অন্যায়ের পক্ষে তর্ক নিন্দনীয় by শিরিন বেলায়েত

মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত অর্থাৎ সৃষ্টির সেরা জীব। এ মানুষই শয়তানের প্ররোচনায় পড়ে বিভিন্ন নিন্দনীয় কাজ করে। ইসলামের দৃষ্টিতে অন্যায়ের পক্ষে তর্ক করা ও নিন্দনীয় কাজ। অন্যায়ের পক্ষে তর্কের বিভিন্ন উদ্দেশ্য হতে পারে। যেমন বক্তাকে হেয় প্রতিপন্ন করে নিজেকে তার চেয়ে শ্রেষ্ঠ প্রমাণ করা।
অথবা বক্তার চেয়ে নিজের মতকে অগ্রগণ্য সাব্যস্ত করার চেষ্টা করা অথবা কোনো ধরনের স্বার্থ উদ্ধার। তবে যে উদ্দেশ্যই থাকুক না কেন তা অসৎ ও অন্যায়। আল্লাহতায়ালা বলেন : 'মানুষের মধ্যে অনেকে এমন আছে, পার্থিব জীবন সম্পর্কে যার কথাবার্তা চমৎকৃত করে এবং তার অন্তরে যা আছে সে সম্বন্ধে সে আল্লাহকে সাক্ষী রাখে। অথচ সে কট্টর দুশমন।'
ইমাম নবাবী বলেন, তর্ক দু'রকমের হতে পারে, অন্যায়ের পক্ষে অথবা ন্যায়ের পক্ষে। তর্কের উদ্দেশ্য যদি হয় সত্যকে জানা ও প্রতিষ্ঠিত করা, তবে তা প্রশংসনীয় আর সত্যকে প্রতিহত করার জন্য তর্ক করা এবং অজানা বিষয়ে তর্ক করা নিন্দনীয়। ন্যায়সঙ্গত দাবির পক্ষেও যদি তর্ক করা হয় এবং তা যদি মিথ্যাচার কষ্টদায়ক কথাবার্তা ও অশালীন কথাবার্তার রূপ ধারণ করে তবে তা নিন্দনীয় ও পরিত্যক্ত। রাসূল (সা.) বলেছেন, 'যে ব্যক্তি অজানা বিষয়ে তর্ক করে সে ওই তর্ক পরিত্যাগ না করা পর্যন্ত তার ওপর আল্লাহ অসন্তুষ্ট থাকবেন।' তিনি আরও বলেছেন, 'কোনো ব্যক্তি যখনই বিপথগামী হয় তখন সে ঝগড়াটে স্বভাবের হয়ে যায়।' আল্লাহর শ্রেষ্ঠ নিয়ামত যে, আমরা মুসলিম হিসেবে শেষ নবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-এর উম্মত হিসেবে পৃথিবীতে এসেছি। আমাদের সবার উচিত নিজের আখলাক সুন্দর করে তোলা।রাসূল (সা.) বলেছেন, 'যে ব্যক্তি নিজের সত্যের সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া সত্ত্বেও তর্ক থেকে বিরত থাকে তার বাসস্থান জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থানে হবে।
আর যে নিজের সত্যের সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়েই তর্ক পরিহার করে তবে তাকে জান্নাতের সাধারণ জায়গায় বাসস্থান দেওয়া হবে।' আল্লাহ ও রাসূলের দেখানো পথে চলতে গিয়ে যদি এ ক্ষণস্থায়ী পৃথিবীতে আমাদের একটু কষ্ট হয়, তবে হলোই-বা, অফুরন্ত শান্তির প্রত্যাশায় আমাদের সবাইকে সংযত হতে হবে। তাই নিজেকে শ্রেষ্ঠ প্রমাণ করার জন্য অথবা স্বার্থ উদ্ধারের জন্য যেন আমরা এসব অন্যায়
কাজ না করি।

No comments

Powered by Blogger.