শিবিরের অস্ত্রের তথ্য আদায়ে ব্যর্থ পুলিশ, রিমান্ড শেষে ১২ ক্যাডার জেলে

 চট্টগ্রাম অফিস চট্টগ্রামে শিবিরের অস্ত্র ও গোলাবারম্নদের তথ্য আদায় করতে পারেনি পুলিশ। চরম ব্যর্থতার পর গ্রেফতারকৃত ১২ শিবির ক্যাডারকে তিন দিনের রিমান্ড শেষে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
শিবির ক্যাডারদের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা সাৰাতের মধ্য দিয়ে রিমান্ড কার্যক্রম শেষ হয়েছে। তিন দিনই আসামি পরে লোকজন আর কেঁৗসুলী পুলিশকে প্রভাবিত করার মধ্য দিয়ে রিমান্ডের সময় পেণ করেছে বলে খোদ পুলিশের প থেকে জানা গেছে।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় ১২ শিবির ক্যাডারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ড কমিটিতে ছিলেন পুলিশের ডবলমুরিং জোনের এসি, তদনত্মকারী কর্মকর্তা ওসি ও মামলার বাদী এসআই। তিন দিনের মধ্যে এ তিনজন একসঙ্গে সারা দিনেও সময়ের সমন্বয় করতে না পারায় দিনের বেলায় রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ হয়নি বলে থানার একটি সূত্রে জানা গেছে। শুধুমাত্র রাতের বেলায় এক থেকে দেড় ঘণ্টা সময় বেছে নিয়েছেন এ তিন কর্মকর্তা। অভিযোগ রয়েছে, সিএমপি কমিশনার মোঃ মনিরম্নজ্জামানের জামায়াত প্রীতি থাকায় গত ১৮ জানুয়ারি সিএমপি কমিশনার তাঁর দফতরে আয়োজিত প্রেস কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন না। এদিকে, ১৮ জানুয়ারি সকালে মিডিয়ার সদস্যদের জানানো হয়েছিল বিকেলে সিএমপি কমিশনার নিজেই চাঞ্চল্যকর এ অভিযান সম্পর্কে মিডিয়াকে অবহিত করবেন। উলেস্নখ্য, বিভিন্ন সময়ে অর্থাৎ একজন দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী বা ছিনতাইকারী আটকের ঘটনায়ও তিনি প্রেস কনফারেন্সে উপস্থিত থাকেন।
শুধু তাই নয়, খোদ পুলিশের পৰ থেকে ঐদিন সকালে মিডিয়ার সকল সদস্যদের জানানো হয়েছিল বিকেলে কমিশনার দফতরে আয়োজিত কনফারেন্সে ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে সিএমপি কমিশনার মিডিয়াকে ১২ শিবির ক্যাডার আটকের ঘটনা বিশেস্নষণ করবেন। ফলে ডবলমুরিং থানা থেকে কোন প্রকার তথ্য দিতে নারাজ ছিল সংশিস্নষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা। কিন্তু বিকেলে সিএমপি কমিশনার নিজ কৰে অবস্থান করলেও কনফারেন্সে উপস্থিত না হওয়ায় পুলিশের সঙ্গে শুধু সিএমপির উর্ধতন কর্মকর্তাই নয়, তদনত্মকারী কর্মকর্তার সখ্য রয়েছে বলে প্রশ্ন উঠেছে। এ অভিযান ডবলমুরিং থানা পুলিশের হলেও থানা পুলিশ এ অভিযানের কোন প্রেস রিলিজ গোয়েন্দা বিভাগে পাঠায়নি বলে ঐ দফতর সূত্রে জানা গেছে। অভিযোগ রয়েছে, কমিশনার দফতর থেকে এ প্রেস রিলিজটি পাঠানোর জন্য ডবলমুরিং থানা পুলিশকে নিষেধ করা হয়েছিল।
রবিবার দুপুরে ডবলমুরিং থানা সূত্রে জানা গেছে, একদিন রিমান্ড শেষে শুক্রবার দুপুরে হক ভিলার স্বত্বাধিকারী ও জামায়াত নেতা ডা. একরামকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। শনিবার দুপুরে দু'জনের স্থলে অদৃশ্য কারণ বশত আরও ৪ জনকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। এরমধ্যে একজন ডা. একরামের ছেলে গোলাম আজম। বাকি তিনজন হচ্ছে- লুৎফর রহমান, আরিফ হোসেন ও জাহিদ মুনতালিব।
এ ঘটনায় ১২ আসামিকে গ্রেফতারের পরদিন হক ভিলা থেকে উদ্ধার করা হয় শিবির ক্যাডারদের ব্যবহৃত ২টি কম্পিউটার। এরমধ্যে একটি কম্পিউটার সচল নয় এমনকি হার্ড ডিস্কও নষ্ট, যা থানা কর্তৃপৰ পরীৰা নিরীৰা করে দেখেছে। কিন্তু আরেকটি কম্পিউটার সচল । তবে এরমধ্যে রয়েছে চট্টগ্রাম কেন্দ্রিক এমনকি কেন্দ্রীয় শিবির নেতাদের বিভিন্ন তথ্য বলে ধারণা করছে পুলিশ। এ কম্পিউটার সচল হলেও পাসওয়ার্ডের কারণে বিভিন্ন ফোল্ডার সচল করা যাচ্ছে না। তবে পুলিশের আরও ধারণা এসব ফোল্ডারের আওতায় শিবিরের বিভিন্ন অভিযান, অর্থের যোগানদাতাদের নাম, অস্ত্র ও গোলাবারম্নদের বিভিন্ন তথ্যসহ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের বিভিন্ন কার্যক্রমও অনত্মভর্ুক্ত থাকতে পারে। প্রত্যেকটি ফোল্ডারই পৃথক পৃথক পাসওয়ার্ড দিয়ে লক করা রয়েছে।
রিমান্ডে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে বলেছে, তাদের ছাত্রাবাস থেকে উদ্ধারকৃত কম্পিউটারগুলো আসামিরা তাদের নয় বলে তথ্য দিয়েছে। ১৭ জানুয়ারি রাত ১০টায় হক ভিলা থেকে শিবিরের প্রায় ১০ নেতাকমর্ী ১৮ জানুয়ারির সম্মেলনের উদ্দেশে ঢাকায় চলে যায়। তাদেরই অস্ত্র ও কম্পিউটার বলে স্বীকার করেছে রিমান্ডে থাকা আসামিরা। তবে পুলিশ কম্পিউটারের তথ্য উপাত্ত সংগ্রহের মাধ্যমে শিবিরের গোপন বিষয়গুলো বের করতে পারবে। কিন্তু সিএমপির কর্তা ব্যক্তির অসহযোগিতা থাকার কারণে থানা পুলিশ অনেক কিছুই লুকিয়ে রাখতে বাধ্য হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে, জামায়াত নেতা একরামকে নিঃশর্ত মুক্তি দেয়ার জন্য রবিবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসকাবে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে তারই পরিচালিত এতিমখানার ছাত্ররা।
উলেস্নখ্য, নগরীর আগ্রাবাদ মিস্ত্রি পাড়ার হক ভিলা থেকে গত ১৮ জানুয়ারি এ ১২ শিবির ক্যাডারকে অস্ত্র ও বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্রে ব্যবহৃত গুলিসহ গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর পরই মামলার বাদী এসআই মাহবুবুল আলম মোলস্না ও তদনত্মকারী কর্মকর্তা থানার ওসি একেএম মঞ্জুরম্নল হক আকন্দের আবেদনের প্রেৰিতে আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে গত বৃহস্পতিবার। অপরদিকে, আসামি পৰের কেঁৗসুলিরা আরেক আবেদনের প্রেৰিতে থানা হেফাজতে থাকাকালীন সময়ে খাওয়া ও বাসস্থানের সুবিধাসহ আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সাৰাত করার মত সুযোগ সুবিধাসহ আদেশনামা আদালত থেকে নিয়েছে বলে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে।
সংশোধনী ২৩ জানুয়ারি দৈনিক জনকণ্ঠের শেষের পাতায় ৭ম ও ৮ম কলামে প্রকাশিত 'চট্টগ্রাম জেলে জামাই আদরে ১২ শিবির ক্যাডার'-এর স্থলে 'চট্টগ্রামে থানা রিমান্ডে জামাই আদরে ১২ শিবির ক্যাডার' পড়তে হবে।

No comments

Powered by Blogger.