ধলপুরে পুড়েছে ২৪টি বস্তিঘর, সদরঘাটে লঞ্চে আগুন- রামপুরায় আগুনে একই পরিবারের পাঁচজন দগ্ধ

রাজধানীর রামপুরায় গতকাল বৃহস্পতিবার গ্যাসের চুলা জ্বালাতে গিয়ে সৃষ্ট আগুনে পাঁচজন দগ্ধ হয়েছে। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া আগুনে ধলপুরে বস্তির ২৪টি ঘর এবং সদরঘাটে একটি লঞ্চের ১২টি কেবিন পুড়ে গেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সকাল ছয়টার দিকে ৮৪/৯ পূর্ব রামপুরার সাততলা বাড়ির ছয়তলার বাসিন্দা গীতা রানী বণিক রান্নাঘরে গ্যাসের চুলা জ্বালানোর জন্য দেশলাই কাঠি জ্বালালে সেখানে আগুন ধরে যায়। তাঁর সারা শরীরে আগুন ধরে যায়। আগুন একপর্যায়ে দুটি শোয়ার ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। এতে গীতা রানীর মেয়ে পিনাকি বণিক (৩০), পিনাকির স্বামী পিংকিং কুমার (৩৫), পিনাকির দুই সন্তান তিন বছর বয়সী পিকু বণিক ও দেড় বছর বয়সী পিনন ঘুমন্ত অবস্থায় অগ্নিদগ্ধ হয়। তাদের চিৎকার শুনে বাড়ির অন্যান্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা এসে দগ্ধ পাঁচজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ওই বাড়িতে গিয়ে আধা ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নেভান।
স্বজনেরা জানান, রামপুরা এলাকায় সকাল সাতটার পর গ্যাস থাকে না। এ কারণে গীতা রানী ভোরে রান্না করতে চুলা জ্বালাতে গিয়েছিলেন।
পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, তীব্র শীতের কারণে বাসার দরজা-জানালা বন্ধ ছিল। লাইনের লিকেজ থেকে গ্যাস বের হয়ে তা ঘরে ছড়িয়ে পড়েছিল। তাই কাঠি জ্বালানোর সঙ্গে সঙ্গে পুরো ঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
তবে ফায়ার সার্ভিসের দাবি, সিগারেটের জ্বলন্ত অংশবিশেষ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়।
বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকেরা জানান, গীতা রানীর শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাঁর অবস্থা সঙ্কটাপন্ন। অন্যদের অবস্থাও গুরুতর।
ধলপুরে বস্তিতে আগুন: সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ধলপুর সিটি কলোনির বস্তিতে একটি ঘরের চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তে আগুন গা ঘেঁষে গড়ে ওঠা একের পর এক বস্তিঘরে ছড়িয়ে পড়ে। আগুন নেভানোর সময় ছোটাছুটি করতে গিয়ে তিনজন বস্তিবাসী আহত হন। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আধা ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, আগুনে বস্তির ২৪টি ঘর পুড়ে গেছে।
লঞ্চে আগুন: একই দিন বিকেল চারটার দিকে বুড়িগঙ্গা নদীর মাঝখানে নোঙর করা সুরেশ্বর নামের একটি লঞ্চের দোতলার কেবিন ব্লকে আগুন লাগে। একপর্যায়ে আগুন তিনতলার কেবিনেও ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পৌনে এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নেভাতে সক্ষম হন। আগুনে কাঠের তৈরি অন্তত ১২টি কেবিন পুড়ে গেছে।
সদরঘাট ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা বেলালউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে লঞ্চ মাঝ নদীতে ছিল। লঞ্চের ইঞ্জিন বন্ধ ছিল এবং ওই সময় লঞ্চে কোনো কর্মী ছিল না। তিনি বলেন, লঞ্চে আগুন লাগানো হয়েছে বলে গুঞ্জন শোনা গেলেও এর সত্যতা মেলেনি। ধারণা করা হচ্ছে, সিগারেটের জ্বলন্ত অংশবিশেষ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়।

No comments

Powered by Blogger.