সেই পাশা বিএনপি নেতার শেল্টারে- শংকর কুমার দে

 ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের দুই গ্রম্নপের সশস্ত্র রক্তৰয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় ভিডিও ফুটেজ দেখে ৫০ সশস্ত্র ক্যাডারকে শনাক্ত করে গ্রেফতারের জন্য অভিযান পরিচালনা করছে গোয়েন্দারা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক নেতার শেল্টারে আত্মগোপন করে আছে ঘটনার সময়ে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে নিয়ে ক্যাম্পাসে অবস্থানকারি সেই আলোচিত সাইদুজ্জামান পাশা। তাকে আশ্রয়দানকারী বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক নেতার ওপর নজরদারী করা হচ্ছে। পাশা আত্মগোপন করে আছে রাজধানী ঢাকাতেই। ঢাকা মহানগর ডিবি পুলিশের (ডিবি) ৪টি টিম তাদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান পরিচালনা করছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটিতে আধিপত্য বিসত্মারের চাপা বিরোধের জের ধরেই ছাত্রদলের পদ পাওয়া ও পদবঞ্চিত দুই গ্রম্নপের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটানো হয়েছে। বিএনপির এক সাবেক সাংসদের ভাইকে গ্রেফতারের জন্য খোঁজা হচ্ছে।
গোয়েন্দা সংস্থা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের দুই গ্রম্নপের সংষর্ষের ঘটনার তদনত্ম নেমে যুদ্ধাপরাধীর তালিকাভুক্ত বিএনপির এক কেন্দ্রীয় নেতা নেপথ্য থেকে উস্কানিদাতার কাজ করেছে বলে জানতে পেরেছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটিতে আধিপত্য বিসত্মারের ব্যাপারে বিবদমান একটি গ্রম্নপের ওই নেতা ছাত্রদলের সংঘর্ষের নেপথ্যের উস্কানি দিয়ে সংগঠনের মধ্যে নিজের অবস্থান সুদৃঢ় করার চেষ্টা করছে। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কমিটি গঠন করাকে কেন্দ্র করে পদ পাওয়া ও পদবঞ্চিতদের মধ্যকার বিরোধ ও বিরোধের জের ধরে রক্তৰয়ী সংঘর্ষ বেধে যাওয়ার বিষয়টি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকেরই জানা থাকার পরও না জানার ভান করে আছেন বলে জানা গেছে।
গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, বিএনপির লালবাগ এলাকার সাবেক সাংসদ নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু কারাগারে থেকে তার ভাই রিন্টুর মাধ্যমে সংঘর্ষের ঘটনায় ইন্ধন যুগিয়েছে। গোয়েন্দা পুলিশ তাকে গ্রেফতারের জন্য খোঁজ করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় গোয়েন্দা পুলিশ নিজেদের ধারণ করা ক্যামেরা, সংবাদপত্রে প্রকাশিত ছবি ও টিভি চ্যানেলে প্রদর্শিত ভিডিও ফুটেজ দেখে সংঘর্ষে জড়িত ৫০ জনের মতো সশস্ত্র ক্যাডারকে শনাক্ত করেছে। তাদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। যে ৫০ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে তার মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্রধারীর সংখ্যা প্রায় ডজনখানেক। বাকিদের হাতে রাম দা, চাকু, চাপাতি, ছোরা, লাঠিশোটা দেখা গেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের সংঘর্ষের ঘটনার সময়ে চকচকে আগ্্েনয়াস্ত্র হাতে যে ক্যাডারটিকে ছোটাছুটি করতে দেখা গেছে সেই বহুল আলোচিত সাইদুজ্জামান পাশা এখনও ঢাকায় আত্মগোপন করে আছে বলে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছে। বিএনপির এক স্থায়ী কমিটির নেতার শেল্টারে সে আত্মগোপন করে আছে এমন খবরের ভিত্তিতে গোয়েন্দারা তার ওপর নজরদারি করছে। পাশা তার মোবাইল ফোন বন্ধ করে দিয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার সোর্সের মাধ্যমে পাওয়া খবর অনুযায়ী বিএনপির এক কেন্দ্রীয় নেতার শেল্টারে আত্মগোপনে থাকা পাশাকে শীঘ্রই গ্রেফতার করা হবে। অপর যারা সশস্ত্র অবস্থায় সংঘর্ষে লিপ্ত ছিল তাদেরকেও গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার আসামি দুই ভাই সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু ও হুজি নেতা মাওলানা তাইজউদ্দিনের ভাই সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে ছাত্রদলের সভাপতি বানানোর বিষয়টি কেউই সহজভাবে মেনে নিতে পারেনি। শুধু একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার দুই আসামির ভাইই নয়, সে একজন অছাত্রও। ছাত্র দলের পদবঞ্চিতরাও তো বটেই, পদ পাওয়া ছাত্রনেতাদের অনেকেই টুকুকে মেনে নিতে পারছে না। কেবলমাত্র বিএনপি চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া নিজে ছাত্রদলের কমিটি গঠন করায় তার মুখের ওপর কোন কথা বলতে না পারায় চাপা ৰোভ এখন সংঘাত সংঘর্ষে রূপ নিচ্ছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ডিসি মোঃ মনিরম্নল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ভিডিও ফুটেজ দেখে ছাত্রদলের সংঘর্ষে যারা জড়িত তাদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে। ডিবির ৪টি টিম এ ব্যাপারে কাজ করে যাচ্ছে। খুব শীঘ্রই চমকপ্রদ খবর পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করে এই ব্যাপারে তিনি তদনত্মের স্বার্থে বিসত্মারিতভাবে আর কিছু বলতে চাননি।

No comments

Powered by Blogger.