তৃণমূল নেতাকমর্ীদের সঙ্গে ৰমতাধরদের ব্যবধান কমাতে হবে- সাত সাংগঠনিক সম্পাদকের সঙ্গে আওয়ামী লীগ প্রধানের বৈঠক

 সারাদেশে মাঠপর্যায়ে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতাদের নিবিড় সম্পর্ক ধরে রাখতে বিভিন্ন কৌশল নির্ধারণ করেছে ৰমতাসীন আওয়ামী লীগ। শনিবার সন্ধ্যার পরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের দায়িত্ব প্রাপ্ত সাত সাংগঠনিক সম্পাদকের সঙ্গে এক বৈঠকে এই বিষয়ে বিসত্মারিত কর্মকৌশল নির্ধারণ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর সরকারী বাসভবন যমুনায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আগামী ৩০ জানুয়ারির দলের বর্ধিত সভায় তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে ৰমতাধর এমপি-মন্ত্রীদের দূরত্ব কমিয়ে আনতে এসব কৌশল চূড়ানত্ম করা হবে বলে সভাসূত্র নিশ্চিত করেছে। বিএনপি জামায়াতের নানা ষড়যন্ত্র রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলার জন্য তৃণমূলে দলকে শক্তিশালী করার কাজে হাত দিয়েছে আওয়ামী লীগ। ২০০১ সালের নির্বাচনী অভিজ্ঞতা থেকেই আওয়ামী লীগ তৃণমূলে দল সংগঠিত করার কাজে হাত দিয়েছে।
সভাসূত্র জানিয়েছে, আসলে ২০০১ সালের অভিজ্ঞতা সারাদেশে সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির নির্দেশক হিসাবে কাজ করছে। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যনত্ম ৰমতায় থাকাকালীন সংগঠনের দিকে বেশি নজর দেয়া হয়নি। যে কারণে ২০০১ সালের ১ অক্টোবর নির্বাচনে সারাদেশে ভোট কারচুপির লৰ্যে পরিচালিত স্থ্থূল কারচুপির বিরম্নদ্ধে মাঠপর্যায়ের কর্মীরা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি। তাছাড়া বিএনপি জামায়াত জোট এখন সরকার বিরোধী নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। রাজনৈতিকভাবে এসব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করার লৰ্যেই তৃণমূলে দলকে সংগঠিত করার বিষয় দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছেন। আগামী ৩০ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় চূড়ানত্ম কৌশল নির্ধারিত হবে। সাতটি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকদের মাঠ পর্যায়ে দলের সার্বিক পরিস্থিতি, স্থানীয় পর্যায়ে উপদলীয় কোন্দল, দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে স্থানীয় এমপি মন্ত্রীদের অনাচার-দূরাচার, আত্মীয় ও পারিবারিকীকরণ চিত্র, সৃষ্ট বিরোধ নিরসন কৌশল, দীর্ঘদিন দলের পরীৰিত পোড়খাওয়া নেতাকর্মীদের যারা আত্মাভিমানে নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে তাদের সক্রিয় করাসহ বিভিন্ন বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সাতজন সাংগঠনিক সম্পাদকের মধ্যে সাত জনই শনিবারের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক স্থানীয় সরকার পলস্নী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, সিলেট বিভাগের এ্যাডভোকেট মেসবাহ উদ্দিন, খুলনা বিভাগের বিএম মোজাম্মেল এমপি, বরিশাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আবু সাঈদ আলমাহমুদ স্বপন এবং রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
দলীয় সভানেত্রীর সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠকে সাংগঠনিক সম্পাদকরা দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকার স্থানীয় নেতাকর্মীদের যে বক্তব্য, অভিযোগ আর প্রত্যাশার কথা বিভিন্ন মাধ্যমে জেনেছেন সেসব বিষয়ে দলীয় সভানেত্রীকে অবহিত করেছেন। একই সঙ্গে এসব বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ নিয়েছেন। দল ৰমতায় থাকলে ৰমতাধরদের আত্মীয় পরিজন আর তোষামোদকারীদের ভিড়ে ত্যাগী পোড়খাওয়া কর্মীরা নিষ্ক্রিয় হয়ে যান এবং রাজধানীর মাঠ ছেড়ে যান। এই অবস্থা ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভুগতে হয়েছে। এমনকি ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে টের পেয়েছে। দল ৰমতায় থাকতে যারা ফ্রন্ট লাইনে থাকেন তাদের অনেকেই দুর্দিনে আত্মগোপন করেন। এরা দলের জন্য সবচেয়ে ৰতিকর। তাই এই শ্রেণীটির বিপরীতে চিহ্নিত পোড়খাওয়া নেতাকর্মী যারা কোনভাবে সরকারী কর্মকা-ে সম্পৃক্ত হলে দলের মানুষ এবং সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে স্থানীয় পর্যায়ে তাদের সম্পৃক্ত করার প্রাণপণ চেষ্টা চলছে।

No comments

Powered by Blogger.