প্রিন্স-প্রিন্সেসের মিলন হলো না

ম্যাকাও দম্পতিকে নিয়ে দায়ের করা মামলা কোন সিদ্ধান্ত না দিয়ে নথিভুক্ত করেছে আদালত। এ কারণে প্রিন্স-প্রিন্সেসের সংসার বিচ্ছিন্নই রইলো। প্রিন্সেসকে নিয়ে বিবাদী ড. ওয়াদুদ  আদালতে হাজির হলেও বাদী ইকরাম সেলিম প্রিন্সকে নিয়ে আদালতে হাজির  হয়নি।
ফলে প্রিন্স ও প্রিন্সেসের মধ্যে অন্তত এক পলকের জন্য হলেও দেখা হওয়ার যে সম্ভাবনা ছিল তা-ও হলো না।  গতকাল সকালে প্রিন্সেসকে সঙ্গে নিয়ে ড. ওয়াদুদ আদালতে হাজির হন। কিন্তু প্রিন্সকে নিয়ে ইকরাম সেলিম আদালতে হাজির হননি। বিদেশে থাকায় তিনি আদালতে হাজির হতে পারেননি। এ কারণে প্রিন্সও আদালতে হাজির হতে পারে নি। ইকরাম সেলিমের পক্ষে সময় চেয়ে আবেদন করা হয়। বেলা দু’টার সময়ে ঢাকার নির্বাহী হাকিম শাহ্‌ এলিদ আইনুল আমিন উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদেশ দেন। আদালতের আদেশে বলা হয়েছে, মামলাটি ফৌজদারি কার্যবিধির ১০০ ধারায় দায়ের করা হয়েছে। মালিকানা চাওয়া হয়েছে পাখি দুটির। বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী পাখি দু’টির মালিকানা নির্ধারণের এখতিয়ার এ আদালতের নেই। ফলে মামলাটি নথিভুক্ত করা হলো। এতে সংক্ষুব্ধ পক্ষকে উপযুক্ত আদালতে যাবার পরামর্শ দেয়া হলো। আদেশ শুনে বিবাদী ড. ওয়াদুদ উত্তেজিত হয়ে বলেন, পাখিটি লালন পালন করতে তার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। এ আদেশে তিনি সন্তুষ্ট নন। প্রয়োজনে তিনি আন্তর্জাতিক আদালতে যাবেন। প্রিন্স আর প্রিন্সেস ব্লু গোল্ড ম্যাকাও পাখি। দু’টি পাখির মালিক দুজন। ঘটনাক্রমে মিলন ঘটেছিল পাখি দু’টির। সংসারে তাদের বাচ্চাও আসে। বয়স ১৫, আর সংসার তিন বছরের। ঢাকার মহানগর হাকিমের নির্দেশে ৩রা জানুয়ারি প্রিন্সকে নিয়ে যান তার মালিক। প্রিন্সের বিরহে প্রিন্সেস খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দেয় বলে দাবি প্রিন্সেসের মালিক ড. আবদুল ওয়াদুদের। পরে তাদের সংসার রক্ষার বিষয়টি গড়ায় আদালতে। জানা গেছে, মোহাম্মদ ইকরাম সেলিম ১৯৯৭ সালে সিঙ্গাপুর থেকে একটি ব্লু বার্ড ম্যাকাও পাখি কিনেন। ইস্কাটনে তার বাড়িতে পাখিটি বসবাস করতো। একপর্যায়ে এ বাড়ি ছেড়ে বারিধারায় চলে যান ইকরাম সেলিম। ভাড়া বাসার আঁটসাঁট পরিবেশ পাখিটির উপযোগী ছিলো না। ইকরাম সেলিম হাতিরপুলে আবদুল ওয়াদুদের কাছে পাখিটি নিয়ে যান। তিনি পাখিটি লালন পালনের অনুরোধ জানালে ২০১০ সালে ওয়াদুদ এই দায়িত্ব নেন। এরপর থেকে পাখিটি তার কাছেই ছিলো। তিনি পাখিটির সঙ্গী খুঁজে আনেন। তার নাম রাখা হয় প্রিন্সেস। ম্যাকাও দম্পতির জন্য উপযোগী পরিবেশ তৈরি করা হয়। ওরা ডিম দেয়। বাচ্চা ফোটে। আবদুল ওয়াদুদ জানান, বছরখানেক আগে ইকরাম তার পুরুষ পাখিটি ফেরত চান। এক পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে জিডি হয়। পরে পাখির সংসার রক্ষায় আবেদন করা হয় আদালতে।

No comments

Powered by Blogger.