মইনের কোর্ট মার্শাল চান সাকা

 বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী বলেছেন, গণতন্ত্র উত্তরণের জন্য সাবেক সেনাবাহিনী প্রধান মইন উ আহমেদের বক্তব্য রাজনীতিবিদদের জন্য উপহাসস্বরূপ। মইন উ আহমেদের বিচারের পরিবেশ এখন প্রতিকূল অবস্থায় আছে।
তিনি যেমন সংবিধান লঙ্ঘন করার অনুকূল পরিবেশের জন্য অপেৰা করছিলেন, তেমনি আমিও তার বিচারের জন্য অনুকূল পরিবেশের অপেৰায় আছি। রবিবার ধানম-ির নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ ছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এমপি বলেছেন, সরকার আইনের মাধ্যমে না হলেও কৌশলে গণতন্ত্র হত্যার পাঁয়তারা করছে। একইদিন বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সেমিনার কৰে ন্যাশনাল ইয়ুথ ফোরাম আয়োজিত "২৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা আজকের প্রেৰিত" শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাকা চৌধুরী আরও বলেন, সংবিধান লঙ্ঘন করে ১১ জানুয়ারি সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে মইন উ আহমেদ বীরত্ব দেখিয়ে জনগণের সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু বিডিআর অফিসারদের যখন হত্যা করা হলো তখন তার বীরত্ব কোথায় গিয়েছিল? তিনি বলেন, মইন কৃতিত্ব দেখিয়ে অসাংবিধানিক সরকারকে ৰমতায় বসিয়ে সেনাবাহিনী প্রধানের পদকে এবং কিছু সেনা অফিসারকে আদম ব্যবসায়ী করেছিলেন। কারণ, এটা না করলে শানত্মি মিশনে সেনাবাহিনী পাঠানো বন্ধ হয়ে যাবে। জনগণের কাছ থেকে সেনাবাহিনীকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য মইনের কোর্ট মার্শাল হওয়া উচিত মনত্মব্য করে সাকা বলেন, তার বিরম্নদ্ধে কোর্ট মার্শাল না হওয়াটা রাজনীতিবিদদের জন্য দুর্বলতা। কোন সরকারকে মূল্যায়নের জন্য মইন যেমন ৫০ বছর অপেৰা করার কথা বলেছেন, তেমনি তার বিচারের জন্য আমরাও ৫০ বছর অপেৰা করব। সাকা বলেন মইন ছাত্র, শিৰকসহ মহিলাদের ওপর নির্যাতন করেছেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুই বছরের দুর্নীতি পরীৰার উদ্যোগ নিলে তিনি ন্যায় করেছেন, না অন্যায় করেছেন, তা বেরিয়ে আসবে। মইন উ আহমেদ বিদ্রোহী কর্মকর্তা হয়েও এনজয় করেছেন উলেস্নখ করে সাকা বলেন, এতে রাজনীতিবিদদের লজ্জা হওয়া দরকার। বিএনপি আগামীতে ৰমতায় আসলে তার বিচার করবে কিনা জানতে চাইলে সাকা চৌধুরী বলেন, আমি মনে করি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী একটা সময় গিয়ে মইনের বিচার করার সিদ্ধানত্ম থেকে দূরে থাকতে পারবেন না। সরকারী বা বিরোধী দল হিসেবে নয়, সেনাবাহিনীর স্বার্থে তার বিচারের উদ্যোগ নিতে হবে। বিশেষ কোন কারণে তার বিচার ধীর গতিতে অগ্রসর হচ্ছে বলে সাকা মনত্মব্য করেন। সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে সাকা বলেন, মইন আমাকে গরম্ন-ছাগল চুরির মামলা দিয়ে ২০ মাস জেল খাটিয়েছে। এ কারণে আমার পরিবার, ব্যবসা-বাণিজ্যের ৰতি হয়েছে। এটাই আমার আক্রোশ। তার ওপর যতটুকু আইনগত ৰমতা ব্যবহার করার সুযোগ আছে, আমি ততটুকু ব্যবহার করব। গণতন্ত্র নিয়ে মইনের থিওরির ব্যাপারে সাকা বলেন, এদেশের জনগণ যখন গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন, তখন মইন উ আহমেদ দুনিয়াতে আসেননি।
এ ছাড়া বিকেলে ন্যাশনাল ইয়ুথ ফোরাম আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন হায়দার আহমেদ খান। আলোচনায় অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, জামায়াত নেতা মুহাম্মদ কামারম্নজ্জামান, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব আবদুল লতিফ নেজামী, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির সভাপতি শেখ শওকত হোসেন নীলু।
ব্যারিস্টার মওদুদ আরও বলেন, গণতন্ত্র হত্যাকারীরা এখনও থেমে নেই। তারা আইন পাস করে না হোক, কৌশলে গণতন্ত্র হত্যার পাঁয়তারা করছে। ২৫ জানুয়ারিকে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে কলঙ্কজনক দিন হিসেবে আখ্যায়িত করে মওদুদ বলেন, বর্তমান সরকার ওই সময়ের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে বিরোধী দলবিহীন সংসদকে অকার্যকর করতে চায়। সরকারের ভেতর বাকশালী মনোভাব এখনও রয়ে গেছে বলে তিনি মনত্মব্য করেন। তিনি বলেন, সরকার মনে করছে বিরোধী দলবিহীন সংসদ টিকিয়ে রাখবে। কিন্তু তাদের এই ধারণা ভুল। সরকারের জনপ্রিয়তা যেভাবে কমে যাচ্ছে আগামী নির্বাচনে তাদের পতন নিশ্চিত বলে মনত্মব্য করেন মওদুদ। তিনি প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সময় করা চুক্তি ও সমঝোতাস্মারককে দেশবিরোধী উলেস্নখ করে বলেন, জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী জনগণকে নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে প্রতিহত করা হবে।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমরা দেশ বিক্রির কথা বললে তারা কষ্ট পায়; কিন্তু দেশ বিক্রি না করম্নক অনত্মত ভাড়া তো দেয়া হয়েছে। ভারতের সামরিক গোয়েন্দা বিভাগকে ওয়ান-ইলেভেনের মূল আর্কিটেক্ট হিসেবে আখ্যায়িত করেন তিনি।

No comments

Powered by Blogger.