তীরে দুই পর্বে বিভক্ত বিশ্ব এজতেমার প্রথম পর্ব শুরু হচ্ছে আজ। এটি মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম গণজমায়েত। টঙ্গীতে প্রথম এজতেমাটি আয়োজিত হয় ১৯৬৬ সালে।
তখন থেকেই প্রতিবছর সফলভাবে বিশ্ব এজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবং দিন দিন এর পরিসর বৃদ্ধি পাচ্ছে। তীব্র শীতসহ নানা ঝক্কিঝামেলা সহ্য করে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা প্রতিবছর টঙ্গীর তুরাগ তীরের এজতেমা ময়দানে সমবেত হন। উদ্দেশ্য একটাই ইসলামের মর্মবাণী প্রচার ও প্রসারের মাধ্যমে নৈতিক উৎকর্ষ সাধন ও আত্মশুদ্ধি অর্জন। এখানে দেশ-বিদেশের বিশিষ্ট আলেমদের বয়ান শোনেন মুসল্লিরা। অব্যাহত এবাদত-বন্দেগির পাশাপাশি শরিক হন আখেরি মোনাজাতে। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেত্রীসহ সমাজের সকল স্তরের লোকজন আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন।
টঙ্গীর এ বিশ্ব এজতেমায় বিশ্বের বুজর্গ ব্যক্তিরা আসেন। তাঁরা বয়ান করেন। আম বয়ানের মধ্যদিয়ে শুরু হয় বয়ান পর্ব। এজতেমার মূল বিষয় বয়ানের মাধ্যমে ধর্মীয় বিষয়াদি তুলে ধরেন আলেমগণ।
প্রতিবছর বিশ্ব এজতেমা উপলক্ষে তুরাগ তীরে মুসল্লিদের সংখ্যা বাড়ছে। এ বছর প্রায় শতাধিক দেশের প্রতিনিধি ও ধর্মপ্রাণ মুসলমান এজতেমায় অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
বিশ্ব এজতেমা আয়োজনের এই বিষয়টা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের মানুষের জন্য এক বিরাট নিয়ামত। এর মাধ্যমে ইসলাম ধর্মের অনেক মৌলিক আদর্শ শিক্ষা সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে পৌঁছে দেয়া সম্ভব হচ্ছে; যা ইমান, আমল ও ইলম অর্জনে এবং মানবজাতির আত্মশুদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
এছাড়া স্বাগতিক বাংলাদেশের মুসল্লিদের সঙ্গে বিদেশী মুসলমানদের পারস্পরিক জানাজানি এবং ভাব বিনিময়েরও মাধ্যম হয়ে উঠেছে এই বিশ্ব এজতেমা।
হজের পর এটাই মুসলিম বিশ্বের বৃহত্তম গণজমায়েত। আখেরি মোনাজাতের পর এখান থেকেই অনেকে বেরিয়ে যান দ্বীনের দাওয়াতে। বিশ্ব এজতেমা একটি বিরাট গণজমায়েত। এই ব্যাপক আয়োজনের জন্য সর্বাত্মক প্রস্তুতিও প্রয়োজন। বিশেষ করে পয়োনিষ্কাশন, জরুরী স্বাস্থ্যসেবা, সড়ক ব্যবস্থাপনা, পানি ও গ্যাস সরবরাহসহ সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বলে আমরা আশা করছি। অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে আরও দক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে মহৎ আয়োজনটি সফলভাবে সম্পন্ন হলেই সার্থক। আমরা বিশ্ব এজতেমার সফলতা কামনা করছি।

No comments

Powered by Blogger.