বাকির ও মিন্টুর মৃত্যুর বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি- শোক ও প্রতিবাদ সভা

 শ্রমিক দল নেতা বিএম বাকির এবং জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) নেতা আমিরুল ইসলাম মিন্টুর পুলিশী হেফাজতে মৃত্যুকে হত্যাকা- উলেস্নখ করে বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।
সোমবার জাতীয় প্রেসকাবে বিএম বাকির হোসেন স্মরণে এক শোকসভায় এ দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বাকিরের মৃতু্যর জন্য মূলত সরকারই দায়ী। আমরা এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদনত্ম দাবি করছি। সরকার যদি তা না করে তাহলে আমরা ধরে নেব সরকারই বাকিরকে হত্যা করেছে। তিনি জাসাস নেতা মিন্টুর মৃতু্যর ঘটনারও বিচার বিভাগীয় তদনত্ম দাবি করে বলেন, বর্তমানে দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন চরম আকার ধারণ করেছে। একই দিন বিকালে পুলিশী হেফাজতে মিন্টুর মৃতু্যর প্রতিবাদে এক সমাবেশে বিএনপির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, বর্তমান সরকার দেশবিরোধী কর্মকা-ে লিপ্ত আছে। তাই দেশবিরোধী কর্মকা-ের বিরম্নদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে রম্নখে দাঁড়াতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকস্ এমপস্নয়িজ ফেডারেশন আয়োজিত শোকসভায় ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ আরও বলেন, গত এক বছরে পুলিশী হেফাজতে ১২৯ জনের মৃতু্য হয়েছে। বাকিরের মৃতু্য হয়নি, বাকিরকে হত্যা করা হয়েছে_ অভিযোগ করে তিনি বলেন, বাকিরের মৃতু্যর জন্য শুধু বর্তমান সরকারই নয়, বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারও দায়ী। কারণ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলেই বাকিরের বিরম্নদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। এজন্য তিনি জেনারেল মইন উ আহমেদ, মাসুদ উদ্দিন, বারী, আমিন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান ফখরম্নদ্দীন আহমদের বিচার দাবি করেন।
ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মেহেদী আলী খানের সভাপতিত্বে শোকসভায় আরও বক্তব্য রাখেন শ্রমিক দলের সভাপতি নজরম্নল ইসলাম খান, সাধারণ সম্পাদক জাফরম্নল হাসান, ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জালাল আহম্মদ।
সভায় নজরম্নল ইসলাম খান বলেন, এই মূহূর্তে আমরা বাকিরের মৃতু্যর সুবিচার আশা করি না। তবে যদি আলস্নাহ সুযোগ দেয়, তবে আমরা সুবিচার চাইব। বাকিরের মৃতু্যর জন্য যদি কেউ দায়ী হয়ে থাকে, তবে আমরা দায়ীদের শাসত্মি চাইব।
বিকালে জাসাস ঢাকা মহানগর শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক ও রমনা থানা শাখার সভাপতি আমিরম্নল ইসলাম মিন্টুর পুলিশ হেফাজতে মৃতু্যর প্রতিবাদে বিএনপির নয়াপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকার দেশবিরোধী কর্মকা-ে লিপ্ত আছে। আর তাদের কর্মকা-ের বিরোধিতা যাতে কেউ না করতে পারে সেজন্য বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর নির্বিচারে নির্যাতন চালাচ্ছে সরকার। তিনি সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, সরকার যদি বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হয়রানি-নির্যাতন করা থেকে বিরত না থাকে, তবে বিএনপি দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সরকারের বিরম্নদ্ধে রাজপথে আন্দোলন গড়ে তুলবে।
জাসাসের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমএ মালেকের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব মির্জা ফখরম্নল ইসলাম আলমগীর, প্রচার সম্পাদক জয়নাল আবেদিন ফারম্নক এমপি, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী এমপি, জাসাস সাধারণ সম্পাদক বাবুল আহম্মেদ।
সমাবেশে বক্তারা পুলিশী হেফাজতে মিন্টুর মৃতু্যর ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদনত্ম দাবি করেন।
বিএনপি মহাসচিবের বিবৃতি : কুমিলস্না উত্তর জেলা বিএনপির সভাপতি খোরশেদ আলমকে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন। সোমবার এক বিবৃতিতে দেলোয়ার বলেন, মহাজোট সরকার ৰমতাসীন হয়ে প্রভু দেশের ইশারায় বিএনপিকে ধ্বংস করার নীল নকশায় লিপ্ত রয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার সন্ত্রাস-নির্যাতন-অত্যাচার, হামলা-মামলা করে শহীদ জিয়ার সৈনিকদের নিশ্চিহ্ন করার যে এ্যাসাইনমেন্ট হাতে নিয়েছে, বিএনপি তা বাংলাদেশের মাটিতে বাসত্মবায়ন করতে দেবে না। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আধিপত্যবাদী ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তি বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিনষ্ট করার যে চক্রানত্ম করছে, জাতীয়তাবাদী দলের নেতাকর্মীরা সকল হামলা-মামলা-গ্রেফতার উপেৰা করে তা প্রতিহত করবে। বিবৃতিতে খোন্দকার দেলোয়ার অবিলম্বে খোরশেদ আলমের মুক্তি দাবি করেন এবং তার বিরম্নদ্ধে দায়েরকৃত হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের আহ্বান জানান।

No comments

Powered by Blogger.