বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাচ্ছে ৰুদ্র ও মাঝারি শিল্পে বাড়ছে কর্মসংস্থান- প্রবৃদ্ধি ডাবল ডিজিটে উন্নীত হবে ড. আতিউর রহমান

 দেশের প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে বিশ্ব ব্যাংকের নেতিবাচক ধারণাকে অসত্য উলেস্নখ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গবর্নর ড. আতিউর রহমান বলেছেন, বিশ্ব ব্যাংক বলেছে দেশের প্রবৃদ্ধি ১ শতাংশ কমতে পারে।
কিন্তু এটি ঠিক নয়। বরং আগামী দু' থেকে তিন বছরের মধ্যে দেশের প্রবৃদ্ধি ডবল ডিজিটে উন্নীত হবে। কারণ দেশের অভ্যনত্মরীণ খাতের চাহিদাকে কাজে লাগানো হচ্ছে। এ ৰেত্রে ৰুদ্র ও মাঝারি শিল্পে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর পাশাপাশি কর্মসংস্থানও বাড়ছে। এগুলো প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধিতে সহায়ক হিসাবে কাজ করবে। শনিবার বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত 'দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনা : ব্যাংকিং খাতের টেকসই উন্নয়ন' শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সমিতির সভাপতি কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এ সময় সংগঠনের বিভিন্ন সত্মরের নেতা ও ব্যাংকাররা উপস্থিত ছিলেন।
দেশের প্রত্যনত্ম অঞ্চলের দরিদ্র কৃষকদের কথা উলেস্নখ করে ড. আতিউর রহমান বলেন, বর্তমানে প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে প্রায় ২৫ শতাংশ লোক ব্যাংকিং সেবার আওতায় আসেনি। বৃহত্তম জনগোষ্ঠী যাতে ব্যাংকিং সেবার অধীনে আসতে পারে এ জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক ১০ টাকার বিনিময়ে ব্যাংক এ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগ দিয়েছে। যাতে করে কৃষকরা সহজেই ঋণ সুবিধা পেতে পারে। একই সঙ্গে ব্যাংকিং সেবার আওতায় আসতে পারে।
গবর্নর বলেন, দেশে কৃষি বিপস্নব শুরম্ন হয়েছে। এখন কৃষকরা কোন ধরনের ঝামেলা ছাড়াই ঋণ পাচ্ছেন। একই সঙ্গে ৰুদ্র ও মাঝারি শিল্পেরও বিকাশ ঘটছে। এ খাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ সংশিস্নষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ বিতরণের লৰ্যে এগিয়ে আসছে। ফলে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। এর পাশাপাশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষি ও এসএমই খাতের উন্নয়ন অব্যাহত থাকলে আগামী ২ থেকে ৩ বছরের মধ্যে দেশের প্রবৃদ্ধি সিঙ্গেল ডিজিটের পরিবর্তে ডবল ডিজিটে পরিণত হবে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্য দেশগুলোর কাছে উন্নয়নের একটি মডেল হিসেবে চিহ্নিত হবে।
ব্যাংকগুলোর সেবার মান নিয়ে ড. আতিউর রহমান বলেন, ব্যাংকগুলোকে শহরমুখিতা পরিহার করে গ্রামের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। যাতে করে গ্রামের অসহায়-দরিদ্র ও প্রানত্মিক কৃষকরা ব্যাংকিং সেবার আওতায় আসে। ব্যাংকগুলোতে সামাজিক দায়বদ্ধতার কথা বিবেচনা করেই বিনিয়োগ করতে হবে। এ ৰেত্রে পরিবেশ বিধ্বংসী, অনুৎপাদনশীল এবং এসএমইর নামে অন্য খাতে বিনিয়োগ করা যাবে না। কোন ব্যাংক কোন কোন খাতে কি ধরনের বিনিয়োগ করে সে বিষয়ে প্রতি বছর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে লিখিত আকারে রিপোর্ট পেশ করতে হবে। ব্যাংকগুলো বিনিয়োগের ওপর ভিত্তি করেই রেটিং করা হবে। তিনি আরও বলেন, ব্যাংকগুলোকে বিনিয়োগের ৰেত্রে পার্টনারশিপ গড়ে তুলতে হবে।
কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, দেশে দরিদ্রের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটি রোধে ব্যাংকগুলো এগিয়ে আসতে পারে। এ ৰেত্রে ব্যাংকগুলো দেশের অভ্যনত্মরের চাহিদাগুলোকে কাজে লাগিয়ে বিনিয়োগ করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে। এতে বেকারত্ব ও দরিদ্র লাঘব হবে। একই সঙ্গে ব্যাংকগুলো শিৰাখাতেও বিনিয়োগ করতে পারে। কারণ অর্থের অভাবে প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যনত্ম অর্ধেক শিশু ঝরে যায় প্রতি বছর।
এসএমই নিয়ে তিনি বলেন, এসএমই উন্নয়নে ব্যাংকগুলোকে অধিক হারে বিনিয়োগ করা উচিত। কারণ দেশের কর্মসংস্থান বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ হলো এসএমই খাতের উন্নয়ন। আর এ জন্য ব্যাংকগুলোকে পার্টনারশিপ তৈরি করবে।

No comments

Powered by Blogger.